‘ধরে নিতে হবে, আমরা কাচের উপরে দাঁড়িয়ে কাজ করছি, জানি না, এর পর পাহাড় কী চমক দেবে’

প্রশ্ন: দুর্ঘটনার পরে কেটে গিয়েছে ১৪ দিন। আটক শ্রমিকেরা কেমন আছেন?

উত্তর: শ্রমিকেরা সকলেই সুস্থ আছেন। শনিবার সকালেও তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। ভিতরে সকলেই নিরাপদে রয়েছেন। আটক শ্রমিকদের খাবার, ওষুধ ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিস পাঠানো হয়েছে। আমাদের লক্ষ্য হল, ৪১ জনকেই সুস্থ ভাবে বার করে আনা।

প্রশ্ন: শোনা যাচ্ছে ভিতরে অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। জল্পনা, মারাও গিয়েছেন নাকি এক-দু’জন?

উত্তর: ওই যে বললাম, সকলেই সুস্থ রয়েছেন। কারও মৃত্যুর কোনও খবর নেই।

প্রশ্ন: অগার যন্ত্রের ব্যবহার কি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে? এর পরে কী ভাবে কাজ এগোনোর কথা ভাবা হয়েছে?

উত্তর: পাহাড় আবার অগারের অগ্রগতি রুখে দিয়েছে। বলা যায়, নতুন করে এগোতে ব্যর্থ হয়েছে অগার মেশিন। ওই যন্ত্র চার বার ব্যবহার করেও কাঙ্ক্ষিত সাফল্য আসেনি। আর বেশি কিছু করা সম্ভব নয় অগারের পক্ষে। তাই নতুন করে অগার মেশিন ব্যবহারের কোনও সম্ভাবনা নেই। সুড়ঙ্গ থেকে ওই যন্ত্র বার করে আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পাহাড়ের পেট চিরে এই কাজ চলছে। তাতে পাহাড় কী ভাবে সাড়া দিচ্ছে, সে বিষয়েই এখন সব ধরনের তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। তার ভিত্তিতে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।

প্রশ্ন: তা হলে রাস্তা কী?

উত্তর: অনেকগুলি বিষয় খতিয়ে দেখা হচ্ছে। উলম্ব ভাবে খনন, কিংবা শ্রমিকদের দিয়ে ‘হ্যান্ড ড্রিল’ করে ধ্বংসস্তূপ কেটে এগোনো হবে কি না— সব সম্ভাবনাই খতিয়ে দেখা হচ্ছে। স্থানীয় হিমালয় বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। বিশেষ করে বলতে চাই, এখানকার বিশেষজ্ঞেরা খুব ভাল কাজ করছেন।

প্রশ্ন: এত সময় লাগার কারণ কী?

উত্তর: হিমালয় চরিত্রে নবীন প্রকৃতির। নবীন ও অস্থির। ধরে নিতে হবে, আমরা কাচের উপরে দাঁড়িয়ে কাজ করছি। আমরা জানি না, পাহাড় নতুন করে কী চমক দেবে। তাই খুব ভেবেচিন্তে, শ্রমিকদের নিরাপত্তার সব দিক খতিয়ে দেখে তবেই পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে। যদি আমরা তাড়াহুড়ো করার চেষ্টা করি, তা হলে নতুন করে বিপর্যয় নেমে আসতে পারে। আমাদের কাছে সব ধরনের ব্যবস্থা আছে। আপনারা ভাবছেন, কেন সব ধরনের ব্যবস্থাই একসঙ্গে ব্যবহার করছি না। মাথায় রাখতে হবে, এই পাহাড় সংবেদনশীল। কখন কী ভাবে আচরণ করবে, তা আগে থেকে বোঝা সম্ভব নয়। এক বার বিপর্যয় ইতিমধ্যেই হয়েছে। ভেবেচিন্তে না এগোলে আবার ধস নামতে পারে। তাতে শ্রমিকদের জীবন বিপন্ন হতে পারে। তাই কিছুটা দম নিয়ে, সব দিকে বিচার করে এগোনোর কথা ভাবা হয়েছে।

প্রশ্ন: সব মিলিয়ে আরও কত দিন সময় লাগবে?

উত্তর: আশা করছি বড়দিনের আগে সবাই বাড়ি ফিরে যেতে পারবেন। (হাসি)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.