কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি তথা ভূ-বিজ্ঞান মন্ত্রী ডঃ হর্ষ বর্ধন বলেছেন, ভারত আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান উৎসব বৃহত্তর ক্ষেত্রে জনসচেতনতা তৈরি করতে দূরত্ব দূর করার মাধ্যমে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিকে মানুষের আরও কাছে নিয়ে আসার এক উপযুক্ত মঞ্চ হিসেবে কাজ করে। ভারত আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান উৎসবের অঙ্গ হিসেবে মেগা সায়েন্স এক্সপোজিশনের উদ্বোধন করে আজ ডঃ হর্ষ বর্ধন বলেন, সমগ্র দেশের কাছে তার ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও ঐতিহাসিক গুরুত্বের জন্য কলকাতা একটি গর্বের শহর। এই শহরের সঙ্গে ডঃ সি ভি রমন, আচার্য জগদীশ চন্দ্র বসু, ডঃ মেঘনাদ সাহা এবং ডঃ সত্যেন্দ্রনাথ বসুর মতো বহু বিশিষ্ট বিজ্ঞানীর নিবিড় যোগাযোগ ছিল। এ ধরনের সেমিনার তথা প্রদর্শনী আয়োজনের জন্য বিশিষ্ট বিজ্ঞানী এবং বিজ্ঞান গবেষণাগারগুলির নির্দেশকদের অভিনন্দন জানিয়ে তিনি আরও বলেন, অতীতের বিজ্ঞানীরা তাঁদের গবেষণা ও অর্জিত সাফল্যের মধ্য দিয়ে দেশকে গৌরবান্বিত করেছেন।
বর্তমান সময়ের বিজ্ঞানীদের দায়িত্ব হল বর্তমান প্রজন্মকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির গুরুত্ব ও কার্যকারিতা সম্পর্কে সচেতন করে তোলা যাতে, বিজ্ঞানের উপকারিতা সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে আরও বেশি সচেতন করে তোলা যায়। ডঃ হর্ষ বর্ধন জোর দিয়ে বলেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সুফলগুলিকে সাধারণ মানুষের বিশেষ করে, পড়ুয়াদের আরও কাছে নিয়ে আসতে পারলে দৈনন্দিন জীবনের মান আরও বাড়বে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি নিয়ে পড়ুয়াদের গবেষণার মানসিকতা গড়ে তুলতে ও উৎসাহিত করতে পারলে দেশের অগ্রগতিতে এক ব্যাপক জ্ঞান-ভিত্তির সুযোগ তৈরি হবে। তিনি আরও বলেন, এই প্রথমবার পঞ্চম ভারত আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান উৎসবের সূচনা করতে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী।
ডঃ হর্ষ বর্ধন আরও বলেন, ভারত সুযোগ-সুবিধার এমন এক দেশ যেখানে উচ্চশিক্ষা তথা গবেষণা ও উন্নয়নের ক্ষেত্রে বিজ্ঞানীদের অংশগ্রহণ সাধারণ মানুষের ক্ষমতায়ন ও উন্নয়নে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে। এই বিজ্ঞান উৎসবে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান মহলের অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে তিনি জানান, এঁদের অংশগ্রহণের মাধ্যমে ভারতের অগ্রগতি সর্বোচ্চ পর্যায়ে উন্নীত হবে। মন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, শিশুদের মধ্যে বিজ্ঞানমূলক অগ্রগতির ধারণা প্রোথিত করতে পারলে তা দেশের অগ্রগতি ও বিকাশের ক্ষেত্রে এক নতুন যুগের সূচনা করবে।
প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী ২০৩০ সালের মধ্যে ভারতকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে বিশ্বের অগ্রণী তিনটি দেশের মধ্যে নিয়ে যাওয়ার যে পরিকল্পনা করেছেন, তার সঙ্গে সঙ্গতি রেখেই এই উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। দেশে দ্রুতগতিতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির বিকাশ ঘটছে জানিয়ে ডঃ হর্ষ বর্ধন বলেন, দেশের যুবসম্প্রদায়ের মধ্যে বিজ্ঞানমূলক আবেগ ও উৎসাহ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে এই উৎসব এক গুরুত্বপূর্ণ মঞ্চ হয়ে উঠেছে। তিনি সমগ্র বিজ্ঞানী মহলকে বিজ্ঞান মানসিকতাসম্পন্ন এমন এক বাতাবরণ গড়ে তোলার আহ্বান জানান যাতে শিশুদের বিজ্ঞানের প্রতি আরও আকৃষ্ট করে তোলা যায়।
ডঃ হর্ষ বর্ধন বলেন, এই উৎসবে আন্তর্জাতিক প্রতিনিধি ও বিজ্ঞানীদের বিপুল সংখ্যায় অংশগ্রহণ তথা সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহই দেশে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রতি অগ্রাধিকারের কথা প্রতিফলিত করে। এই উপলক্ষে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি দপ্তরের পাশাপাশি তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের আধিকারিকরাও উপস্থিত ছিলেন।