গতকালই গাজার সবচেয়ে বড় হাসপাতাল আল শিফার গেটে ট্যাঙ্ক দাঁড় করিয়ে রেখেছিল ইজরায়েলি ডিফেন্স ফোর্স। কাউকে তারা হাসপাতালে ঢুকতে দিচ্ছিল না। বুধবার ভোরে একেবারে হাসপাতালেই ঢুকে পড়ল ইজরায়েলি সেনা। তাদের দাবি, হাসপাতালটিকে তাদের বেস হিসেবে ব্যবহার করছে হামাস। রাষ্ট্রসংঘের হিসেব অনুযায়ী, আল শিফা হাসপাতালে বর্তমানে আশ্রয় নিয়েছেন ২৩০০ মানুষ। এদের মধ্যে অধিকাংশই রোগী। বাকীরা বোমা থেকে বাঁচতে আশ্রয় নিয়েছেন হাসপাতালে। এদের মধ্যে রয়েছে বহু শিশু।
ইজরায়েলের দাবি, খুব সতর্কতার সঙ্গে হামাসের বিরুদ্ধে অপারেশন চালাচ্ছে তারা। গাজার প্রশাসনকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে হাসপাতালের ভেতর থেকে সব ধরনের জঙ্গি কার্যকলাপ ১২ ঘণ্টার মধ্যে বন্ধ করতে হবে। কিন্তু হামাস তা করছে না। তাদের আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়েছে। হাসপাতালের ভেতরে আনা হয়েছে ট্যাঙ্ক ও বুলডোজার।
হাসপাতালের তরফে গাতকালই জানিয়ে দেওয়া হয় যে সেখানে ৩৬টি এমন নবজাতক রয়েছে যারা সময়ের আগেই জন্ম নিয়েছে। ফলে তাদের প্রয়োজন ইনকিউবেটর। সেই ইনকিউবেটর তো নেই, পাশাপাশি হাসপাতালে কোনও বিদ্যুত্ও নেই। জেনারেটর চালানোর জ্বালানি নেই। ইতিমধ্যেই ৩ নবজাতকের মৃ্ত্যু হয়েছে।
এখনওপর্যন্ত গাজায় যারা ত্রাণ ও অন্যান্য কাজ করছে তাদের দাবি, গাজার পরিস্থিতি ভয়ংকর। গুরুতর রোগীদের অ্যানাস্থেসিয়া দেওয়া যাচ্ছে না। বিনা অ্যানাস্থেসিয়াতেই ছোটখাটো অপারেশ করতে হচ্ছে। খাবার নেই, জল নেই। হাসপাতাল চত্বরে লাশের স্তুপ জমা হয়ে রয়েছে। সেখানে থেকে গন্ধ ছড়াচ্ছে হাসপাতালে। আল শিফা হাসপাতালের ডিরেক্টর মহম্মদ আল সালমিয়া সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, মর্গে বিদ্যুত্ নেই। হাসপাতালে লাশ জমা হয়ে রয়েছে।
এরই মধ্যে হামাসের তরফে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আল শিফা হাসপাতালের ভয়ংকর পরিস্থিতির জন্য দায়ী ইজরায়েলি হামলা ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
প্যালেস্টাইনের স্বাস্থ্যমন্ত্রী মাই আল কাইলা সংবাদমাধ্যমে বলেছেন, আল শিফা কমপ্লেক্সে যেসব ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী, রোগী, আশ্রয়প্রার্থীরা রয়েছেন তাদের জীবনের জন্য দায়ী ইজরায়েলি ফোর্স।