সুপ্রিম কোর্টের নিষেধাজ্ঞা ছিল। প্রকৃতির ইঙ্গিতও ছিল বিরূপ। কিন্তু কোনও কিছুই দমাতে পারল না দিল্লিকে। দীপাবলির রাতে সেখানে দেদার ফাটল বাজি। দূষণকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে দিল্লিবাসী মাতলেন আলোর উৎসবে।
দিল্লিতে গত কয়েক দিন ধরেই বায়ুদূষণের মাত্রা উদ্বেগের পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছে। ধোঁয়াশায় ঢেকেছে রাজধানীর বাতাস। দৃশ্যমানতাও অনেক কমে এসেছে। এই পরিস্থিতিতে দীপাবলির রাত নিয়ে চিন্তা ছিলই। বাজির ধোঁয়া বাতাসকে আরও দূষিত করবে, সেই আশঙ্কা থেকেই দিল্লিতে বাজির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল শীর্ষ আদালত। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে দেখা গেল, দিল্লি আছে সেই দিল্লিতেই। দীপাবলির দিন বিকেল ৪টের পর থেকে দিল্লির অলিগলি থেকে বাজি ফাটানোর শব্দ কানে এসেছে। যা চলেছে মধ্যরাত পর্যন্ত। সোমবার সকালে উদ্যাপনের নমুনা হিসাবে দিল্লির রাস্তাঘাটে ছড়িয়েছিটিয়ে থাকতে দেখা গিয়েছে অজস্র বাজির বর্জ্য। গোলে মার্কে, রামনগর মার্কে, পাহারগঞ্জ, মন্দির মার্গ প্রভৃতি এলাকায় পোড়া বাজির অবশিষ্টাংশ পড়ে থাকার ছবি প্রকাশ করেছে সংবাদ সংস্থা এএনআই।
রবিবার রাতের উদ্যাপনের ফল দেখা গিয়েছে সোমবার সকালের বাতাসেও। পুরু ধোঁয়ার আচ্ছাদনে সকাল থেকেই ঢেকে আছে রাজধানী। কোথাও কোথাও দৃশ্যমানতা কমে হয়েছে কয়েকশো মিটার।
পর পর কয়েক দিন দিল্লির বাতাসের গুণগত মান অত্যন্ত খারাপ পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছিল। কিছু দিন আগে সামান্য বৃষ্টি হওয়ায় দূষণ খানিকটা কমে। দীপাবলির দিন সকালে দিল্লির বাতাসের মান যথেষ্ট ভাল ছিল। কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ (সিপিসিবি) জানায়, রবিবার দিল্লিতে বাতাসের গুণমান (এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স বা একিউআই) ছিল ২১৮। কিন্তু সন্ধ্যা নামতেই দূষণের মাত্রা চড়চড় করে বাড়তে শুরু করে। সুপ্রিম কোর্টের নিষেধাজ্ঞা, প্রশাসনের সতর্কবাণী, কোনও কিছুকেই পাত্তা না দিয়ে বাজি পোড়ান মানুষ।
পরিসংখ্যান বলছে, রবিবার রাতে দিল্লির বাতাসের গুণমান কোথাও কোথাও ৯০০-র গণ্ডি ছাড়িয়ে গিয়েছিল। মেজর ধ্যানচাঁদ ন্যাশানাল স্টেডিয়াম সংলগ্ন এলাকায় গুণমান ছিল ৯৯৯। পরে অবশ্য তা কিছুটা কমে। আনন্দ বিহার এলাকায় গুণমান ছিল ৮৪৯।
দীপাবলিতে দিল্লির হাল দেখে উদ্বিগ্ন পরিবেশবিদেরা। তাঁদের অভিযোগ, রাতে অনেক এলাকা থেকে বাজি পোড়ানোর বিষয়ে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছিল। কিন্তু পুলিশ কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। এ ভাবে চলতে থাকলে দিল্লির পরিবেশের ভবিষ্যৎ কী হতে চলেছে, তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তাঁরা।