ছয় ফুটের মৃন্ময়ী প্রতিমা রাতের অন্ধকারে হয়ে গেল আট ফুট। বৃষ্টি ছাড়াই শুকনো পুকুর ভরে গেল জলে। এই অলৌকিক ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে বীরভূমের নলহাটি থানার জুঙ্গল গ্রামে। শুধু গ্রামবাসীরাই নন, মুখে মুখে ঘটনার কথা ছড়িয়ে পড়তেই গ্রামে ভিড় জমাচ্ছেন আশেপাশের গ্রামের মানুষ।
জানাগিয়েছে, দিন কয়েক আগে জুঙ্গল গ্রামের বাসিন্দা ছোটন আচার্য স্বপ্নাদেশ পেয়ে মা কালীর মৃন্ময়ী মূর্তি গড়ে পুজো করার সিদ্ধান্ত নেন। তাকে সহযোগিতা করতে এগিয়ে আসেন গ্রামবাসীরা। সেই মতো বাড়িতে মৃৎ শিল্পী ডেকে মূর্তিও তৈরি করেন। সিদ্ধান্ত হয় গ্রামের মধ্যে জিতুয়া ষষ্ঠীর বেদিতেই মা কালীর পুজো করা হবে। পাঁচ ফুটের মূর্তি গড়া হলেও সেই মূর্তি রাতারাতি ছয় ফুটের বেশি উচ্চতার হয়ে যায়। একই সঙ্গে ধারে কাছে পুকুর বলতে বেদির পাশের গোপাল গড়িয়া। সেই পুকুরে জল ছিল না। ফলে পুজোর ঘট ভরা থেকে প্রতিমা নিরঞ্জন নিয়েও চিন্তিত হয়ে পড়েন আচার্য পরিবার থেকে গ্রামবাসীরা। কিন্তু পুজো কাছে আসতেই গ্রামবাসীরা দেখেন সেই পুকুর জলে ভরে গিয়েছে। এই অলৌকিক ঘটনা জানাজানি হতেই আচার্য বাড়িতে এবং পুকুর পাড়ে ভিড় জমান গ্রামবাসীরা।
ছোটন আচার্য বলেন, “সপ্তাহখানেক আগে মা কালী পুজো করার জন্য স্বপ্নাদেশ দেন। কয়েক পুরুষ আগে গ্রামে পুজো হত। কিন্ত সেটা বন্ধ হয়ে যায়। ফলে পরিবার এবং গ্রামবাসীদের সঙ্গে আলোচনা করে পুজো করার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলি। সেই মতো বাড়িতেই শিল্পী ডেকে মূর্তি গড়া হয়। কিন্তু কারিগর দেখে মূর্তির উচ্চতা রাতারাতি বেড়ে গিয়েছে। একই সঙ্গে আমরা চিন্তা করছিলাম কোথায় পুজোর ঘট ভরব এবং প্রতিমা নিরঞ্জন করব। দু’দিন থেকে দেখছি সেই পুকুরও জলে ভরে গিয়েছে। ফলে আমাদের কাছে এটা ঠাকুরের কৃপা বলে মনে করছি”।
এই ঘটনার পরেই গ্রামে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। আশেপাশের গ্রামের মানুষ ভিড় জমাচ্ছেন জুঙ্গল গ্রামে। গ্রামের বাসিন্দা চিত্তরঞ্জন মজুমদার বলেন, “আমাদের কাছে এটা অলৌকিক। এরকম আগে কখনো দেখিনি। আমরা সব নিজের চোখে দেখলাম”।
যদিও অলৌকিক ঘটনা বলে কিছু নেই বলে দাবি করেছেন বিজ্ঞান মঞ্চের বীরভূম জেলা সম্পাদক দেবাশিস পাল। তিনি বলেন, “ঠাকুরের উচ্চতা নিজে থেকে বেড়ে উঠেছে এটা ঠিক নয়। ঠাকুরের মাহাত্ম্য প্রচার করতে এসব বুজরুকি ছড়ানো হচ্ছে। তবে পুকুরে জল কিভাবে ভরল সেটা গ্রামে গিয়ে না দেখলে বোঝা যাবে না। তবে অলৌকিক বলে কিছু নেই”।