বিশ্বকাপ থেকে পাকিস্তানের বিদায় কার্যত নিশ্চিত। তবু যে সামান্য সুযোগ বেঁচে রয়েছে, তা কাজে লাগাতে শনিবার ইডেন গার্ডেন্সে খেলতে নামবে পাকিস্তান। তার আগে শুক্রবার ইডেনে সাংবাদিক বৈঠকে নেতৃত্ব নিয়ে বোমা ফাটালেন বাবর আজম। বলে দিলেন, বিশেষজ্ঞেরা টিভিতে বড় বড় মন্তব্য না করে তাঁর সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করলেই পারেন। এক বছর আগে বিরাট কোহলির সুর কোথায় গিয়ে মিলে গেল বাবরের সঙ্গে। গত বছরের এশিয়া কাপে কোহলির মুখেও শোনা গিয়েছিল এই কথা।
বাবরের নেতৃত্ব নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন তুলেছেন ওয়াসিম আক্রম, মহম্মদ হাফিজ, ওয়াকার ইউনিসের মতো প্রাক্তন ক্রিকেটারেরা। তিনি কি নেতা হিসাবে চাপে? প্রশ্ন উঠতেই বাবরের সপাটে জবাব, “আমি গত তিন বছর ধরে অধিনায়কত্ব করছি। কখনও চাপে পড়িনি। হ্যাঁ, এ বারের বিশ্বকাপে যে ভাবে খেলতে চেয়েছিলাম সেটা পারিনি ঠিকই। তাই জন্যেই লোকে বলছে আমি চাপে আছি। কিন্তু গত আড়াই-তিন বছরে আমি দলকে নেতৃত্ব দিয়েছি। আবার রানও করেছি। তখন তো কেউ কিছু বলেনি।”
বাবরের সংযোজন, “এখন দেখছি সবারই আমাকে নিয়ে কোনও না কোনও মতামত রয়েছে। আমার এই কাজ করা উচিত, ওই কাজ করা উচিত। যদি কেউ সত্যিই আমাকে কোনও পরামর্শ দিতে চায় তা হলে সরাসরি আমার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারে। আমার নম্বর তো সবার কাছেই রয়েছে। কিন্তু আমার ধারণা, সবাই টিভিতে জ্ঞান দিতে বেশি পছন্দ করে। তাই কেউ আমার সঙ্গে যোগাযোগ করে না।”
ক্রিকেটপ্রেমীদের মনে পড়ে যাবে এক বছর আগেকার কোহলির কথা। ২০২২-এর শুরুতে টেস্ট ক্রিকেট থেকে অধিনায়কত্ব ছেড়ে দেন বিরাট। তার পরে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে এশিয়া কাপে একটি ম্যাচে হারের পরে সাংবাদিক বৈঠকে ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক বলেন, “আমি যখন টেস্ট অধিনায়কত্ব ছাড়ি, এক জন মাত্র প্রাক্তন ক্রিকেটার আমাকে ফোন করেছিল। অনেকের কাছেই আমার নম্বর আছে। কিন্তু ফোন করেছিল শুধু মহেন্দ্র সিংহ ধোনি। এর থেকেই বোঝা যায় কে আমার ভাল চায়। সত্যি যদি আমার কথা কেউ ভেবে থাকে তা হলে সে আমাকে ফোন করে কথা বলতে পারত।”
বিরাট যখন রান পাচ্ছিলেন না, তখন অনেকেই সংবাদমাধ্যমে তাঁর সম্পর্কে কথা বলেছিলেন। বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক কপিল দেব বলেছিলেন, “এমন নয় যে গত পাঁচ-ছ’বছরে কোহলিকে ছাড়া কোনও দিন ভারত খেলেনি। তবে ওর মতো ক্রিকেটারকে আমি ছন্দে দেখতে চাই। ওকে হয়তো বাদ বা বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে। তবে এখনও ওর মধ্যে অনেক ক্রিকেট বাকি রয়েছে। আমি চাই ও রঞ্জি খেলে ছন্দে ফিরে আসুক।”
গত বারের আইপিএলের সময় থেকে রান ছিল না বিরাটের ব্যাটে। শতরান করেননি আড়াই বছর। রবি শাস্ত্রী বলেছিলেন বিশ্রাম নিতে। নাম না করে ইরফান পাঠান বলেছিলেন, বিশ্রাম নিয়ে কেউ কোনও দিন রানে ফেরেনি। নানা মুনির নানা মত সেই সময় ঘুরছিল। বিরাটকে ছিঁড়ে খাচ্ছিলেন সকলে। বিরাট কখনও কিছু বলেননি। এশিয়া কাপে বোমা ফাটান। সেই একই রাস্তায় গেলেন বাবরও। মাঠের বাইরে যিনি কোহলির ভাল বন্ধু।