কাশ্মীর থেকে সোমবার রাজ্যে ফিরলেন ১৩৩ জন বাঙালি শ্রমিক। সোমবার বিকেলে জম্মু-তাওয়াই এক্সপ্রেসে কলকাতা স্টেশনে নামেন তাঁরা। কাশ্মীরে পরিস্থিতি অশান্ত বলে আশঙ্কা করে, রাজ্য সরকারের তরফে তাঁদের বাড়ি ফেরানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়
সোমবার বিকালে কলকাতায় নামলেও এখন তাঁদের মাথায় ঘুরছে নতুন কোনও কর্মসংস্থানের চিন্তা। কারণ পেট চালাতে তো হবে। এদিকে কাশ্মীর থেকে ফিরে আসা শ্রমিকদের জন্য মুখ্যমন্ত্রী যদি কোনও বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা না করেন তাহলে তাঁদের আবার কাজের খোঁজে ভিন রাজ্যে যেতে হতে পারে বলে জানিয়েছে কাশ্মীর থেকে ঘরে ফেরা ওইসব বাঙালি শ্রমিকেরা।
জানা গিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে কলকাতা নেমে রাতের বাসেই কাশ্মীর থেকে আগত ১৩৩ জন শ্রমিক তাঁদের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হয়। এর মধ্যে দক্ষিণ দিনাজপুর থেকে রয়েছে ১১২ জন শ্রমিক। ঘরে ফিরেই তাঁরা জানিয়েছেন, রাজ্যসরকার যদি তাঁদের জন্য বিকল্প কোনও কাজের ব্যবস্থা না করেন তাহলে রুটিরুজির খোঁজে তাঁরা ফের ভিন রাজ্যে কাজে যেতে বাধ্য হবেন। কাশ্মীর থেকে ফিরে এসে সংবাদ মাধ্যমকে এমনই কথা জানিয়েছেন মুস্তাফা ও মানিক ও খালেকরা।
কাশ্মীরে পাঁচজন বাঙালি শ্রমিক মারা যাওয়ার পর থেকেই আতঙ্কে দিন কাটত এই রাজ্যে থেকে কাশ্মীরের বিভিন্ন জেলায় কাজে যাওয়া বাকি শ্রমিকদের। শ্রমিকদের মৃত্যুর ঘটনার পর পরই রাজ্য সরকার এবং কাশ্মীর প্রশাসনের সহযোগিতায় কলকাতায় ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করা হয় তাঁদের।
সেইমত সোমবার বিকালের ট্রেনেই কলকাতা স্টেশনে নামেন ১৩৩ জন বাঙালি শ্রমিক। তার মধ্যে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা থেকে ১১২ জন শ্রমিক ছিল। মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের তৎপরতায় তাঁদের ঘরে ফিরে যাওয়ার জন্য সরকারি উদ্যোগে বাসের ব্যবস্থাও করে দেওয়া হয়। রাতেই বাসে করে মঙ্গলবার সকালে নিজেদের জেলা দক্ষিণ দিনাজপুরের মাটি স্পর্শ করে মুখে তৃপ্তির হাসি ফোটে উৎকণ্ঠার প্রহর কাটানো মুস্তাফাদের।
দক্ষিণ দিনাজপুরের বুনিয়াদপুর স্ট্যান্ডে মঙ্গলবার সকালে প্রশাসনের তরফে তাঁদের স্বাগত জানান মহকুমাশাসক দেবাঞ্জন রায় ও উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন পর্ষদের ভাইস চেয়ারম্যান অর্পিতা ঘোষ। যেসমস্ত শ্রমিকেরা ফিরে এসেছেন তাঁদের মধ্যে কুশমন্ডি ব্লকের ১০৫ জন। বংশিহারির ৫জন। ও বাকি দুইজন গঙ্গারামপুর ব্লকের বাসিন্দা বলে জানা গিয়েছে। সকলেই শ্রীনগর ও তার আশপাশের এলাকায় প্লাইউড কারখানায় শ্রমিকের কাজ করতেন। কুলগ্রাম জেলার কাতরাসু গ্রামে জঙ্গিদের গুলিতে বাঙালী ৫শ্রমিকের মৃত্যুর পর থেকে আতংকের মধ্যেই কাজ করছিলেন তাঁরা।
এমনকি বাড়িতে তাঁদের পরিবারের লোকেরাও চরম দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছিলেন। এরই মধ্যে প্রশাসনের তরফে তাঁদের নিরাপদে এরাজ্যে ফিরিয়ে আনা হলেও বে-রোজগারি ও অন্ন যোগানের দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তাঁরা। ফিরে আসা শ্রমিকরা জানিয়েছেন এখানে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা না হলে আবারও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাইরে যেতে হবে তাঁদের। যদিও প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে ভিন রাজ্য থেকে ফিরে আসা এই মানুষ গুলিকে একশ দিনের প্রকল্পে কাজের ব্যবস্থা করা হবে। অন্য দিকে অর্পিতা ঘোষ জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে এদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা অবশ্যই করবেন।