বড়বাজারের একটি গুদামে হানা দিয়ে প্রচুর নিষিদ্ধ চিনা রসুন বাজেয়াপ্ত করল ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো৷ গ্রেফতার করা হয়েছে একজন ব্যবসায়ীকে৷
গবেষণায় জানা গিয়েছে, চিনে যে রসুন উৎপাদিত হয়, তার মধ্যে বিষাক্ত রাসায়নিক পাওয়া গিয়েছে৷ ওই রসুনে রয়েছে বেশিমাত্রায় মিথাইল ব্রোমাইড৷ এছাড়া রয়েছে সিসা ও সালফাইড। যা ক্যানসারের ঝুঁকি অনেকটাই বাড়িয়ে তোলে৷ এমনকি শরীরে শ্বাসতন্ত্র ও কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রকেও বিকল করে দেয় চিনা রসুন।
চিনা রসুন কিভাবে চিনবেন
দেখতে সাদা ঝকঝকে৷ চিনা রসুনে কোনও রকম দাগ থাকে না৷ রসুনের গায়ের কালো ছোপ দূর করতে রাসায়নিক স্প্রে করা হয়৷ যা দেখতে খুব সুন্দর হয়৷ তবে চিনা রসুন দেশীয় রসুনের মতো আয়তন হলেও, ওজনে অনেক হালকা৷ কারন রসুন যাতে পচে না যায়,তারজন্য রসুন থেকে জল বের করে নেওয়া হয়৷
সোমাবার গোপন সূত্রে খবর পেয়ে বড়বাজারে হানা দেয় ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো৷ গুদাম থেকে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে ৪৫৯ বস্তা বিষাক্ত চিনা রসুন৷ নিষিদ্ধ চিনা রসুন বিক্রির অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে দীনেশকুমার মণ্ডল নামে একজন ব্যবসায়ীকে৷
জানা গিয়েছে, বাংলাদেশ, নেপাল হয়ে এ রাজ্যে চোরাই পথে ঢুকছে নিষিদ্ধ চিনা রসুন৷ যা কলকাতার বাজার ছেয়ে গিয়েছে৷ কিছু ব্যবসায়ী এই চিনা রসুন কম দামে কিনে, বেশি দামে বিক্রি করছেন৷ অনেকেই খরচ কমাতে কম দামের ওই রসুন কিনে খাচ্ছেন৷ তাছাড়া দেখতেও খুব সুন্দর৷ কিন্তু তারা জানেন না, চিনা রসুনে রয়েছে স্বাস্থ্যের পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকর রাসায়নিক৷ যা ক্যানসারের ঝুঁকি অনেকটাই বাড়িয়ে তোলে৷
গবেষকরা আরও বলছেন:
১) শরীরে শ্বাসতন্ত্র ও কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রকেও বিকল করে দেয় এই রসুন।
২) রসুনকে ক্রেতাদের কাছে আকর্ষণীয় করে তুলতে ক্লোরিন ব্লিচ করা হয়, মূলত রসুনের গায়ের কালো ছোপ দূর করার ক্ষেত্রে ব্লিচ করা হয়৷ আর এটাই মারাত্মক ক্ষতি করে শরীরে৷
৩) এই পদার্থগুলি ক্যানসারের ঝুঁকিও বাড়িয়ে তোলে৷
৪) চিন বিভিন্ন দেশে রসুন রপ্তানি করার সময় রাসায়নিক স্প্রে করে৷ রসুনে যাতে গেঁজ না ধরে, সেজন্য জাহাজে ওঠানোর আগে রাসায়নিক স্প্রে করতে হয়৷ সেটাই চিন করে থাকে৷
অনেক আগেই সুপ্রিম কোর্ট এই চিনা রসুন নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে৷ তারপরও বাজারে রমরমিয়ে বিক্রি হচ্ছে চিনা রসুন৷ কয়েক বছর আগে কাস্টমস দফতর রানিগঞ্জ এলাকা থেকে প্রায় ৬৪ টন রসুন আটক করেছিল৷ কলকাতা দফতরের প্রিভেনসন অ্যান্ড ইন্টেলিজেন্স শাখার সুপার কিশোর মজুমদারের নেতৃত্বে ওই দলটি অভিযান চালিয়েছিল৷ সেই সময় উদ্ধার হওয়া প্রায় ৬৪ টন রসুনের আনুমানিক মূল্য ছিল ১ কোটি টাকা৷ চারটি লরিতে অন্ধ্রপ্রদেশে পাচার হওয়ার সময় তা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল৷ যা নেপাল সীমান্ত দিয়ে উত্তরবঙ্গের ডালখোলা হয়ে আসানসোলে ঢুকেছিল৷