কালীপুজো মিটতেই চিটফান্ড তদন্তে জিজ্ঞাসাবাদ পর্ব শুরু করে দিল কেন্দ্রীয় তদন্ত এজেন্সি সিবিআই। গত ২৬ অক্টোবর প্রথম জানা গিয়েছিল, চিটফান্ড তদন্তে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সিবিআই ডেকে পাঠিয়েছে কলকাতা পুলিশের প্রাক্তন গোয়েন্দা প্রধান দময়ন্তী সেন ও বর্তমান ডিসি (বন্দর) ওয়াকার রাজাকে। সোমবার সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে সিবিআই দফতরে হাজিরা দিলেন ওয়াকার রাজা।
২০১২ সালে ওয়াকার ছিলেন সিআইডিতে। ওই সময়ে তিনমাস অন্তর কেন্দ্র ও রাজ্যের বিভিন্ন সংস্থা কলকাতার কাস্টমস হাউসে বৈঠকে বসত। উপস্থিত থাকতেন ২৮-৩০টি সংস্থার আধিকারিকরা। সেবি, রেজিস্টার্স অব কোম্পানিজ, ইডি, কলকাতা পুলিশ, সিআইডির মতো সংস্থা থাকত ওই বৈঠকে।
আলোচনা হত কর ফাঁকি, দুর্নীতি ইত্যাদি প্রভৃতি নিয়ে। জানা যাচ্ছে, ২০১২ সালের জুলাই মাসে প্রথম যখন ওই বৈঠকে রোজভ্যালির কেলেঙ্কারি সামনে আসে, তখন নাকি খুব একটা গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। ওই বৈঠকে ঠিক কী হয়েছিল তা জানতে চাওয়ার জন্যই ওয়াকারকে ডেকে পাঠানো হয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছিল। অক্টোবর মাসে ব্যাপারে ওয়াকার বলেছিলেন, “সিআইডি-র তরফেই আমাকে ওই বৈঠকে পাঠানো হতো। আমার যা মনে আছে আমি সিবিআইকে বলব।” যদিও আজ তিনি সিজিও কমপ্লেক্সে ঢোকা বা বেরোনোর সময়ে কোনও কথাই বলেননি।
জানা গিয়েছে, ২০১০ সালে তৎকালীন অর্থমন্ত্রী অসীম দাশগুপ্ত রোজভ্যালির বেআইনি টাকা তোলা নিয়ে দময়ন্তী সেনকে চিঠি লিখেছিলেন। দময়ন্তী তখন ছিলেন কলকাতা পুলিশের অপরাধ দমন শাখার প্রধান। কিন্তু যেহেতু রোজভ্যালি সেবি নথিভুক্ত সংস্থা ছিল সেহেতু দময়ন্তী চিঠি লিখেছিলেন সেবিকে। সেবি রোজভ্যালির ব্যবসা বন্ধের বিজ্ঞপ্তি জারি করে এবং পরে গৌতম কুণ্ডু আদালতের দ্বারস্থ হয়ে সেই নির্দেশে স্থগিতাদেশ পেয়ে যান। মনে করা হয়েছে সে ব্যাপারে কথা বলার জন্যই দময়ন্তীকে জেরা করতে চাইছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা এজেন্সি। তবে কবে তিনি সিজিও কমপ্লেক্সে যাবেন, তা জানা যায়নি।
এমনিতেই এই চিটফান্ড দুর্নীতির তদন্তের জন্য একাধিক পুলিশ কর্তাকে জেরার মুখে পড়তে হয়েছে। রাজীব-কুমার সিবিআইয়ের টানটান লড়াই দেখেছে বঙ্গবাসী। জেরা করা হয়েছে অর্ণব ঘোষের মতো পুলিশ কর্তাকেও। এ ছাড়াও বিধাননগর কমিশনারেটের অন্তর্ভুক্ত একাধিক থানার ওদি, চিটফান্ড তদন্তের জন্য গঠিত স্পেশাল ইনভিস্টিগেশন টিমের সদস্যকে ইতিমধ্যে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। এ বার সেই তালিকায় নাম যুক্ত হতে পারে দময়ন্তী সেন এবং ওয়াকার রাজার।