টানা তিন দিন ৫৫ ঘণ্টা তল্লাশি ও ১১ ঘন্টা পর বাকিবুর রহমানকে গ্রেফতার করে ইডি। বয়ানে অসঙ্গতি ও তদন্তে অসহযোগিতার অভিযোগের তাকে গ্রেফতার করা হয়। তার বিপুল পরিমাণ সম্পত্তির খোঁজ মিলেছে। তবে এই বিপুল সম্পত্তি বাকিবুরের একার নয় বলেই দাবি করেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তাঁর অভিযোগ, এর পেছনে কার অনুপ্রেরণা রয়েছে, সেটা
খোঁজ দরকার।
সুকান্ত মজুমদার বলেন, “এইরকম প্রচুর চালকল ব্যবসায়ী আছেন যারা অন্য জায়গায় চাল পাচার করেছে। রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রীরা এর সাথে যুক্ত। পশ্চিমবঙ্গের আগের খাদ্য মন্ত্রী যিনি ছিলেন তার এলাকা থেকে ২০০টি ট্রাক ধরা পড়েছিল। চাল পাচার হওয়ার এই ঘটনার তদন্ত হওয়া উচিত, দুধ কা দুধ পানি কা পানি হওয়া প্রয়োজন। সুকান্তর দাবি, “বাকিবুরের এই বিপুল পরিমাণ সম্পত্তি তার একার নয়। হঠাৎ করে আঙুল ফুলে কলা গাছ হয়েছে। স্বাভাবিকভাবে এর পেছনে কারোর না কারোর অনুপ্রেরণা রয়েছে। সে অনুপ্রেরণা কোথা থেকে পেয়েছে সেটাই জানা প্রয়োজন। মন্ত্রী এত কিছুর পরেও চুপ করে আছেন। এরপরে তাহলে সিবিআই ইডির কাছে বলবেন।” এর পাচারের সাথে বাংলাদেশের যোগাযোগ থাকতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করে সুকান্ত মজুমদার বলেন, এর আগেও রেশনে বন্টনের চাল ধরা পড়েছিল বিএসএফের কাছে।”
প্রসঙ্গত, এক দশকেরও বেশি সময় ধরে উত্তর ২৪ পরগনা ও নদিয়ার বহু চালকলে রীতিমতো রেশন দুর্নীতি সিন্ডিকেট চলেছে বলে ইডি সূত্রে দাবি। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটির তদন্তকারীদের বক্তব্য, এই সিন্ডিকেটের অন্যতম চাঁই স্থানীয় ব্যবসায়ী বাকিবুর রহমান। রেশন দুর্নীতিতে যাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মূলত কম দামে ন্যায্য মূল্যের ধান কিনে সেটা বেশি দামে সরকারকে বিক্রি করতেন বাকিবুর। বিভিন্ন সময় অন্য রাজ্য থেকে নিম্নমানের চাল এনে তা সরকারকে গোছিয়ে দিতেন এবং রাজ্যের চাষিদের ধান থেকে ভাঙানো চাল সরকারের ঘরে পাঠানোর বদলে বিক্রি করতেন বাইরে। এই সবকিছুর পেছনে বড় কোনো প্রভাবশালির হাত রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এই বাকিবুরের পাঁচটি চাল কল, আটাকল আছে, হোটেল ব্যবসা আছে। একটি হোটেল কলকাতায়, একটি বেঙ্গালুরুতে। এছাড়াও বাড়ি, ফ্ল্যাট, বেশ কিছু দামি বিদেশি গাড়ি আছে। নিয়মিত দুবাই যাতায়াত করতেন বাকিবুর। বাকিবুরের নিকট আত্মীয়দের অ্যাকাউন্টে টাকা জমানো আছে বলে অনুমান ইডির। রেশন দুর্নীতির টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে কিনা তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।