শিশু চুরির ২৪ ঘণ্টার মধ্যে চুরি যাওয়া ১৫ দিন বয়সের শিশুকে উদ্ধার করল বাদুড়িয়া থানার পুলিস। এই ঘটনায় গ্রেফতার এক মহিলা সহ ৩। বাদুড়িয়া থানার যদুরহাটি এলাকার আগাপুরের ঘটনা। আগাপুরে বাড়ি সানজিরা খাতুন। তাঁর ১৫ দিন বয়সের সদ্য়োজাতকে শুক্রবার রাতে চুরি করে নিয়ে যায় টুম্পা সরদার নামে এক মহিলা। গতকাল শনিবার বাদুড়িয়া থানায় অভিযোগ করেন শিশুটির বাবা বশিরউদ্দিন সরদার। তারপরই পুলিশ তদন্তে নামে। নদিয়ার তেহট্ট থানা এলাকা থেকে শনিবার রাতেই শিশুটিকে উদ্ধার করে বাদুড়িয়া থানার পুলিস। টুম্পা সরদার নামে এক মহিলা সহ যে বাড়িতে ওই শিশুটিকে রাখা হয়েছিল, সেই বাড়ির মালিক অরূপ সরকার ও টুম্পার দাদা মনিরুল ইসলাম- এই ২ জনকে গ্রেফতার করে বাদুড়িয়া থানার পুলিস।
পরিবারের অভিযোগ, দেগঙ্গার বেড়াচাঁপায় একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে ওই শিশুর জন্ম হয়। ওই নার্সিংহোমেরই আয়া টুম্পা সরদার। পুত্রসন্তানের জন্মের পর তার সঙ্গে পরিচয় হয় সানজিরা খাতুনের। এরপর হাসপাতাল থেকে ছুটির পর পুত্রসন্তানকে নিয়ে বাড়ি চলে আসে দম্পতি। এদিকে সানজিরা খাতুনের কাছ থেকে ঠিকানা নিয়ে রেখেছিল টুম্পা সরদার। সদ্যোজাতকে দেখভালের নাম করে বাড়ি চলে আসে আয়া টুম্পা সরদার। অভিযোগ, শুক্রবার রাতে সবাই ঘুমিয়ে পড়লে সদ্যোজাতকে চুরি করে পালায় টুম্পা সরদার। পরিবারের লোক চারিদিকে খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে, শনিবার সকালে বাদুড়িয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করে।
অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নামে বাদুড়িয়া থানার পুলিস। বাদুড়িয়া থানার ওসির নেতৃত্বে তদন্তে নেমে পুলিস জানতে পারে যে, ওই শিশুটিকে নিয়ে টুম্পা প্রথমে তার নিজের বাড়ি মাটিয়ায় সাংবেরিয়া গ্রামে যায়। সেখান পরে ট্রেনে করে শিশুটিকে নিয়ে নদিয়ার তেহট্ট গ্রামে যায়। পরিকল্পনা ছিল, সেখান থেকে ওই সদ্যোজাত শিশুপুত্রকে বাংলাদেশে পাচার অথবা বিক্রি করার। পুলিস একথা জানতে পেরে অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে নদিয়া থেকে উদ্ধার করে ওই সদ্যোজাতকে। সেইসঙ্গে টুম্পা সরদার নামে ওই আয়াকে গ্রেফতার করে।
এরপর রবিবার সকালে টুম্পাকে সাহায্য করার অভিযোগে তার দাদাকে গ্রেফতার করে পুলিস। শিশুটিকে তুলে দেওয়া হয় তার পরিবার হাতে। প্রসঙ্গত, বাদুড়িয়ার গত ৭ বছর আগে বেসরকারি নার্সিংহোম থেকে বেশ কয়েকটি শিশু পাচারের ঘটনায় রাজ্যজুড়ে তোলপাড় পড়ে গিয়েছিল। সেই ঘটনায় বাদুড়িয়া ও কলকাতা থেকে বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করে পুলিস। এই ঘটনায় বেশ কয়েকজন চিকিৎসকের নামও জড়িয়েছিল। তাদের মধ্যেও কয়েকজনকে গ্রেফতারও করা হয়। সেই মামলা এখনও চলছে আদালতে।