সিকিমের প্রাকৃতিক দুর্যোগে দশ দিন ধরে নিখোঁজ দক্ষিণ দিনাজপুরের নয় যুবক। আর যার জেরে অর্ধাহার ও অনাহারে দিন কাটছে আদিবাসী গ্রামের শিশু মহিলাদের। কান্নায় ভেঙে পড়েছে পরিবারের লোকেরা। ডুকরে কাঁদছে তিন তিনটি আদিবাসী গ্রাম। বালুরঘাট ব্লকের বোয়ালদাড় গ্রাম পঞ্চায়েতের এমন ঘটনায় রীতিমতো আলোড়ন পড়েছে গোটা দক্ষিণ দিনাজপুরে। প্রশাসন ও সাধারনের কাছে সাহায্যের করুণ আর্জি হতদরিদ্র আদিবাসী পরিবারগুলির।
প্রসঙ্গত, গত ৪ অক্টোবর মেঘভাঙা বৃষ্টির জেরে বিপর্যস্ত হয় সিকিম। তিস্তার ত্রাসে রাতের অন্ধকারে ভেঙ্গে তলিয়ে যায় বহু ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট। বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় যোগাযোগ ব্যবস্থা। নিখোঁজ হয়ে যায় বহু মানুষও। যাদের মধ্যে অনেকের দেহ উদ্ধার হলেও এখনও নিখোঁজ রয়েছেন অনেকেই। আর এই দুর্ঘটনার কবলে পড়ে আজো নিখোঁজ হয়ে রয়েছে দক্ষিণ দিনাজপুরের নয় যুবক। বালুরঘাট ব্লকের বোয়ালদাড় গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত পশ্চিম কৃষ্ণপুর থেকেই নিখোঁজ রয়েছেন চার যুবক। যাদের মধ্যে এক পরিবারের বাবা ও ছেলেও রয়েছেন। পাশাপাশি কোরালডাঙা, ন’পাড়া গ্রাম থেকেও নিখোঁজ রয়েছেন আরো পাঁচ যুবক। ঘটনার দশ দিন অতিক্রান্তের পরেও তাদের খোঁজ না মেলায় রীতিমতো কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ পড়েছে আদিবাসী পরিবারগুলিতে। কান্নায় ভেঙে পড়ছে অসহায় পরিবারগুলিও।
জানা গেছে, বোয়ালদাড় গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত ওই আদিবাসী গ্রামগুলি থেকে ঠিকা শ্রমিকের মাধ্যমে প্রথমে শিলিগুড়ি এবং তারপর সিকিমে কাজে গিয়েছিল ওই যুবকরা। দুর্যোগের আগের দিন পরিবারের লোকেদের সাথে তাদের যোগাযোগ হলেও দশ দিন ধরে একেবারেই নিখোঁজ রয়েছেন তারা। ঘটনা নিয়ে থানায় অভিযোগ জানালেও কাজের কাজ এখনো কিছুই হয়নি। এদিকে প্রায় দশদিন অতিক্রান্তের পরেও ওই যুবকদের খোঁজ না মেলায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে আদিবাসী পরিবারগুলি। পুরুষহীন পরিবারগুলিতে রীতিমতো খাবারের সঙ্কট দেখা যাওয়ায় কান্নায় ভেঙে পড়েছে শিশু ও মহিলারা। যা নিয়েই সাহায্যের করুন আর্জি জানিয়েছেন হতদরিদ্র ওই আদিবাসী পরিবারগুলি।
সুজাতা বেসরা নামে এক মহিলা কাঁদতে কাঁদতে বলেন, তার স্বামী বুধন ও ছেলে বিক্রম সরেন প্রায় দশদিন ধরে নিখোঁজ রয়েছে। ঠিকা শ্রমিকের মাধ্যমে সিকিমে কাজে গিয়েছিল তারা। দুর্যোগের পর থেকে আর তাদের সাথে যোগাযোগ করা যায়নি। কোথায় আছে এবং কিভাবে আছে তা ভেবেই সকলে শিউরে উঠছেন। এদিকে ঘরে খাবার শেষ হয়ে যাওয়ায় কি করবেন ভেবে উঠতে পারছেন না তারা।
অখিল টুডু নামে এক বাসিন্দা বলেন, শুধুমাত্র পশ্চিম কৃষ্ণপুরই নয়, তিনটি গ্রামের প্রায় নয়জন মানুষ নিখোঁজ হয়ে রয়েছেন। যারা সিকিমে কাজের জন্য গিয়েছিল। কিভাবে তাদের খোঁজ মিলবে তা তারা বুঝে উঠতে পারছেন না।