মেয়েটার নাম Shani Louk ত্রিশ বছর বয়সী জার্মান নাগরিক, পেশাগত দিক থেকে একজন গ্রাফিক ডিজাইনার ও ট্যাটু আর্টিস্ট এবং একটি ফুটফুটে শিশুপুত্রের মা। গত পাঁচই অক্টোবার সে এসেছিল গাজা বর্ডারের কাছে একটি মিউজিক ফেস্টিভ্যালে যোগ দিতে, মিউজিক ফেস্টিভ্যাল ফর পিস… শান্তির জন্য সঙ্গীত উৎসব! “হামাস” রাজার সেনা তোরা যুদ্ধ করে করবি কী তা বল?….
হামাসের আক্রমণে বন্দী হয় ও তারপর খুন হয়। তারই অর্ধ উলঙ্গ দেহ ট্রাকে চাপিয়ে হামাস জঙ্গিরা পৈশাচিক উল্লাসে মেতে ওঠে। কারো বুটজুতো পরা পায়ের লাথি, কারো এক দলা থুতু এসে জোটে মেয়েটার শরীরে। যার মৃতদেহের ওপর বর্বর প্যালিস্তিনি জনতার এত আক্রোশ, না জানি মরার আগে তার সাথে কী কী করেছে এই জানোয়ারের দল!
যদি এতদূর পড়ে,জেনে ও ছবি দেখে আপনার মনে হয় যে পৃথিবীর সমস্ত শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানবতাবাদী মানুষ এই ঘটনার প্রতিবাদ করছে, ধিক্কার জানাচ্ছে প্যালিস্তিনি জঙ্গীদের, তাহলে আপনি ভুল করছেন। আমার আপনার শহর,প্রগতিশীল চিন্তার শহর কলকাতার মুক্তচিন্তার মুখ বিখ্যাত বামপন্থী মহিলানেত্রী দীপ্সিতা ধর তার অকুন্ঠ সমর্থন জানিয়েছেন প্যালেস্টাইনকে। একজন নারীর চরম অপমান হলেও ওঁর বিবেক জাগে না, ওঁর শিক্ষা ওঁকে বলে না তার প্রতিবাদ করতে কারণ বামপন্থী শিক্ষা বলে নির্যাতিতের পরিচয় দেখেই প্রতিবাদ করা উচিত। কোনো বামপন্থীকে মানুষ বলে সম্মান দেওয়ার আগে অবশ্যই মনে রাখবেন বানতলা ধর্ষণের পরে এঁরই পূর্বসূরি বলেছিলেন “এরম তো কতই হয়”। ফেসবুকে বর্বরদের সমর্থনে পোস্ট লেখা কমরেড আর কালো পর্দাধারী বন্দুক হাতে উল্লাস করা হামাস নারীদের মধ্যে আমি কোনো তফাৎ দেখিনা।
মানবসভ্যতার ইতিহাসে সবচেয়ে প্রচলিত যুদ্ধক্ষেত্র হচ্ছে নারী শরীর। যুগে যুগে বর্বররা তা বিদীর্ণ করেছে নিজেদের অহংয়ের কষাঘাতে। পুরুষের বর্বর লালসার হাত থেকে নিজের মৃতদেহকে রক্ষা করতে লাখে লাখে নারী ঝাঁপ দিয়েছে জ্বলন্ত অগ্নিকুণ্ডে। সেটা হেরে যাওয়া নয়, বর্বরের চোখে চোখ রেখে তাকে হারিয়ে দেওয়া।
মেয়েটা রূপ, রস, গন্ধ,সঙ্গীতকে ভালোবেসেছিল। পৃথিবীকে দেখতে ঘুরে বেরিয়েছিল কুড়িটা দেশে…. এটাই তার দোষ, এটাই তার ভুল।তাকে বর্বররা মেরে ফেলেছে, কিন্তু তার চেতনাকে অন্ধকারের দূতরা মারতে পারবে না।পৃথিবীর কোটি কোটি মেয়ে এখনো আছে যারা তোমাদের অন্ধকারের আইন মানতে রাজী নয়, তাদের মধ্যেই বেঁচে থাকবে Shani Louk , তার আত্মা… “ন হন্যতে হন্যমানে শরীরে”।
পৌলমী পাল Paulami Pal