জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত কুঠারাঘাত করেছে বিচ্ছিন্নতাবাদ ও সন্ত্রাসবাদের মূলে। থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাঙ্ককে এ কথা বললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আসিয়ান-ভারত বৈঠক, পূর্ব এশিয়ার দেশগুলির বৈঠক ও আরসিইপি-র বৈঠকে যোগ দিতে তিন দিনের সফরে শনিবার ব্যাঙ্ককে গেছেন প্রধানমন্ত্রী।
তিন দিনের বৈঠকের প্রথম দিনেই ‘স্বয়াসদী পিএম মোদী’ অনুষ্ঠানে পাঁচ হাজার ভারতীয়র সামনে কাশ্মীর নিয়ে তাঁর অবস্থান ব্যাখ্যা করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, “আপনারা জানেন যে বিচ্ছিন্নতাবাদ ও সন্ত্রাসবাদের বীজ বপনের সবচেয়ে বড় কারণ মুছে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত। যখনই কঠোর কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় তখনই সারা বিশ্বে তার প্রতিধ্বনি শোনা যায়। আর একথা আমি থাইল্যান্ডেও শুনতে পাচ্ছি।
এবছর ৫ অগস্ট কেন্দ্রীয় সরকার জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহার করে নেয়, রাজ্যকে দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ভাগ করার সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়েছে গত বৃহস্পতিবার। ইতিমধ্যে ২৮টি রাজ্য ও দু’টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের সরকারি মানচিত্রও প্রকাশ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার।
কাশ্মীরের বিষয়টিকে আন্তর্জাতিক মহলে নিয়ে যাওয়ার জন্য ক্রমাগত চেষ্টা করে যাচ্ছে পাকিস্তান। ব্যাঙ্ককের মাটিতে দাঁড়িতে প্রধানমন্ত্রী স্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দেন, ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলানোর অধিকার বিশ্বের কোনও দেশের নেই। দেশের শাসকদল বিজেপি চিরকালই মনে করে, কাশ্মীরকে দেওয়া বিশেষ মর্যাদাই বিচ্ছিন্নতাবাদ ও সন্ত্রাসবাদের মূল কারণ।
আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ভারতের গুরুত্ব ক্রমেই বাড়ছে – এই প্রসঙ্গ তুলে প্রধানমন্ত্রী মোদী জানান, ভারতের মূল্যবোধ আগামী দিনে বিশ্বকে নতুন রূপ দেবে। ‘স্বয়াসদী পিএম মোদী’ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, “থাইল্যান্ডে এটাই আমার প্রথম সরকারি সফর, এখানে এসে আমি ভীষণ ভাবে ভারতীয়ত্ব অনুভব করতে পারছি। ভারতের সঙ্গে সারা পৃথিবী দীপাবলি পান করেছে, এখানেও দেখছি সেটাই হয়েছে।” তিনি জানান, এই দুই দেশের মধ্যে যখন দৃঢ় বন্ধন করেছে তখন তখন তিনি উত্তরপূর্ব ভারতকে দক্ষিণপূর্ব এশিয়ায় প্রবেশদ্বার করতে চান। প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, “যখন ভারত-মায়ানমার-থাইল্যান্ড এই তিন দেশের মধ্যে হাইওয়ে চালু হয়ে যাবে, তখন আমাদের তিন দেশের মধ্যে অবাধ যাতায়াত শুরু হয়ে যাবে।”
বিভিন্ন বৈঠকে যোগ দিতে ১৬টি দেশের নেতা এখন থাইল্যান্ডে। তাঁদের সম্মানে সোমবার বিশেষ মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করেছেন থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী প্রয়োৎ চান-ও-চা। তাতে যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী মোদীও।