Dengue: দক্ষিণ দমদম-ঠাকুরপুকুরে ফের মৃত্যু, ডেঙ্গি নিয়ে জনস্বার্থ মামলা হাইকোর্টে!

রাজ্যে ফের ডেঙ্গিতে মৃত্যু। একদিকে ঠাকুরপুকুরে, অন্যদিকে দক্ষিণ দমদমে। ফের ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু ঘটল রাজ্যে। ঠাকুরপুকুরের ১২৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা পরেশ সাউ গত শুক্রবার হাসপাতালে ভর্তি হন। রক্তের নমুনা পরীক্ষায় ডেঙ্গি পজিটিভ রিপোর্ট আসে। সোমবার সন্ধেবেলায় মৃত্যু হয় তাঁর। এলাকার মানুষ ক্ষোভের সঙ্গে জানিয়েছেন, স্থানীয় কাউন্সিলর কোনও কাজ করে না। এলাকার বিভিন্ন জায়গায় জল জমে রয়েছে। নিকাশি ব্যবস্থা কিছু নেই। এককথায় বলা যায়, মশার আঁতুঘর হয়ে রয়েছে ১২৫ নম্বর ওয়ার্ডের ২ নম্বর বাঁচার পাড়া। বর্ষার জল সমস্ত জায়গায় জমে রয়েছে। এলাকাবাসী জানাচ্ছেন, ডেঙ্গির আতঙ্ক পুরো এলাকা জুড়ে। এখনও বেশ কিছু পরিবারের মানুষ জ্বরে আক্রান্ত রয়েছেন। মাস দুয়েক আগেও এই এলাকারই একজন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন।

ওদিকে দক্ষিণ দমদমে ফের ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে এক প্রৌঢ়ার। নাম শ্যামলী বন্দ্যোপাধ্যায়। ৫৮ বছরের শ্যামলী বন্দ্যোপাধ্যায় বেশ কয়েকদিন ধরে জ্বরে আক্রান্ত ছিলেন। পরবর্তী সময়ে তাঁকে উল্টোডাঙার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। রিপোর্টে  ডেঙ্গি পজিটিভ আসে। গতকাল তার মৃত্যু হয়। দক্ষিণ দমদম পুরসভার ২০ নম্বর ওয়ার্ডের বাঙুর শ্যামাপ্রসাদ কলোনির বাসিন্দা ছিলেন শ্যামলী বন্দ্যোপাধ্য়ায়। এই নিয়ে দক্ষিণ দমদম পুরসভা এলাকায় ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৮। আক্রান্তের সংখ্যা ১০০০-এর কাছাকাছি।

এহেন পরিস্থিতিতে রাজ্যে যখন চরম উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ডেঙ্গি, তখন ডেঙ্গি নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের হল জনস্বার্থ মামলা। এদিন কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন চিকিৎসক সঞ্জীব মুখোপাধ্যায়। প্রধান বিচারপতির এজলাসে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন তিনি। আগামী সপ্তাহে শুনানির সম্ভাবনা। অবিলম্বে বিশিষ্ট চিকিৎসকদের দিয়ে মেডিক্যাল কমিশন গঠন করে নজরদারির ব্যবস্থা করার আর্জি জানানো হয়েছে মামলায়। পাশাপাশি মামলায় আবেদন করা হয়েছে, যত্রতত্র আবর্জনা ও জমা জল পরিষ্কার করার জন্য নির্দেশ দিক আদালত। রক্ত পরীক্ষার জন্য মোবাইল ইউনিট চালু করারও আবেদন জানানো হয়েছে। রাজ্য ডেঙ্গি মোকাবিলায় ব্যর্থ, পুরসভা ও পঞ্চায়েতগুলি কোনও কাজ করছেন না বলে অভিযোগ। ডেঙ্গি নিয়ে কেন্দ্রকে সঠিক পরিসংখ্যান রাজ্য দিচ্ছে না বলেও অভিযোগ করা হয়েছে মামলায়। 
প্রসঙ্গত কদিন আগে রাজ্যের ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রূপরেখা নির্ধারণে বৈঠক করেন মুখ্যসচিব। সেই বৈঠকে ভার্চুয়ালি উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। ডেঙ্গি মোকাবিলায় একগুচ্ছ নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। পুরসভাগুলোকে আরও সক্রিয় হতে নির্দেশ। বাড়ি বাড়ি যেতে হবে। ফাঁকা বাড়ি, অফিস, নির্মীয়মাণ বিল্ডিংয়ে রোজের নজরদারিতে জোর দিতে হবে। বাড়িতে মশারি মাস্ট। পুরসভাগুলিকে ডেডিকেটেড টিম তৈরির নির্দেশ। মণ্ডপের বাঁশ, পড়ে থাকা কাপ-প্লেটে যাতে জল না জমে থাকে তা লক্ষ্য রাখতে নির্দেশ পুজো কমিটিগুলিকে। ব্লিচিং পাউডার ইত্যাদি ছড়াতে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.