মাটির ১০০ ফুট নিচে কী করে পুঁতে দিতে হয় সেটা সুকান্ত মজুমদার জানে, দলের কর্মীদের মনোবল চাঙ্গা করতে তৃণমূলকে হুঁশিয়ারি সুকান্তর

“মাটির ১০০ ফুট নিচে কীভাবে পুঁতে দিতে হয় জানি।” এভাবেই দলের কর্মীদের মনোবল বাড়াতে তৃণমূল কর্মীদের উদ্দেশ্যে হুঁশিয়ারি দিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। বৃহস্পতিবার কাটোয়ার জনসভা থেকে রাজ্যের শাসক দলের কর্মীদের হুঁশিয়ারি দেন বঙ্গ বিজেপি সভাপতি। তার এই মন্তব্যে অনেকেই প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের ছায়া দেখতে পাচ্ছেন, তবে রাজ্য সভাপতি হিসেবে সংগঠন মজবুত করতে কর্মী বাহিনীর সাহস বাড়াতেই এহেন মন্তব্য বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ।

সুকান্ত মজুমদারকে বলতে শোনা গেছে, “তৃণমূলের গুন্ডাদের বলে যাচ্ছি। আমি মাস্টার মশাই, অনেক বেয়াদব ছাত্রকে সোজা করেছি। আমি প্রাইমারি থেকে ইউনিভার্সিটি অব্দি পড়িয়েছি। তোমাদের মত গুন্ডাদের মাটির ১০০ ফুট নিচে কী করে পুঁতে দিতে হয় সেটা সুকান্ত মজুমদারের জানা আছে।” তার আরও হুঁশিয়ারি, “পার্টি করছেন করুন, চুরি করছেন করুন। বিজেপি কর্মীদের গায়ে হাত দিলে তার হিসাব কড়ায়
গন্ডায় বুঝিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা সুকান্ত মজুমদারের আছে।”

একই সঙ্গে দলের কর্মীদের আশ্বস্ত করে সুকান্তবাবু বলেন, আর মার খাবেন না। পাল্টা মার দিয়ে আসবেন। আপনাদের বিরুদ্ধে মামলা দিলে আমরা হাইকোর্ট থেকে জামিনের ব্যবস্থা করব। প্রয়োজন হলে সুপ্রিম কোর্টেও লড়বো।

বহুদিন আগেই বাংলা রাজনীতি যে ভাষার সংযম হারিয়েছে সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না। তবু কিছু নেতৃত্ব সেই সংযম বজায় রাখেন, তার মধ্যে অন্যতম সুকান্ত। তবে পদ্ম শিবিরের রাজ্য সভাপতিকে এমন গরমাগরম মন্তব্য করতে আগে শোনা যায়নি। বৃহস্পতিবার কাটোয়ার দলীয় জনসভা থেকে খানিকটা দিলীপ ঘোষের ভঙ্গিমায় তৃণমূলকে পাল্টা মারের নিদান দিয়েছেন তিনি। এছাড়াও পূর্ব বর্ধমান জেলা তৃণমূল সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় ও মন্ত্রী স্বপন দেবনাথকেও আক্রমণ শানান রাজ্য সভাপতি। তিনি বলেন, আপনাদের জেলায় তো চোরের অভাব নেই, সব বড় বড় চোর। এখানে কাটমানি, সিন্ডিকেটের সম্রাট রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়। তিনি কংগ্রেসে ছিলেন কংগ্রেস থেকে তৃণমূলে গেলেন। এখন কি করবেন? কংগ্রেসের পাপ্পু আর তৃণমূলের আপ্পুতো জোট করছে। দিল্লির পাপ্পু হলেন রাহুল গান্ধী, আর বাংলার আপ্পু হলেন কয়লা ভাইপো। এখন রবীন্দ্রনাথবাবু কী করবেন? কোথায় যাবেন বুঝতে পারছেন না। কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন শুনলাম। কলকাতাতেও নাকি বাড়ি কিনেছেন।

স্বপন দেবনাথকে নিশানা করে সুকান্ত বলেন, তৃণমূলের একেকটা বিধায়ক বড় বড় চোর। ছেলেরা বেকার হয়ে বসে আছে। আর পূর্বস্থলী দক্ষিণের বিধায়ক স্বপন দেবনাথের ছেলে চাকরি পেয়ে গিয়েছেন। উনি নাকি একসময় হাফপ্যান্ট পরে সাইকেলে চড়ে ঘুরে বেড়াতেন।”

বিজেপির রাজ্য সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই তাকে আক্রমনাত্মক হতে দেখা গেলেও ভাষা প্রয়োগে তিনি প্রশংসাই কুড়িয়েছেন। পেশায় অধ্যাপক সুকান্ত বরাবরই মার্জিত। তবে তৃণমূলের বিরুদ্ধে মাটি কামড়ে পড়ে থাকা কর্মীদের পাশে দাঁড়াতে ও হিংসার রাজনীতির বিরুদ্ধে দলের কর্মীদের সাহস যোগাতে আগল ভেঙেছেন তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.