উত্তর ২৪ পরগনার গাইঘাটার মানিকহীরা দেশপাড়ায় খুন হওয়া বিজেপি সমর্থকের বাড়িতে কেন্দ্রীয় জাহাজ প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর ও গাইঘাটার বিধায়ক সুব্রত ঠাকুর সহ বিজেপি কর্মী সমর্থকরা। নিহতের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে তাঁরা কথা বলেন। পরিবার বিজেপি সমর্থক হওয়ায় গালিগালাজ করা হয় বলে অভিযোগ। এর প্রতিবাদ করায় গতকাল ৬২ বছরের প্রৌঢ়াকে বাঁশ দিয়ে পিটিয়ে খুন করা হয় বলে অভিযোগ। শান্তনু ঠাকুর বলেন, খুনের ঘটনায় মূল মাথা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাকে ঠাকুরবাড়ি ঢুকতে না দেওয়ার রাগে তাঁর চ্যালাচামুন্ডাদের দিয়ে গাইঘাটা উত্তপ্ত করার চেষ্টা করছে। তার কারণেই একজন নিরীহ মানুষের প্রাণ গেল।
গাইঘাটাতে বিজেপি সমর্থকের খুনের ঘটনায় মূল মাথা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, খুন হয়ে যাওয়া বিজেপি সমর্থকের বাড়িতে এসে বলেন কেন্দ্রীয় জাহাজ প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর। নিহতের পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দেন তিনি। বুধবার রাতে উত্তর ২৪ পরগনার গাইঘাটার মানিকহীরা দেশপাড়াতে বিজেপি সমর্থক কানন রায় নামে ৬২ বছরের বৃদ্ধাকে তৃণমূল কর্মী সমীর মল্লিক মাথায় বাঁশ দিয়ে আঘাত করে। পরবর্তীতে তার মৃত্যু হয়। এই ঘটনা নিয়ে বনগাঁ জেলা যুব তৃণমূল সভাপতি নিরুপম রায়ের বাড়িতে চড়াও হয়েছিল গ্রামবাসীরা। আজ কানন রায়ের বাড়িতে তার পরিবারকে সমবেদনা জানাতে পৌঁছেছিলেন কেন্দ্রীয় জাহাজ প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর, গাইঘাটার বিধায়ক সুব্রত ঠাকুর সহ বিজেপি কর্মী সমর্থকরা। পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন শান্তনু ঠাকুর। এই ঘটনায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশ্যে আক্রমণ করে তিনি বলেন, যারা অভিযুক্ত পুলিশ তাদের বাড়িতে পাহারা দিচ্ছে, দলদাসে পরিণত হয়েছে পুলিশ। ওরা বলেছে আরও পাঁচটা খুন করবে। আমরাও দেখব ওরা কত বড় বাপের বেটা। কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রীর দাবি, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এই ঘটনার মূল মাথা। ঠাকুরবাড়িতে ঢুকতে না পেরে বলেছিলেন তিন মাস পরে পরে আসবো, তিন মাস অতিক্রম করলেও তিনি আসেননি। ওর রাগ রেখে গেছে। আমার সংসদীয় এলাকা উত্তপ্ত করার চেষ্টা করছে। মানুষের মধ্যে ভয়-ভীতি তৈরি করতে চাইছে।
বিজেপি কর্মীর মা-কে বাঁশপেটা করে খুনের অভিযোগে নাম জড়ায় স্থানীয় তৃণমূল কর্মীর। আর সেই ঘটনায় ইন্ধন দেওয়ার অভিযোগে গ্রামবাসীর একাংশের রোষ আছড়ে পড়ল বনগাঁ সাংগঠনিক জেলা যুব তৃণমূলের সভাপতি ও গাইঘাটা পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ নিরুপম রায়ের বাড়িতে।
গাইঘাটা থানার পুলিশ সূত্রের খবর, মৃতার নাম কানন রায়। প্রত্যক্ষদর্শীদের দেওয়া বয়ান থেকে তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, কানন রায়ের পরিবার বিজেপি সমর্থক। তা নিয়ে স্থানীয় তৃণমূল কর্মী সমীর মল্লিকের সঙ্গে তাঁদের আকচা-আকচি অনেকদিন ধরেই চলছিল।
অভিযোগ, বুধবার রাতে, কানন রায়ের রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে গালিগালাজ করেন তৃণমূল কর্মী সমীর মল্লিক। বচসা থেকে বাধে হাতাহাতি। মৃতার পরিবারের অভিযোগ, হঠাৎ বাঁশ তুলে মহিলার মাথায় সজোরে আঘাত করেন সমীর। বাঁচাতে গেলে মৃতার বৌমা এবং স্বামীকে বেধড়ক মারধর করা হয়।
অভিযোগ পেয়েই, তৃণমূল কর্মী সমীর মল্লিককে গ্রেফতার করে পুলিশ। কিন্তু, সমীর মল্লিক, বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার যুব তৃণমূলের সভাপতি নিরুপম রায়ের মদতপুষ্ট, এই অভিযোগে গতকাল সকালে স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ তাঁর বাড়িতে চড়াও হয়। ঘটনায় খুনের মামলা রুজু করে তদন্তে নেমেছে গাইঘাটা থানার পুলিশ।