ফিল্মি বাজারে স্বেচ্ছায় তোলা অর্ধনগ্ন ছবি ভোটের বাজারে খারাপ লাগছে কেন?

ছবি সৌজন্যে :

https://goo.gl/images/yhw8nU

https://goo.gl/images/CWqJuE

একদিক থেকে চিন্তা করলে নুসরত ও মিমিকে নিয়ে ট্রোল হওয়াটাই স্বাভাবিক। হ্যাঁ, এটা টিক যে বর্তমান পরিস্থিতিতে সোশ্যাল মিডিয়ায় এই দুই নায়িকার ছবি দিয়ে ও লিখে যেভাবে ব্যঙ্গ করা হচ্ছে তা তৃণমূল কংগ্রেসের জন্য বেশ অস্বস্তিকর। তাতে করে এই দুই সুন্দরী প্রার্থীর ভোটবাক্সে নেগেটিভ প্রভাব পড়তে বাধ্য। কারণ, আমজনতা স্বল্পবসনা নায়িকাকে যতখানি পছন্দ করে, ঠিক ততখানিই অপছন্দ করে যদি দেখে তাঁদের মহিলা জনপ্রতিনিধি শর্মিলা ঠাকুরের মতো বিকিনি পড়ে সমুদ্রে স্নান করছেন। অতএব, নুসরত ও মিমি যে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন ট্রোল হওয়া নিয়ে, তাঁরা যে বলছেন, যাঁরা এসব (ট্রোল) করছেন সে সব মানুষ ‘আনকালচার্ড’, তাঁরা মেয়েদের সম্মান করতে জানেন না ইত্যাদি, তা আসলে কিন্তু নুসরত ও মিমি বলছেন না। বলছেন যথাক্রমে যাদবপুর ও বসিরহাট আসনে দাঁড়ানো তৃণমূলের দুই লোকসভা প্রার্থী। কেন?
কারণ, যে সব ছবি দিয়ে দুই নায়িকাকে ট্রোল করা হয়েছে সেগুলি কিন্তু তাঁদেরই ছবি। অন্য কারো নয়। (দু’একটি ক্ষেত্রে ফটোশপ হতে পারে। সেক্ষেত্রে অপরাধির শাস্তি হওয়া বাঞ্ছনিয়। যদি কটু কথা লেখা হয়, সেক্ষেত্রেও।) এবং মনে রাখা ভালো, মিমি ও নুসরত টলিউডের এই প্রজন্মের হিট হিরোইন। অতএব, ওঁরা নিশ্চয়ই অ্যাদ্দিন যাবৎ কেবল বোরখা বা ঘোমটা দেওয়া শাড়ি পরে অভিনয় করেননি। এমনও শোনা যায় না যে, ওঁরা প্রযোজকের মুখের উপর বলে দিয়েছেন— সতী সাবিত্রী টাইপ চরিত্র ছাড়া করব না। অতএব নুসরত আর মিমি সিনেমার প্রয়োজনে, টাকার বিনিময়ে বিজ্ঞাপন করতে গিয়ে, কেরিয়ারের দরকারে বড়-মেজো-ছোট… সব রকম পোশাকই পরেছেন। আর সেইসব ছবিই রয়েছে ইন্টারনেটের ভাণ্ডারে। যা তাঁরা স্বেচ্ছায় তুলেছিলেন, কারণ তাহাই অভিনেত্রী পেশার স্বাভাবিক চরিত্র। এখন প্রশ্ন হল, স্বেচ্ছায় অভিনয় করা নিজেদের সিনেমার বা মডেলিংয়ের জন্য তোলা স্বল্পবসনা ছবিগুলো দেখে আজ হঠাৎ নুসরত ও মিমির খারাপ লাগছে কেন? কেন তাঁরা মেয়েদের সম্মান, অসম্মানের প্রশ্ন তুলছেন? সেই অসম্মানের কথা তাঁদের মনে ছিল না যখন ওই পোশাক পরার বিনিময়ে লক্ষ কোটি টাকা কামিয়েছিলেন? দ্বিতীয়ত, তাহলে কি ধরে নিতে হবে যে, এই দুই নায়িকা ভবিষ্যতে আর আধুনিক ফ্যাশন দুরস্ত নায়িকা সুলভ সেক্সি পোশাক পরবেন না? তা নিশ্চয়ই নয়। দেব যেমন নিজের পেশা ছাড়েননি, তেমনি এই দুই নায়িকাও সিনেমা করা চালিয়ে যাবেন, একথা বলার জন্য নস্ত্রাদামুস হওয়ার দরকার নেই। হ্যাঁ, দিদি বলেছেন বলে এখন ক’দিন হয়তো শাড়ি পরে মিটিং মিছিল করবেন, এই অবধি।
তাহলে ট্রোল নিয়ে সমস্যাটা ঠিক কোথায়? তাহলে কালচার, আনকালচারের প্রসঙ্গ উঠছে কেন? কোন যুক্তিতে নুসরত মিমি নিজেদেরই সাম্প্রতিক অতীতের ছবি দেখে মেয়েদের সম্মান অসম্মানের মতো নৈতিক প্রশ্ন তোলেন?
এর উত্তর সম্ভবত তাঁরাও জানেন না!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.