নোয়াখালির রক্তাক্ত দিনগুলি

গত জুলাই মাসে আমি হোয়াটস্ অ্যাপ ও ফেসবুকের মাধ্যমে ১৬ আগস্ট প্রত্যক্ষ সংগ্রম দিবসটি উদযাপনের আহ্বান জানিয়েছিলাম। কিন্তু আমার সেই আহ্বানে সাড়া না পেলেও আমি কিন্তু হতোদ্যম হইনি। ১৯৪৬-এর ১০ অক্টোবর মুসলিম লিগ পাকিস্তান কায়েম করার জন্য নোয়াখালি ও ত্রিপুরা জেলায় যে বর্বর অত্যচার চালায় তার কিছু বর্ণনা দেওয়ার চেষ্টা করছি।
কলকাতায় প্রথম তিন দিনে কুড়ি হাজার হিন্দু হত্যার পর, হিন্দুরা যখন গোপাল মুখার্জির নেতৃত্বে শিখ ও বিহারি গোয়ালাদের সহযোগিতায় রুখে দাঁড়ালো, তখন জেহাদিরা রণে ভঙ্গ দিল। এরপর তারা লক্ষ্মীপূজার রাতে নোয়াখালি জেলাকে বেছে নিল। সেখানে। হিন্দুর সংখ্যা ১৮ শতাংশ, মুসলমানের সংখ্যা ৮২ শতাংশ। সেদিন রাত্রে মুসলিম লিগ আরম্ভ করল হিন্দুহত্যা, নারী ধর্ষণ, লুটতরাজ, অগ্নিসংযোগ, বলপূর্বক ধর্মান্তরকরণ। তারা প্রথমে হিন্দু সমাজের নেতৃস্থানীয়দের ওপর। অত্যাচার আরম্ভ করল। প্রাণের ভয় দেখিয়ে এক লক্ষ হিন্দুকে ধর্মান্তরিত করা হলো। তাদের মাথায় টুপি, পরনে লুঙ্গি, গোমাংস ভক্ষণে বাধ্য করা হলো। মহিলাদেরকে চিৎ। করে মাটিতে শুইয়ে পায়ের বুড়ো আঙুল দিয়ে। সিঁথির সিঁদুর মুছে দেওয়া হলো। বিবাহিতাদের হাতের শাখা ভেঙে দেওয়া হলো। বুকের সন্তানকে কেড়ে নিয়ে পুকুরে ছুঁড়ে ফেলে দিল। ৫-৬ বছরের শিশুদের খড়ের গাদার উপর ছুঁড়ে দিয়ে তাতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। শিশুরা জলন্ত আগুন থেকে নীচে গড়িয়ে পড়লে তাদের পা ধরে পুকুরে ছুঁড়ে ফেলে দেওয়া হচ্ছিল। প্রাণের ভয়ে মানুষ পুকুরে ঝাপ দিয়েছিল। তাদেরকে কোচ, টেটা, বল্লম দিয়ে আঘাত করে হত্যা করা হয়েছিল। বাড়ির সব সম্পদ লুঠ করে মহিলাদের গণধর্ষণ আরম্ভ করলো। বাড়ির পুরুষদের হাত-পা বেঁধে জ্বলন্ত অগ্নিকুণ্ডে নিক্ষেপ করে বাঁশ দিয়ে চেপে ধরে জীবন্ত পুড়িয়ে মারার উৎসব শুরু করে দিল। ১১ অক্টোবর, তারা হিন্দু মহাসভার সভাপতি রায় সাহেব রাজেন্দ্রলাল রায়ের বাড়ি আক্রমণ করলো। কয়েক হাজার মুসলমান দা, বর্শা, কুড়োল, কাটারি নিয়ে আল্লাহু আকবর ধ্বনি দিতে থাকে। রাজেনবাবু একটা একতলা দালান বাড়িতে থাকতেন। দাঙ্গাবাজরা কাঠের দরজায় আগুন ধরিয়ে দিলে পরিবারের সবাই ছাদে গিয়ে উঠলেন। সেখান থেকে সকলকে নামিয়ে নিয়ে কেবল রাজেনবাবুকে নারকেল বাগানের দিকে নিয়ে যাচ্ছিল হত্যা করার জন্য। ওই সময় রাজেনবাবুর ছেলে গোপাল বসু বুঝতে পেরে বাবা বাবা বলে ছুটে যাচ্ছিলেন, এক দুবৃত্ত বল্লম দিয়ে তাকে এফোঁড় ওফোঁড় করে হত্যা করল। রাজেনবাবুর ওপর অকথ্য অত্যাচার করে তার মুণ্ডচ্ছেদ করে। কিছুক্ষণ ওই কাটা মুণ্ড দিয়ে ফুটবল খেলে। তারপর সেই কাটা মুণ্ড একটা থালায় করে গোলাম সারওয়ারকে উপহার দেওয়া হয়। এরপর রাজেনবাবুর পরিবারের ২২ জনকে একটা ঘরের মধ্যে নিয়ে গিয়ে, মহিলাদের অকথ্য অত্যাচার করে সকলকে উলঙ্গ করে, তাদের পরা ধুতি ও শাড়ি দিয়ে হাত পা বেঁধে, দা, বল্লম, ছুরি দিয়ে অনবরত কুপিয়ে চলছিল দুবৃত্তরা। সেকি বীভৎস দৃশ্য! চিৎকার, আর্তনাদ, গোঙানি…একেবারে হত্যা করে না করে কষ্ট দিয়ে মারাই তাদের উদ্দেশ্য ছিল। এরপর জেহাদিরা লুটের মাল এবং যুবতী মেয়েদের নিয়ে চলে যায়। এখানে রজেনবাবু স্ত্রী বাণীরানি চৌধুরী ২৫ নভেম্বর বাঙ্গলার কুখ্যাত প্রধানমন্ত্রী সোহরাওয়ার্দিকে যে পত্র লেখেন তার কিছু অংশ তুলে উল্লেখ করছি। এই পত্রের কপি আমার সংগ্রহশালায় আছে।
“…গত অক্টোবরে উচ্চুঙ্খল দুবৃত্তরা আমার বক্ষ হইতে আমার কুমারীকন্যা নমিতা রায় চৌধুরীকে বলপূর্বক ছিনাইয়া লইয়া গিয়াছে। আমায় কন্যাকে বলপূর্বক অপহরণ করিবার কালে আমি কপালে গুরুতর আঘাত পাই। ওই সময় আক্রমণকারী দুবৃত্তরা যে উছুঙ্খলতার পরিচয় দিয়েছিল তা বর্ণনা করা আমার সাধ্যাতীত। উ চচ্ ঙ্খল জনতার আক্রমণের ফলে রায়সাহেব রাজেন্দ্রলাল রায়ের জীবনান্ত হয়।…”
বর্তমানে প্রজন্মের মানুষ একবার চিন্তা করে দেখুন পাকিস্তান সৃষ্টির জন্য বর্বর মুসলমানরা কী ধরনের আচরণ করেছিল। ১১ জানুয়ারি ১৯৪৭ গান্ধীজী সদলবলে করপাড়া গ্রামে রাজেনবাবুর বাড়িতে যান। তখন আমার বাবা ও আমার সেজো ভাই জগদিন্দ্র সেই বাড়িতে গিয়ে ওই বধ্যভূমিতে দেখতে পান ২২ জন লোকের রক্ত শুকিয়ে দেড় ইঞ্চি পুরু আমসত্ত্বের মতো হয়ে আছে। ফিনকি দিয়ে ওঠা রক্ত দেওয়াল ও ঘরের ছাদের জমাট বেঁধে কালো হয়ে আছে।
এখানে মুসলিম লিগ নেতা ফিরোজ খান নুনের একটি উক্তি প্রণিধানযোগ্য। ১৯৪৬-এর জুলাইয়ে তিনি বলেছিলেন— “ব্রিটিশরা যদি আমাদেরকে হিন্দুরাজত্বের অধীন করে দিয়ে যায় তো আমরা ব্রিটেনকে জানিয়ে রাখছি যে, এদেশের মুসলমানরা এমন ধংসলীলা অনুষ্ঠান করবেন যা চেঙ্গিস খানের কীর্তিকেনিষ্প্রভ করে দেবে।”ফিরোজ খান নুনের হুংকারের নগ্নরূপ হলো ১৬ আগস্ট কলকাতার প্রত্যক্ষ সংগ্রাম এবং অক্টোবরে নোয়াখালিতে হিন্দু নিধন।
১১ জানুয়ারি ১৯৪৭-এর বিকেলে গান্ধীজী নিকটবর্তী গ্রাম লামচরে সদলবলে উপস্থিত হলেন। লামচর গ্রামের হাই স্কুলের মাঠে প্রার্থনা সভায় ন্যূনতম দু’হাজার লোক উপস্থিত হলো। সভাস্থলে আসন গ্রহণের পূর্বে ২১ জন নারী-পুরুষের অর্ধগলিত দেহ, কারোবা কংকাল মাত্র আজিমপুর মাঠের জলাভূমি থেকে উদ্ধার করে স্কুল প্রাঙ্গণে রাখা হয়েছিল। গান্ধীজীর নির্দেশে ডাঃ সুশীল আনোয়ার এম.বি. শবগুলি পরীক্ষা করেন। তাঁর স্বহস্তে লিখিত রিপোর্ট খানি বিশিষ্ট জননায়ক লামচর গ্রামে নিবাসী মনোরঞ্জন চৌধুরীর নিকট রক্ষিত ছিল। (তার পরিবারের সদস্যদের নিকট এখনো আছে কিনা জানি না)। স্থানীয় জনসাধারণ এই মৃতদেহগুলি রায় চৌধুরীর পরিবারের বলে শনাক্ত করেন। গভীর রাত্রিতে প্রার্থনা সভার পর লামচর। চৌধুরীবড়ি বটগাছের পূর্ব দিকের খোলা জায়গায় শবদেহগুলি সৎকার করা হয়।
নারায়ণপুরের জমিদার সুরেন্দ্রনাথের কাছারিবাড়ি আক্রমণ : কাশেমের ফৌজ ‘মালাউনের রক্ত চাই’ ধ্বনি দিতে দিতে সুরেন্দ্রনাথবাবুর কাছারিবাড়ি আক্রমণ করল। ওই বাড়িতে সুরেন্দ্রনাথবাবু তার ভাই নগেন্দ্রনাথ বসু ও কতিপয় কর্মচারী বাস করছিলেন। তার কাছে একটি বন্দুক ও কিছু কার্তুজ ছিল। আক্রান্ত হয়ে তিনি বন্দুক হাতে আক্রমণের মোকাবিলা করেন। কাজ শেষ হলে মুসলমানরা দূর থেকে লক্ষ্য করে মাছ ধরার শানিত লৌহ টেটা ছুঁড়তে থাকে। তিনি ক্ষতবিক্ষত দেহে ধরাশায়ী হলে আততায়ীরা তার ওপর অকথ্য অত্যাচার করে অর্ধমৃত অবস্থায় জলন্ত আগুনে নিক্ষেপ করে যতক্ষণ না তার প্রাণ বায়ু নিঃশেষ হয় ততক্ষণ বাঁশ দিয়া চেপে ধরে সুরেন্দ্রবাবুকে হত্যা করে। তার ভাই এবং হিন্দু কর্মচারীদের নির্মমভাবে বর্বর মুসলমানরা হত্য করে।
চিত্ত দত্তরায়ের আত্মাহুতি : শায়েস্তানগরের চিত্ত দওরায়ের বাড়ি কয়েক হাজার মুসলমানের দ্বারা আক্রান্ত হলে তিনি তার বৃদ্ধ মা ও সন্তানদের নিজের বন্দুকের গুলিতে হত্যা করে নিজেও গুলিতে আত্মহত্যা করেন। গুলি না থাকায় তার স্ত্রী ও একটি শিশু সন্তান রক্ষা পায়।
গোপাইবাগের দাসদের বাড়ি : কয়েক হাজার মুসলমান এই বাড়ি আক্রমণ করে ১৯ জন পুরুষকে নির্মমভাবে হত্যা করে। অর্ধমৃত পুরষদের দেহে আগুন ধরিয়ে দেয়। মহিলাদের ওপর চলে পাশবিক অত্যাচার।
নোয়াখালি চৌধুরী বাড়ি :কয়েক হাজার জেহাদি মুসলমান আক্রমণ করে পুরুষদের নির্মমভাবে হত্যা করে। মহিলাদের ওপর চলে পাশবিক অত্যাচার। বাড়ির যুবতীকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। বর্বর মুসলমানরা মাটিতে গর্ত করে মৃতদেহগুলি গর্তে ফেলে। কিছু জীবন্ত মানুষকে ওই গর্তে ফেলে মাটিচাপা দেয়। ওই বাড়ির প্রভুভক্ত কুকুরটি কবরের ওপর পড়ে অনাহারে দিন যাপন করছিল। গান্ধীজী ও তার সঙ্গীরা পরিদর্শনে গেলে কুকুরটি কয়েকবার গান্ধীজীর পায়ের নিকট গড়াগড়ি খেতে আরম্ভ করে, কিন্তু কেউ এর তাৎপর্য বুঝতে পারেনি। তারপরও কুকুরটি হিন্দু মহাসভা নেতা নির্মল চন্দ্র চ্যাটার্জির (সিপিএম নেতা সোমনাথ চ্যাটার্জির পিতা) ধুতি কমড়ে ধরে তাকে টানতে টানতে গর্তের নিকট নিয়ে গেলে তিনি স্থানীয় লোকদের থেকে জানতে পারেন ওই গর্তের মৃতদেহ এবং কিছু হিন্দুকে জ্যান্ত কবর দেওয়া হয়েছে। পরে ওই গর্ত উন্মোচন করে মৃতদেহগুলি গান্ধীজী এবং তার সঙ্গীরা দেখতে পান। নির্মল চ্যাটার্জি ওই প্রভুভক্ত কুকুরটিকে একটি খাঁচায় করে ট্রেনযোগে কলকাতায় আনেন এবং তার বাড়িতে অতি যত্ন সহকারে আমৃত্যু প্রতিপালন করেন।
গোবিন্দপুর গ্রামের পৈশাচিক কাণ্ড : যশোদা পাল ও ভারত ভুইয়ার বাড়িতে পুরুষদের হাত-পা বেঁধে জ্বলন্ত আগুনে নিক্ষেপ করে বাঁশ দিয়ে চেপে জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হয়। সদ্য স্বামী ও পিতৃহারা মহিলাদের ওপর পাশবিক অত্যাচার করা হয়। তাদেরকে মাটিতে চিৎ করে ফেলে পায়ের পুড়ো আঙুল। দিয়ে সিঁথির সিঁদুর মুছে দেওয়া হয়।
নন্দীগ্রামের ঘটনা :ওই গ্রামের বৃদ্ধ কুঞ্জ কর্মকার ও তার পরিবারের কয়েকজন পুরুষ সদস্যকে হাত-পা তার দিয়ে বেঁধে অগ্নিকুণ্ডে নিক্ষেপ করে বাঁশ দিয়ে চেপে ধরে জীবন্ত পোড়ানো হচ্ছিল, তার সঙ্গে চলছিল মহিলাদের ওপর পাশবিক অত্যাচার। ওই গ্রামেরই শিক্ষকের স্ত্রী স্বামীকে হত্যা করার সময় বাধা দিলে স্ত্রীকে চিৎ করে মাটিতে শুইয়ে তার বুকের ওপর স্বামীকে বসিয়ে নৃশংসভাবে ছুরি বল্লম দা দিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করা হলো। সঙ্গে উল্লাসিত মুসলমান জেহাদিরা আল্লাহু আকবার, মালাউনের রক্ত চাই, পাকিস্তান জিন্দাবাদ ধ্বনি দিচ্ছিল। এভাবে সমস্ত গ্রামের হিন্দু বাড়িগুলো ধ্বংস করা হয়েছিল।
দালাল বাজারে জমিদার বাড়ি ধ্বংস : নিরাপদ স্থানে পৌঁছে দেওয়ার নাম করে। জেহাদিরা হিন্দুদের একত্রিত করে, সোনাদানা কেড়ে নিয়ে, বাড়ি ঘরের জিনিসপত্র লুঠ করে পুরুষদের নৃশংসভাবে হত্যা করে আর যুবতীদের অপহরণ করে নিয়ে যায় এবং মহিলাদের ধর্ষণ করা হয়। চট্টগ্রামের জনপ্রিয় শিক্ষক অক্ষয় চক্রবর্তীকে কয়েকজন মুসলমান ছাত্র প্রাণ রক্ষার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ইসলামে দীক্ষিত করে। তিনি তার ভাইকে পত্র দিয়ে জনালেন আমরা সকলে প্রাণ বাঁচানোর জন্য ইসলামে ধর্মান্তরিত হইয়াছি। চিঠির প্রথমে তিনি অভ্যাসবশত শ্রীশ্রী দুর্গা সহায় লেখার অপরাধে তারই মুসলমান ছাত্ররা তাকে ছুরি দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করে। করপাড়ার নোয়াখালি হিন্দু নিধনের প্রধান সেনাপতি গোলম সারওয়ারের শিক্ষক হরিশ পণ্ডিত নৃশংস ভাবে নিহত হন তারই প্ররোচনায়।
প্রতিবেদকের হিসেব মতো নিদারুণ ভয়ে ওই সময় ১৫০ থেকে ২০০ জন আসন্নপ্রসবা মহিলার গর্ভপাত হয়ে যায়। তারা অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ফলে মৃত্যুমুখে পতিত হন। ওই সময়কার অসংখ্য তথ্য এই প্রতিবেদকের নিকট আছে। কারণ ওই সময় আমি স্বেচ্ছাসেবকের কাজে ওই অঞ্চলে। গিয়েছিলাম। ১৯৪৬ সালের অক্টোবর-নভেম্বর মাসের বর্বর মুসলমান অত্যাচারের সময় গঠিত Noakhali rescue, relief and rehabilitation committee এই দাঙ্গার কারণ এবং অত্যাচারের বিস্তারিত বিবরণ দিয়ে লিখিত পুস্তিকা আকারে Noakhali Tipperah Tragedy-র মুখবন্ধ কংগ্রেস সভাপতি আচার্য জেবি কৃপালিনীর স্ত্রী উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শ্রীমতী সুচেতা কৃপালিনী লিখে দিয়েছিলেন। সেই বই এখন দুপ্রাপ্য। ইচ্ছা করেই দেশবিভাগের খলনায়করা সেই বইয়ের সব কপি ধ্বংস করে দিয়েছে।
নোয়াখালির হিন্দু নিধনের পর গান্ধীজী যখন নোয়াখালির শ্রীরামপুর গ্রামে অবস্থান করছিলেন তখন জওহরলাল নেহরু ও আচার্য কৃপালনী সেখানে গিয়ে দেশভগের সম্মতি আদায় করে অনেন (বিস্তারিত জানতে হলে আমার লেথা কথিত কাহিনি পড়ে দেখতে পারেন)। নোয়াখালি থেকে ফিরে জওহরলাল। নেহরু ডাঃ বিধানচন্দ্র রায়ের ওয়েলিংটন স্কোয়ারের বাড়িতে অবস্থান করছিলেন, তখন নোয়াখালি সম্মেলনীর এক প্রতিনিধিদল তার সঙ্গে দেখা করে একটা স্মারকলিপি দিতে গেলে তিনি তা গ্রহণ করতে অস্বীকার করেন এবং এই স্মারকলিপিতে সুরাবর্দিকে দিতে বলেন। ভগ্ন মনোরথ হয়ে তারা ফিরে আসেন। লক্ষ্মীপুজোর রাতে নোয়াখালির এই হিন্দু নিধনের কথা মনে পড়লে আজও আমি কেঁপে উঠি।
রবীন্দ্রনাথ দত্ত

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.