প্রকল্প মঞ্জুরের ৪৭ বছর পরও কোলাঘাট-পাঁশকুড়া ব্লকের ‘দেনান-দেহাটী জল নিকাশী প্রকল্পে’র পূর্ণাঙ্গ রূপায়ণ হলো না। অবিলম্বে প্রকল্পটি পূর্ণাঙ্গ রূপায়নের দাবিতে ১২ অক্টোবর কলকাতা অভিযানের ডাক দিয়েছে কৃষক সংগ্রাম পরিষদ। ওই কর্মসূচির মাধ্যমে রাজ্যের রাজ্যপাল, মুখ্যমন্ত্রী ও সেচমন্ত্রীর কাছে ডেপুটেশন ও স্মারকলিপি পেশ করা হবে বলে জানান কৃষক সংগ্রাম পরিষদের সম্পাদক নারায়ণ চন্দ্র নায়ক।
পূর্ব মেদিনীপুর জেলার তমলুক মহকুমার কোলাঘাট ও পাঁশকুড়া ব্লকের প্রায় শতাধিক মৌজার জলসেচ ও জল নিকাশী হয় ৬ নম্বর জাতীয় সড়কের পার্শ্ববর্তী দেহাটী খালের মাধ্যমে। প্রায় ২০ কিমি দীর্ঘ এই খালটি কাঁসাই নদীর পাঁশকুড়া পুরাতন বাজার এলাকা থেকে বেরিয়ে কোলাঘাটের পুরাতন বাজারের কাছে রূপনারায়ণে পড়েছে। গুরুত্বপূর্ণ এই খালের বরদাবাড় থেকে কোলাঘাট পর্যন্ত অংশটি খাল মনে হলেও তারপর বাকি অংশটি নালায় পরিণত হয়েছে। মূল খালের সাথে যুক্ত হয়েছে প্রায় ৮ কিমি দীর্ঘ টোপা, ৬ কিমি দীর্ঘ টোপা-ড্রেনেজ, সাড়ে ৫ কিমি দীর্ঘ চাপদা-গাজই খাল। দুই ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকার বর্ষার নিকাশী জল খালের বহন ক্ষমতার বাইরে চলে যাওয়ায় ফি বছর কোলাঘাট ব্লকের প্রায় ২০-২৫টি গ্রামের নিচু এলাকা জলমগ্ন হয়ে আমনচাষ, মাছ, ফুলচাষ, রাস্তা ভীষণ ক্ষতির সম্মুখীন হয়। নানাভাবে বিঘ্নিত হয় এলাকার জনজীবন। দীর্ঘদিন ধরে এই অবস্থা চলতে থাকায় এলাকার ভুক্তভোগী মানুষজন আন্দোলন নামতে বাধ্য হন। ফলস্বরূপ সেচ দপ্তর ১৯৭৫ সালে বরদাবাড় থেকে দেনান খাল নামে নতুন একটি খাল খনন করে ওই খালের মাধ্যমে দেহাটী খালের অর্ধেক অংশের জল বের করার সিদ্ধান্ত নিয়ে “দেনান-দেহাটী ড্রেনেজ স্কীম” রূপায়নের পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। এরপর দেনান খাল খনন হলেও দেহাটী খালের সাথে দেনান খালের সংযুক্তিকরণ এখনো না হওয়ায় আজও স্কিমটি
পূর্ণাঙ্গভাবে রূপায়িত হয়নি।
এমতাবস্থায় দুই ব্লক এলাকার জনসাধারণ ১৯৮৪ সালে দলমত নির্বিশেষে ‘কৃষক সংগ্রাম পরিষদ’ নামে একটি সংগঠন গড়ে তুলে ফের আন্দোলনে নামেন। সেচ ও প্রশাসনিক স্তরে ডেপুটেশন, অবস্থান, বিক্ষোভ প্রভৃতি কর্মসূচি ছাড়াও একাধিকবার জাতীয় সড়ক অবরোধ করে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে পরিষদ। কিন্তু এখনো পর্যন্ত প্রকল্পের সার্বিক রূপায়ণ না হওয়ায় সংগঠন আগামী ১২ অক্টোবর কলকাতা অভিযানের ডাক দিয়েছে।
পরিষদের সম্পাদক নারায়ণ চন্দ্র নায়ক বলেন, অতি সত্বর এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা না করা হলে সংগঠন জঙ্গি আন্দোলনের পথে যেতে বাধ্য হবে।