কিশোরী অপহরণের ঘটনায় এক যুবককে তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশ দিল ঝাড়গ্রাম আদালত। ঝাড়গ্রাম জেলার বেলিয়াবেড়া থানার অন্তর্গত মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী ১৫ বছরের এক কিশোরী মাধ্যমিক পরীক্ষার শেষে ২০১৫ সালের ৩ মার্চ বিকেল থেকে নিখোঁজ হয়ে যায়। পরিবারের লোকজন বিভিন্ন সূত্র মারফত জানতে পারে বেলিয়াবেড়া থানার অন্তর্গত তেঁতুলিয়া গ্রামের দেবাশিষ পৈড়া নামে এক যুবক বিয়ে করার উদ্দেশ্যে জোরপূর্বক ১৫ বছরের নাবালিকাকে অপহরণ করেছে। পরের দিন নাবালিকার বাবা বেলিয়াবেড়া থানায় দেবাশীষ পৈড়া ও তার মা সাবিত্রী পৈড়া এবং তাদের প্রতিবেশী স্বপন পৈড়া এই তিনজনের নামে লিখিত অভিযোগ জানায়।
লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে বেলিয়াবেড়া থানার পুলিশ ৩৬৩, ৩৬৬, ৩৪ এই ধারায় মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করে। পুলিশ তদন্তে নেমে দু’সপ্তাহ পর পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার কেশিয়াড়িতে দেবাশিষের মামার বাড়ি থেকে নাবালিকাকে উদ্ধার করে। দেবাশিষকে পাকড়াও করতে পারেনি বেলিয়াবেড়া থানার পুলিশ। দেবাশিষ তখন থেকেই ফেরার থাকে। পরে দেবাশীষ ও তার মা এবং তাদের প্রতিবেশী তিনজনেই ঝাড়গ্রাম আদালতে অগ্রিম জামিনের জন্য আবেদন জানালে জামিন মঞ্জুর করে দেয় আদালত। পাঁচ মাসের মাথায় আদালতে চার্জ সিট জমা দেয় বেলিয়াবেড়া থানার পুলিশ। ২০১৭ সাল থেকে ঝাড়গ্রামের এডিজে-১ আদালতে বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়। সাত জনের সাক্ষ্য গ্রহণের পর দেবাশিষ
পৈড়াকে দোষী সাব্যস্ত করে ঝাড়গ্রামের এডিজে-১ আদালত।
ঝাড়গ্রাম আদালতের আইনজীবী সত্যজিৎ সিনহা বলেন, “নাবালিকা অপহরণের ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত দেবাশিষ পৈড়াকে তিন বছর সশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছেন ঝাড়গ্রামের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালত প্রথম এর বিচারক জীমূতবাহন বিশ্বাস। পাশাপাশি দশ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়েছে। অনাদায়ে আরও তিন মাস জেলের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক”।
ঝাড়গ্রামের পুলিশ সুপার অরিজিৎ সিংহা বলেন, “ঝাড়গ্রাম জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে বিচারাধীন থাকা প্রতিটি মামলাকে গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে। কয়েক মাসে অনেকগুলি মামলার সাজা ঘোষণা করাতে পেরেছি আমরা। গুরুত্বপূর্ণ মামলা গুলির সাক্ষীদের আমরা বিশেষ নিরাপত্তা দিয়ে কোর্টে এলে ট্রায়ালগুলি সম্পূর্ণ করার চেষ্টা করছি। এই প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে এই সুফল পাওয়া যাচ্ছে”।