মেয়েরা সিয়াচেনে গিয়ে সেনাবাহিনীর কাজে যোগ দিলে, ছেলেদের নার্স হতে আপত্তি কোথায়? একটি মামলার শুনানিতে এই প্রশ্নই তুলল দিল্লি হাই কোর্ট। লিঙ্গসাম্য নিয়ে দেশে বিদেশে এত কথা বলা হলেও, কেন নির্দিষ্ট কোনও পেশা থেকে একটি বিশেষ লিঙ্গের মানুষকে সরিয়ে রাখা হবে, সেই প্রশ্নও তুলেছে উচ্চ আদালত।
সেনা হাসপাতালগুলিতে কেবল মহিলা নার্স রাখার ‘অসাংবিধানিক’ প্রথার বিরুদ্ধে সম্প্রতি দিল্লি হাই কোর্টে মামলা হয়। মামলার শুনানি হয় বিচারপতি সতীশচন্দ্র শর্মা এবং বিচারপতি সঞ্জীব নারুলার ডিভিশন বেঞ্চে। এই মামলায় কেন্দ্রের অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল ঐশ্বর্য ভাটি আদালতে জানান, সেনা প্রতিষ্ঠানগুলিতে শুধু মহিলা নার্স রাখার প্রথা দীর্ঘ দিন ধরে চলে আসছে। তবে আইনসভায় মহিলাদের ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে কেন্দ্র যে ৩৩ শতাংশ নারী সংরক্ষণের বিল লোকসভায় পেশ করেছে, তা-ও আদালতে উল্লেখ করেন কেন্দ্রের অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল।
তখন দুই বিচারপতির বেঞ্চ তার পর্যবেক্ষণে বলে, “এক দিকে আপনারা নারী ক্ষমতায়নের কথা বলছেন, অন্য দিকে আপনারাই বলছেন, পুরুষেরা নার্স হিসাবে কাজে যোগ দেন না।” এই প্রসঙ্গেই আদালতের সংযোজন, “এক জন মহিলা যদি সিয়াচেনে গিয়ে সেনা অফিসার হিসাবে কাজে যোগ দিতে পারেন, তবে এক জন পুরুষও হাসপাতালে কাজ করতে পারেন।” ন্যাশনাল ডিফেন্স অ্যাকাডেমিতে নারীদের যোগদানের বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট যে ছাড়পত্র দিয়েছিল, সে কথাও উল্লেখ করে দিল্লি হাই কোর্ট।
আবেদনকারী সংস্থা ‘ইন্ডিয়ান প্রফেসনাল নার্সেস অ্যাসোসিয়েশন’-এর হয়ে সওয়াল করেন আইনজীবী অমিত জর্জ। তিনি আদালতে সওয়াল করে বলেন, “এখন সব হাসপাতালে পুরুষ নার্স থাকেন। এমনকি শীর্ষ আদালতও বলেছে যে, সেনার গঠনতন্ত্রে কোনও লিঙ্গ অসাম্য থাকতে পারে না।” এই সংক্রান্ত মামলায় আগে কেন্দ্রের মতামত জানতে চেয়েছিল আদালত। মামলাটিকে ‘গুরুত্বপূর্ণ’ বলে বর্ণনা করে দিল্লি হাই কোর্ট জানিয়েছে, এটির পরবর্তী শুনানি হবে নভেম্বর মাসে।