জম্মু ও কাশ্মীরের অনন্তনাগে জঙ্গিদের সঙ্গে ভারতীয় সেনার গুলির লড়াই থেমেছে। চারদিকে এখন যেন শ্মশানের নৈঃশব্দ্য। ড্রোনের মাধ্যমে পাহাড়ি জঙ্গলে তল্লাশি চালাচ্ছে সেনা। জঙ্গল থেকে এক জনের দেহ উদ্ধার করা হয়েছে বলে খবর সেনা সূত্রে।
গত সোমবার ভোর থেকেই জঙ্গিদের খোঁজে ড্রোনে নজর রাখা হয়েছে। মনে করা হচ্ছে, জঙ্গিরা পালিয়েছে। যারা পালাতে পারেনি, তাদের দেহ জঙ্গলেই কোথাও পড়ে আছে। এক নিহত জওয়ানের দেহ উদ্ধারের চেষ্টাও চলছে। সেনা সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই জওয়ানের দেহ জঙ্গলের এক দিকে চিহ্নিত করা গিয়েছে, তবে এখনও উদ্ধার করা যায়নি। অন্য এক জঙ্গির দেহও ক্যামেরায় ধরা পড়েছে। দেহগুলি উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।
গত রবিবারেই জঙ্গিদের সঙ্গে গুলির লড়াই থেমে গিয়েছিল সেনার। ভোরের দিকে গোলাগুলি চললেও বেলা গড়ানোর পর সেনার গুলির প্রত্যুত্তরে আর জবাব আসেনি। মনে করা হচ্ছে, মুহুর্মুহু মর্টার, রকেট লঞ্চার এবং ড্রোন হামলায় জঙ্গিদের মৃত্যু হয়েছে। কেউ কেউ পালিয়েও গিয়ে থাকতে পারেন। সোমবার সকালে ড্রোনের ক্যামেরায় এক জঙ্গির দেহ দেখতে পেয়ে সেখানে অভিযান চালান কয়েক জন ভারতীয় জওয়ান। মৃতের দেহ দগ্ধ অবস্থায় পড়ে ছিল বলে জানা গিয়েছে। তার পোশাক দেখে সেনার ধারণা, সে জঙ্গি। ওই জঙ্গলে জঙ্গিদের সম্ভাব্য ডেরার কাছেই দেহটি পড়ে ছিল।
অনন্তনাগে পাহাড়ি একটি গুহায় আশ্রয় নিয়েছিল জঙ্গিরা। সেখানে মর্টার এবং রকেট লঞ্চার দিয়ে এক নাগাড়ে হামলা চালিয়েছে সেনা। ১০০ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলেছে সেই সংঘর্ষ। নামাতে হয়েছে প্যারা কমান্ডোও। সেনা সূত্রে খবর, বেশ কয়েকটি কারণে এই অভিযানে বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয়েছে তাদের। যে জঙ্গলে জঙ্গিরা আশ্রয় নিয়েছে, তা অত্যন্ত ঘন। দুর্গম পাহাড়ে বৃষ্টিও অন্যতম প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়িয়েছে। তা ছাড়া জঙ্গিরা পালিয়ে পাহাড়ে আশ্রয় নেওয়ায় সেনার কাছে এই চ্যালেঞ্জ আর বড় হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে, পাহাড়ি এবং দুর্গম অঞ্চলে লড়াই করার জন্য এই জঙ্গিদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। তা ছাড়া, তারা অনেক দিন আগেই ওই পাহাড়ে ডেরা বানিয়েছিল বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ যে গুহায় তারা আশ্রয় নিয়েছে, সেখানে দীর্ঘ দিন ধরে লড়াই চালানোর রসদও মজুত করা হয়েছে। হতে পারে, সেনাকে বিপাকে ফেলতে পরিকল্পনা করেই জঙ্গিরা গভীর জঙ্গলে ঢুকে পড়েছিল। পাহাড়ের উঁচু অংশ থেকে সেনার গতিবিধি নজরে রাখতেও তাদের সুবিধা হয়েছে।