আর্থিক প্রতারণার শিকার ঝাড়গ্রাম আদালতের দুই আইনজীবী, আধার কার্ডের বায়োমেট্রিক লক করার পরামর্শ সাইবার ক্রাইমের

আর্থিক প্রতারণার শিকার হলেন ঝাড়গ্রাম আদালতের দুই আইনজীবী। আধার কার্ডের বায়োমেট্রিক লক করে রাখার পরামর্শ সাইবার ক্রাইমের। তাদের ফিঙ্গারপ্রিন্ট ব্যবহার করে দফায় দফায় তুলে নেওয়া হয়েছে ব্যাঙ্ক অ্যসকাউন্ট থেকে মোটা অঙ্কের টাকা। টাকা তোলার কোনো এসএমএস আসেনি ফোনে। ব্যাঙ্কের পাস বই আপটুডেট করার সময় বিষয়টি নজরে আসে তাদের। তারপরেই দ্বারস্ত হয়েছেন ঝাড়গ্রাম সাইবার ক্রাইম থানায়।

ঝাড়গ্রামের এসিজেএম আদালতের সরকারি আইনজীবী পবিত্র কুমার রানা বলেন, “আমার স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার ঝাড়গ্রাম শাখায় সেভিংস অ্যাকাউন্ট রয়েছে। আমার অজান্তেই আমার সেভিংস অ্যাকাউন্ট থেকে দু’দফায় ১০ হাজার টাকা করে ২০ হাজার টাকা কেটে নেওয়া হয়েছে। পাস বই আপলোড করে দেখলাম কোনো গ্রাহক সেবা কেন্দ্র থেকে তোলা হয়েছে টাকা”। তিনি আরো জানিয়েছেন, তার ভাই আইনজীবী পরিমল রানার থেকে থেকে তিনি বিষয়টি জানতে পারেন। পরিমলবাবুর স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার ঝাড়গ্রাম শাখার অ্যাকাউন্ট থেকে পাঁচ দফায় ১০ হাজার টাকা করে ৫০ হাজার টাকা উধাও হয়ে গিয়েছে। স্টেট ব্যাঙ্কের পাশাপাশি তার পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট থেকেও ১০ হাজার টাকা উধাও হয়ে গিয়েছে।

পরিমলবাবু ব্যাঙ্কের পাস বই আপডেট করতে গিয়ে বিষয়টি জানতে পারেন। তারপরেই তিনি বাড়িতে এসে বিষয়টি জানায়। টাকা উধাও- এর বিষয়টি জানার পরেই পবিত্রবাবু তার ছেলেকে অনলাইন মারফত অ্যাকাউন্টের ব্যালেন্স চেক করতে বলে এবং তারপর তিনি জানতে পারেন তার অ্যাকাউন্ট থেকেও চলতি মাসের ১২ তারিখ ও ১৪ তারিখ দুই দফায় ১০ হাজার টাকা করে দাও (DAW) এলাকার কোনো এক গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্র (CSP)থেকে টাকা তোলা হয়েছে। তারপরেই পবিত্রবাবু শনিবার ছুটে যায় ব্যাঙ্ক ম্যানেজারের কাছে। পবিত্রবাবুর দাবি, ব্যাঙ্ক ম্যানেজার তাকে অ্যাকাউন্টের সমস্ত জমানো টাকা তুলে নেওয়ার পরামর্শ দেন। তা না হলে বাকি জমানো টাকা প্রতারকরা যে কোনো সময় তুলে নিতে পারে। সেইমতো তিনি তার জমানো বাকি টাকা ব্যাঙ্ক থেকে তুলে নেন। শনিবারই ঝাড়গ্রাম সাইবার ক্রাইম থানায় এই বিষয়ে লিখিত অভিযোগ জানান তিনি।

ঝাড়গ্রাম সাইবার ক্রাইমের দায়িত্বে থাকা ডিএসপি
(ডিএনটি) সব্যসাচী ঘোষ বলেন, “প্রতারকরা আধারের বায়োমেট্রিক ব্যবহার করে এই ধরনের প্রতারণা করছে। এখনো পর্যন্ত আটকানোর উপায় নেই আমাদের কাছে। তবে সাধারণ মানুষ নিজের আধারের বায়োমেট্রিক লক করে রেখে এই ধরনের প্রতারণা রোধ করতে পারবে। এই প্রতারণা রোধ করার হাতিয়ার একমাত্র তাদের কাছেই রয়েছে। আমরা বিভিন্ন জায়গায় সচেতনতামূলক কর্মসূচির মধ্য দিয়ে এম-আধার অ্যাপ ইন্সটল করে নিজের বায়োমেট্রিক লক করে রাখার পরামর্শ দিচ্ছি। বিশেষ করে আমরা সাধারণ মানুষকে বলতে চাই আপনি নিজের বায়োমেট্রিক লক করুন এবং নিজের পরিচিত আরও ১০ জনের বায়োমেট্রিক লক করার পদ্ধতি তাদের শিখিয়ে দিন। এবং তাদের বলুন তারাও যেন আরও ১০ জনের বায়োমেট্রিক লক করার পদ্ধতি শিখিয়ে দিয়ে তাদের আর্থিক প্রতারণার হাত থেকে রক্ষা করে। ইয়ং জেনারেশনকে বলবো তারা যেন বিশেষ করে তাদের বাড়ির বয়স্ক লোকেদের আধার কার্ডের বায়োমেট্রিক লক করে রাখে। একমাত্র বায়োমেট্রিক লক করার মধ্য দিয়েই এই প্রতারণা রোধ করা সম্ভব”।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.