কলকাতা পুরসভার ১৯৮৪ সালের যে আইন রয়েছে সেই আইন অনুযায়ী ৪৭ এর বি নম্বর ধারার আইন অনুযায়ী কলকাতা পুরসভাতে অনুষ্ঠিত কোনও সভাতে উপস্থিত থাকা কোনও মেম্বার বা নির্বাচিত প্রতিনিধি কোন কোন ধরনের কর্পোরেশন আইন বহির্ভূত কাজ করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যায় তা বলা রয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে সবার মধ্যে হাতাহাতি বা মারামারি করলে চেয়ারপারসন ব্যবস্থা নিতে পারেন। কোনও কাগজপত্র ছুঁড়ে দিলে তাতেও ব্যবস্থা নিতে পারেন। সভা অনুষ্ঠিত হতে বাধা দান করলে বা বিশৃঙ্খলা তৈরি করলে তাতেও চেয়ারম্যান বা চেয়ারপারসন যিনি থাকবেন তিনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেন।
৪৭ এর দুই নম্বর ধারায় বলা হয়েছে কোনও মেম্বার যখন বক্তব্য পেশ করছেন তার বক্তব্যে বাধা দান এবং সভাকক্ষের মধ্যে সভা চলাকালীন শব্দ এবং বিশৃঙ্খলা তৈরি করা ব্যক্তির বিরুদ্ধে পুরসভা ব্যবস্থা নিতে পারে। সেই ধারাই এখানে প্রয়োগ করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
সর্বোচ্চ দুটি অধিবেশনে সাসপেন্ড হতে পারেন ওই মেম্বাররা।
চেয়ারপারসন মালা রায় যেহেতু দক্ষিণ কলকাতার সংসদও বটে তিনি রবিবার দিল্লির উদ্দেশ্যে রওনা দিয়ে দিয়েছেন। সে কারণেই শনিবারই পুরসভাতে বসে ওই দুটি চিঠি তিনি সংশ্লিষ্ট দুই ব্যক্তি অর্থাৎ তৃণমূল কংগ্রেসের কাউন্সিলর অসীম বোস এবং বিজেপির কাউন্সিলর সজল ঘোষের উদ্দেশ্যে পাঠিয়ে দিয়েছেন।
সূত্রের খবর বিরোধীরা তাদের জায়গা থেকে প্রতিবাদ করবেই কিন্তু তাদের পাতা ফাঁদে কেন আমরা শাসক দল পা গলাবো। এই নিয়েই সোচ্চার অধিকাংশ কাউন্সিলর। সামনে মুখ না খুললেও বেশিরভাগ তৃণমূল কংগ্রেসের কাউন্সিলরাই বলছেন এই ধরনের ঘটনা বরদাস্ত করা যায় না। অনেক মেয়র পরিষদ যারা গতকাল ঘটনার সময় উপস্থিত ছিলেন তারাও এই ঘটনায় বেশ ক্ষুব্ধ বলেই জানা গিয়েছে।
প্রসঙ্গত কলকাতা পুরসভায় বেনজির ধুন্ধুমার। শাসক ও বিরোধী কাউন্সিলরদের হাতাহাতিতে রণক্ষেত্র হয় সভাকক্ষ। চেয়ারপার্সনের মন্তব্যে বিরোধিতার জেরে এই ঘটনা ঘটে। মারধর, হুলস্থুলে বানচাল হয় অধিবেশন। কক্ষের মধ্যেই কলার ধরে মার, ঘাড়ধাক্কার ঘটনা ঘটে। মেয়রের হাতজোড়, অনুনয়-বিনয়েও হয়নি কাজ। ঘটনায় নিন্দা হয় সবমহলে।
এমনকী মারধর, হুলুস্থুলে বানচাল হয়ে যায় অধিবেশন। শনিবার পুরসভার সাপ্তাহিক অধিবেশনে প্রথমে বিজেপি কাউন্সিলর সজল ঘোষের সঙ্গে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন তৃণমূল কাউন্সিলর অসীম বসু। উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হতে হতে হঠাৎই দুই কাউন্সিলর মারামারিতে জড়িয়ে পড়েন। তৃণমূল কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে ধাক্কা দেওয়ার অভিযোগ তোলেন সজল।
সজল ঘোষের বক্তব্য, আমাদের উপর প্রথম আক্রমণ হয়। মেয়র ও চেয়ারপার্সনের সামনে হামলা হয়। সব দেখেও চুপ ছিলেন চেয়ারপার্সন। তৃণমূল কাউন্সিলর অসীম বসুর নেতৃত্বে আক্রমণ হয়। সজল ঘোষ বলেন, ‘অসীম বসু আগে বিজেপি করত। এখন নতুন তৃণমূল প্রমাণ করতে হাতাহাতি এবং অশ্লীল গালাগালি দিচ্ছেন। বাংলায় গণতন্ত্র কোথায়? ধাক্কাধাক্কি করছেন, কলার ধরেছেন। মেয়র বসে দেখছেন। এটা কী প্রহসন চলছে। আমরা তো দুজন। ওরা তো ২০ জন। কার কাছে অভিযোগ জানাব? সারা বাংলা ঘটনাটা দেখেছে।’
অসীম বসুর কথায়, ‘সজলও কাউন্সিলর। হতে পারে অন্য দলের। সকলেরই পরিবার আছে। কাউন্সিরলরা অন্যগ্রহ থেকে আসেনি। এভাবে চোর চোর বলে মেলাইন করছে। ও কি সাধু? এভাবে চোর বললে এরকম প্রতিক্রিয়া বারবার হবে। কোনও ধাক্কা-মারামারি হয়নি। কেবল প্রতিক্রিয়া মাত্র।সজল ভালো ছেলে, ছোট ভাই। কিন্তু উক্তত্য করে।’