চলতি এশিয়া কাপের (Asia Cup 2023) সুপার ফোর পর্যায়ের শেষ ম্য়াচ হয়ে গেল কলম্বোর আর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে (R Premadasa Stadium, Colombo)। ভারত মুখোমুখি হয়েছিল বাংলাদেশের (IND vs BAN)। একেবারে নিয়মরক্ষার ম্যাচ ছিল। দেখতে গেলে জেতা-হারায় কোনও দলেরই বিন্দুমাত্র ফারাক পড়ত না। পদ্মাপাড়ের ক্রিকেটীয় দেশ আগেই ছিটকে গিয়েছে টুর্নামেন্ট থেকে। অন্য়দিকে ভারত ফাইনালের টিকিট সংরক্ষণ করে ফেলেছে। আগামী রবিবার কাপযুদ্ধের খেতাবি লড়াইয়ে রোহিত শর্মারা (Rohit Sharma) মুখোমুখি হবেন দ্বীপরাষ্ট্রের। আর তার আগে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে এই ম্য়াচ ছিল রিজার্ভ বেঞ্চ পরখের ও ঘুরিয়ে ফিরিয়ে খেলানোর। সেই খেলায় লড়াই করেও মুখরক্ষা হল না ভারতের। বাংলাদেশের ২৬৫ রানের জবাবে ভারত গুটিয়ে গেল ২৫৯ রানে। ৬ রানে জিতল সাকিব আল হাসানের টিম। এশিয়া কাপে এটাই বাংলাদেশের একমাত্র জয়। অন্তত ভারতকে হারানোর গর্ব নিয়েই দেশে ফিরবেন সাকিবরা।
ভারত এদিন দলগঠনে প্রত্যাশিত পরিবর্তন এনেছিল। পাঁচজনকে বদলে দেওয়া হয়। বিরাট কোহলি, হার্দিক পাণ্ডিয়া, মহম্মদ সিরাজ ও কুলদীপ যাদবকে ফাইনালের আগে বিশ্রাম দিয়েছিল টিম ম্য়ানেজমেন্ট। তাঁদের জায়গায় খেললেন সূর্যকুমার যাদব, তিলক বর্মা, শার্দূল ঠাকুর, মহম্মদ শামি ও প্রসিদ্ধ কৃষ্ণা। এদিন টস জিতে রোহিত প্রথমে ব্য়াট করার সিদ্ধান্ত নেন। বাংলাদেশ আট উইকেটে ২৬৫ রান তোলে। বিশ্বের এক নম্বর অলরাউন্ডার ও দলের অধিনায়ক সাকিব ৮৫ বলে করেছেন ৮০ রান। তহিদ হৃদয় করেছেন ৮১ বলে ৫৪ রান। নাসুম আহমেদের ব্য়াট থেকে এসছে ৪৫ বলে ৪৪ রান। ভারতের হয়ে শার্দূল ঠাকুর তিনটি ও শামি দু’টি করে উইকেট নেন। একটি করে উইকেট পেয়েছেন প্রসিদ্ধ, অক্ষর প্য়াটেল ও রবীন্দ্র জাদেজা।
২৬৫ রান তাড়া করে ভারত জিতে যাবে এমনটাই মনে করেছিলেন ভারতীয় ফ্যানরা। কিন্তু ভারত বেশ কিছু ভুল করে ফেলল। যার জেরে আর এই ম্যাচ জেতা হল না। ভারত রান তাড়া করতে নেমে ২ ওভারে ১৩ রান করতে গিয়ে এক উইকেট হারিয়ে ফেলে। ক্য়াপ্টেন রোহিত শর্মা ২ বল খেলে কোনও রান না করেই ক্যাচ আউট হয়ে যান। অত্যন্ত একটি খারাপ শট নিয়ে, অভিষেককারী জোরে বোলার তানজিম হাসান শাকিবকে জীবনের প্রথম উইকেটটি উপহার দিলেন। ওয়াইড ডেলিভারিতে রোহিত কভার পয়েন্টের উপর দিয়ে তুলে মারতে গিয়ে আনামুল হকের হাতে লোপ্পা ক্যাচ তুলে দেন। শুভমনকে সঙ্গ দিতে আসেন ভারতের অভিষেককারী তিলক বর্মা। তাঁর আউট নিয়েও কিছু বলার নেই। অফস্টাম্প গার্ড না করেই তিনি, তানজিমের বল জাজ করতে গিয়ে ক্লিন বোল্ড হয়ে যান। তিন ওভারের মধ্যে ১৭ রানে দুই উইকেট চলে যায় ভারতের।
এরপর শুরু হয় শুধুই শুভমন শো। তাঁকে সঙ্গ দিতে এসে মিডল অর্ডারে কেএল রাহুল (১৯) ও ঈশান কিশান (৫) কার্যত ডুবিয়ে দিয়ে যান। এরপর ভরসা ছিলেন সূর্যকুমার যাদব ও রবীন্দ্র জাদেজা। টি-টোয়েন্টি ফরম্য়াটে বিশ্বের এক নম্বর ব্য়াটার এখনও ওয়ানডে ক্রিকেট শিখছেন। সূর্য করেন ৩৪ বলে ২৬টি রান। রবীন্দ্র জাদেজাও চূড়ান্ত হতাশ করেন। মাত্র ৭ রান যোগ করেন তিনি। এরপর আটে নেমে শুভমনের সঙ্গে জুটি বাঁধেন অক্ষর। একসময়ে মনে হচ্ছিল তাঁরা ম্য়াচ বার করে দেবেন। ৩৬ বলে ৩৯ রানের যুগলবন্দি করেন তাঁরা। তবে শুভমন ৪৪ ওভারে এসে আউট হন। ১৩৩ বলে ঝকঝকে ১২১ রানের ইনিংস খেলেন শুভমন। হাঁকান আটটি চার ও পাঁচটি ছয়। তবে পঞ্জাব পুত্তরের দেশের জার্সিতে পঞ্চম একদিনের আন্তর্জাতিক ওয়ানডে সেঞ্চুরি কাজে এল না। শুভমন ফেরার পর শার্দূল-অক্ষর চেষ্টা করেছিলেন। তবে শার্দূল ১১ করে ফেরেন। অক্ষরের দুরন্ত লড়াই শেষ হয় ৩৪ বলে ৪২ রানের ইনিংসে। ভারতের অতি বড় ভক্তও এরপর আশা করেননি যে, শামি-প্রসিদ্ধ ম্য়াচ জেতাবেন।