গত একসপ্তাহে আপেল ব্যবসার সঙ্গে জড়িত অন্তত ৭ জন প্রাণ হারিয়েছেন। খুব বেশি কিছু আপনার এসে যায়না। আপনি আপেল পেলেই হল। না পেলেই দেশের প্রধানমন্ত্রী কে শাপশাপান্ত করবেন।
তা করুন! তবে আপেল নিয়ে কিছু আপলামিও(আঁতলামি হলে আপলামিও চলে বৈকি) জেনে রাখুন। যেমন হিমাচলে আপেল হলেও দেশের মোট আপেলের চাহিদার প্রায় ৭০% জোগান দেয় জম্মু কাশ্মীর। জম্মু কাশ্মীর প্রতিবছর প্রায় ৮০০০ কোটি টাকা আপেল রপ্তানি করেই রোজগার করে। সেই রাজ্যের অর্থনীতি তাই আপেলকেন্দ্রিক বললে অতুক্তি হয়না। সে রাজ্যের প্রায় ৪ লক্ষ হেক্টর জমি আপেল চাষের সঙ্গে যুক্ত।কিন্তু মজার কথা হল আপেল চাষীরা এতদিন গড়ে ৩-১৫ টাকা প্রতি কেজি দরে ফড়ে বা মধ্যস্বত্বভোগীদের বিক্রি করতে বাধ্য হতেন যা আমার আপনার কাছে গড়ে ১০০-১৫০ টাকা দরে বিক্রি হয়। মানে নেপোয় মারে দই।
চাষীদের তাহলে থাকল কি?এই মধ্যস্বত্বভোগীরা তবে কারা? কেন গিলানী, আব্দুল্লা, মুফতি, সাব্বির আহমেদদের আত্মীয়রা। আঁতে লাগল কি? ন্যাতারা ফুলে ফেঁপে উঠেছে,দেশের বাইরে নিজেদের ছেলেমেয়েদের শিক্ষার ব্যবস্থা করেছে আর অন্যের ছেলেমেয়েদের শিখিয়েছে “বুরহান ওয়ানি অমর রহে”।
ন্যাতাদের সেই আপলামি বেশ চলছিল। কিন্তু দুই গুজ্জু এসেই ঝামেলাটা পাকিয়ে দিল।কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রকের অধীন নাফেদ যারা কিনা সরাসরি আপেল কিনছে গত ১২ই আগস্ট থেকে,তারা কাশ্মিরী আপেল কে A,B,C এই তিন শ্রেণীতে শ্রেণীবদ্ধ করে আলাদা আলাদা দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে যথা ৫৪,৩৮,১৫.৭৫ টাকা। ফলস্বরূপ ৩০০০ কৃষক ডিরেক্ট বেনিফিট ট্রান্সফার প্রকল্পে তাদের প্রাপ্য পেয়ে গেছেন। গত দশদিনে ১৬০০০ ট্রাক উপত্যকা থেকে ২ লক্ষ মেট্রিকটন আপেল নিয়ে দেশের বিভিন্নপ্রান্তে পৌঁছে গেছেন!অতএব পুকিস্থানী জঙ্গিদের টনক নড়েছে। সাধারণ কাশ্মিরীদের হাতে আপেল রপ্তানির টাকা পৌছালে একে ৪৭ কে ধরবে?অতএব ট্রাক পোড়াও। ড্রাইভারদের মারো!হত্যা, সন্ত্রাসের সেই চেনা ছক। ৩৭০ ধারা বাতিল এবং কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রকের সরাসরি হস্তক্ষেপের সুবিধাটুকু সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে গেলে তারা আর আজাদ কাশ্মীরের দাবিতে সরব হবেন না-রক্তপিপাসুর দল তা বেশ ভালই বোঝেন।
উন্নয়নবিরোধী,দেশবিরোধী এই হত্যার রাজনীতিকে ঘৃণা করুন।আজকের দিনটা ভীষণ প্রাসঙ্গিক। কারণ ১৯৪৭ এর আজকের দিনটাতেই কাশ্মীরের রাজা হরি সিং ভারতভুক্তিপত্রে সাক্ষর করেছিলেন।সেই ভারতভুক্তিতেও ছিলেন আর এক গুজ্জু সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল!