তিনি ক্রিকেটের বিগ্রহ। ভারতের প্রাক্তন ক্রিকেট অধিনায়কও বটে। তিন বছর ধরে ভারতের সর্বোচ্চ ক্রিকেট প্রশাসকের পদে থেকেছেন। কিন্তু ফুটবল তাঁর হৃদয়ের খুব কাছাকাছি। মাদ্রিদে লা লিগার সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের মউ সাক্ষর অনুষ্ঠানে নিজেই বলে দিলেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়।
বস্তুত, বৃহস্পতিবার মাদ্রিদের মঞ্চে সৌরভ ব্যাট চালিয়েছেন ফুটবলের হয়ে। আসলে কলকাতার ফুটবলের হয়ে। তিনিই একমাত্র বললেন, পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা সার্থক ভাবে অনূর্ধ্ব ১৭ ফুটবল বিশ্বকাপ আয়োজন করেছে। যা লা লিগার লোকজন চেনেন। তাঁরা বোঝেন।
বৈঠকের পরেও সৌরভ আনন্দবাজার অনলাইনকে বলছিলেন, “এরা অন্য লেভেলের! আমি তো তিন বছর এদের খুব কাছ থেকে দেখেছি।’’ সৌরভ বলতে চাইছিলেন লা লিগার ক্লাব অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের সঙ্গে কলকাতার ক্লাব অ্যাটলেটিকো ডি কলকাতার সঙ্গে তাঁর জড়িত থাকার কথা। সঙ্গে খানিক আক্ষেপ করে বললেন, ‘‘তবে ওই লেভেলে যেতে গেলে তো ফুটবলটাও ওই লেভেলে খেলতে হবে!’’
তবে মঞ্চের নীচে যা-ই বলুন, মঞ্চের উপরে সৌরভ কলকাতার ফুটবলের সাক্ষাৎ ব্র্যান্ডদূতের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন। সৌরভ বলেন, ‘‘আমি সারা জীবন ক্রিকেট খেললেও আমার বড় হওয়ার সঙ্গে ওতপ্রোতোভাবে জড়িয়ে রয়েছে ফুটবল।’’ পাশাপাশিই সৌরভ বুঝিয়ে দেন, কলকাতায় ফুটবলের আগ্নেয়গিরি রয়েছে। লা লিগার প্রেসিডেন্টের উদ্দেশে দাদা বলেন, ‘‘আমি আশা করব স্প্যানিশ ফুটবল কলকাতায় মাইলফলক তৈরি করবে। সেখানে শুধু সরকারি সুযোগ সুবিধা নয়, কলকাতার তরুণ প্রজন্ম, সমর্থকেরা ফুটবলকে জনপ্রিয় করে তুলেছেন।’’
লা লিগা নিয়ে একটি স্বল্পদৈর্ঘ্যের তথ্যচিত্র দেখানো হয় বৈঠকে। লা লিগার প্রেসিডেন্ট তাভেজ় এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তৃতার পরে ফের হাতে মাইক তুলে নেন সৌরভ। কার্যত বাংলার ফুটবলের অলিখিত দূত হয়েই তাভেজ়কে বলেন, ‘‘আপনারা অ্যাকাডেমি করলে সেখানকার ছেলেরা তিন প্রধান ক্লাবের হয়ে লিগে খেলতে পারবে।’’ যে কথার মধ্যে ময়দানের জন্য তাঁর আর্তি ছিল স্পষ্ট।
স্প্যানিশ ফুটবলের ঐতিহ্যেরও তারিফ করেন সৌরভ। তাঁর কথায়, ‘‘এই দেশই মেসিকে তৈরি করেছে। এই দেশের মাটি থেকেই উঠে এসেছেন ইনিয়েস্তা, জাভি, সার্জিও রামোস, পিকের মতো তারকারা।’’ দিদির সঙ্গে মাদ্রিদ সফরে আসলে ফুটবলের মক্কার আক্ষরিক ‘দাদা’ হয়ে উঠলেন সৌরভ।
দিদি আর দাদার বোঝাপড়ায় কলকাতা ফুটবলের জন্য একটা সম্ভাবনার দরজা খুলল কি সত্যিই?