নরেন্দ্র মোদী যখন থেকে মেইক ইন্ডিয়া প্রকল্প শুরু করেন তখন থেকেই ভারতীয় পণ্যের ব্র্যান্ড ভ্যালু বাড়ানোর চেষ্টা চালিয়ে গেছেন

যারা ব্যবসা বাণিজ্য সম্পর্কে অবগত আছেন তারা একটা কথা ভালো করে জানেন যে ব্যবসার দুনিয়ায় ব্র্যান্ড ভ্যালু বলে একটা জিনিস আছে যা বিকোয়। যেমন একটা সময়ে ‘মেইড ইন জাপান’ শুনলেই আমরা কোন জিনিস কিনতে চাইতাম। ট্যাপ রেকর্ডার, ঘড়ি, ক্যামেরা ইত্যাদি শুধুমাত্র ‘মেইড ইন জাপান’ লেখা দেখে লোকে কিনে নিতেন। মার্কেটিঙের দুনিয়ায় এই ব্র্যান্ড ভ্যালু থাকাটা খুবই জরুরি। মনে করা যাক আমি একটি মোবাইল ফোন কিনব। এখন এই ফোনটার সমস্ত কিছু কেনার আগেই ব্যবহার করে দেখার তো সুযোগ নেই। তাই আমরা ভরসা করি ব্র্যান্ডকে। এই ধরণের ব্র্যান্ড ভ্যালু কোন কোম্পানির হতে পারে। আবার অনেক ক্ষেত্রে একটি গোটা দেশেরও হয়ে থাকে।

নরেন্দ্র মোদী যখন থেকে মেইক ইন্ডিয়া প্রকল্প শুরু করেন তখন থেকেই ভারতীয় পণ্যের ব্র্যান্ড ভ্যালু বাড়ানোর চেষ্টা চালিয়ে গেছেন। এই যে চন্দ্রযান চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে ল্যান্ড করল এতেও কিন্তু ভারতের ব্র্যান্ড ভ্যালু বেড়েছে। দুনিয়াকে দেখাতে হবে যে ভারতে টেকনিক্যাল এক্সেলেন্স রয়েছে। দেখাতে হবে যে উন্নত মানের প্রযুক্তি আছে বলেই আমাদের প্রডাক্টের গুণগত মান অনেক ভালো। এই ব্র্যান্ড ভ্যালু একদিনে তৈরি হয় না। দীর্ঘদিনের প্রচেষ্টায় যখন কোন এক দেশ তার ব্র্যান্ড ভ্যালুকে বিশ্বের কাছে গ্রহণযোগ্য করতে তুলতে পারে তখনই এই দেশের রপ্তানি বাণিজ্যের প্রসার ঘটে। এই G20 সামিটে ভারত সরকার যে প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে তা এখন সারা পৃথিবীর লোক দেখছে। এই প্রদর্শনীতে বিশেষ করে ডিজিটাল ইন্ডিয়া মিশনের সাফল্যকে দেখানো হচ্ছে ব্যাপক ভাবে। কারণ এই জিনিসের বিদেশে বিশাল মার্কেট আছে। ইতিমধ্যেই বিশ্বের আঠারোটি দেশে শীঘ্রই চালু হতে চলেছে ইউপিআই ট্রানজেকশন তাও ভারতীয় কারেন্সিতে। G20 সামিটে যেখানে সারা বিশ্বের কাছে ভারতের প্রতিচ্ছবি তুলে ধরা হচ্ছে সেখানে আমাদের দারিদ্র্যের জয়গাঁথা কীর্তন করার চাইতে বরং ভারতের সামর্থ্যের প্রচার করাটা আবশ্যক দুটি কারণে। ভারতীয় পণ্যের চাহিদা বাড়ানো এবং বৈদেশিক বিনিয়োগ আকৃষ্ট করা। ইতিমধ্যেই বেশ কিছু মার্কিন কোম্পানি চীন থেকে তাদের ব্যবসা গুটিয়ে ভারতে আসতে চাইছে। চীনে এখন আর আগের মতো ব্যবসার সুযোগ নেই।

একটা সময় ছিল যখন এদেশের কিছু চিত্র নির্মাতারা দেশের দারিদ্র্যকে বিদেশে প্রচার করতেন। আর বিদেশিরাও এখানে আসলে পরে খুঁজে খুঁজে কোথায় দারিদ্র্য আছে তা বের করে প্রচার চালাতো। বিশেষত ভারতের দারিদ্র্যের প্রচার করলে বিদেশীরা বেশ হাততালি দিত এবং পুরস্কার টুরস্কার দিয়ে দিত। তবে দিনকাল পাল্টেছে। এখন ভারতে ব্র্যান্ড ভ্যালু বাড়াতে হবে। বিশ্বের কাছে এদেশের সামর্থ্যকে তুলে ধরতে হবে। তবেই আমাদের রপ্তানি বাণিজ্যের বিকাশ ঘটবে। বৈদেশিক বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাবে। দারিদ্র্য দূরীকরণের এছাড়া অন্য কোন উপায় নেই।

পরিশেষে বলে রাখি যে রবিশকুমারের ভিডিও দেখে সেই জ্ঞান এখানে এসে ঝাড়তে চেষ্টা করবেন না। আমি রবিশকুমারের ল্যাদা সাফ করার ঠিকা নেই নাই।

রজত কান্তি দাস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.