হরিদেবপুরকাণ্ডে অভিযোগের আঙুল উঠেছে হোমের মালিকের বিরুদ্ধে। হোম মালিক জাবেশ দত্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিস। এখন প্রশ্ন উঠছে, কে এই জাবেশ দত্ত? সূত্রের খবর, আদতে আসানসোলের ঝাড়খন্ড সীমান্ত লাগোয়ো একটা গ্রামের বাসিন্দা। বেশির ভাগ আত্মীয় পরিজন থাকেন ঝাড়খন্ডে। আশির দশকে কলকাতার হরিদেবপুর অঞ্চলে আসেন জাবেশ। প্রথমে ভাড়া বাড়িতে থাকতেন। একটা ভাড়া বাড়িতেই কিছু দৃষ্টিহীন, অনাথ বাচ্চাদের এনে রাখতে শুরু করে।
ধীরে ধীরে একটি নির্দিষ্ট কমিউনিটির সাহায্য নিয়ে আবাসিক স্কুলের পসার বাড়াতে শুরু করে। অভিযোগ সেই আর্থিক অনুদান থেকেই নিজেও নিজের সম্পত্তি বৃদ্ধি করতে শুরু করেন জাবেশ দত্ত। আগে ভাড়া বাড়িতে থাকলেও, হরিদেবপুরের বকুলবিথিতে কয়েক কোটি টাকার মূল্যের বাড়ি রয়েছে জাবেশ দত্তের। রয়েছে বেশ কয়েকটি দামী গাড়িও। দুই ছেলের মধ্যে এক ছেলের দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে। এক ছেলে সিকিমে থাকেন। স্ত্রী ও এক পুত্রবধূ স্কুল শিক্ষিকা। সূত্রের খবর, মূলত বেশির ভাগ অনাথ দৃষ্টিহীনদের অন্য রাজ্য থেকে এনে এই আবাসিক স্কুলে রাখা হত বলে জানতে পেরেছে পুলিস।
প্রসঙ্গত, কলকাতার হরিদেবপুরে এক হোমে ২ নাবালিকাকে ধর্ষণ, আর ১ জনের শ্লীলতাহানির অভিযোগ ওঠে! অভিযোগ দায়ের করা হয় শিশু সুরক্ষা কমিশনে। এই ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে হোমের মালিক, প্রিন্সিপাল ও রাঁধুনিকে। ধৃতদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ, শ্লীলতাহানি, পকসো-সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিস। স্থানীয় সূত্রে খবর, হরিদেবপুরের ওই হোমটি বেসরকারি। হোমে যারা থাকে, তারা সকলেই দৃষ্টিহীন। শুধু তাই নয়, আবাসিকদের জন্য় রয়েছে একটি স্কুলও। অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরেই ওই হোমের বিরুদ্ধে নানা বেআইনি কাজকর্ম চলছিল। নির্যাতনের শিকার হত নাবালিকারা! কিন্তু ভয়ে মুখ খুলত না কেউ।
এমনকি ধর্ষণের ফলে গর্ভবতী হয়ে পড়ে হরিদেবপুরের এক নির্যাতিতা নাবালিকা। তারপর জোর করে তার গর্ভপাতও করানো হয়। হরিদেবপুরের নির্যাতিতা ৩ নাবালিকার মধ্যে একজন চাইল্ড রাইটস কমিশন সহ পুলিসের কাছে দেওয়া বয়ানে এমনই গুরুতর অভিযোগ করেছে। ওই নাবালিকার অভিযোগ করেছে যে, ধর্ষণের জেরে একবার সে গর্ভবতী হয়ে পড়ে। তখন গোপনে তার গর্ভপাত করানো হয়। এই অভিযোগ সামনে আসার পরই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। এই বিষয়ে আরও নিশ্চিত হওয়ার জন্য আজ ৩ নাবালিকারই ডাক্তারি পরীক্ষা করা হবে।
সম্প্রতি ওই হোমের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয় শিশু সুরক্ষা কমিশনে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে হোমে হানা দেয় হরিদেবপুর থানার পুলিস। তখনই পুলিসের কাছে ধর্ষণের অভিযোগ করে ২ দৃষ্টিহীন নাবালিকা। আর একজন বলে, তার শ্লীলতাহানি করা হয়েছে! এরপরই হোমের মালিক, অধ্যক্ষ ও রাঁধুনিকে আটক করে পুলিস। পরে গ্রেফতার করে মালিক ও অধ্যক্ষকে। পাশাপাশি, আবাসিকদের সরিয়ে অন্যত্র নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এক নাবালিকা মালিক জীবেশ দত্তের বিরুদ্ধেও তার উপর যৌন নির্যাতনের অভিযোগ এনেছে।