দুর্গাপুজো শুরু হতে বাকি আর ৪৪ দিন। দিন গোনা ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে। পরের মাস থেকেই শুরু হয়ে যাবে পরিকল্পনা। কিন্তু এ বারের দুর্গাপুজোয় বাঙালি কি প্যান্ডেলে ঠাকুর দেখতে যাবে, না কি নতুন পোশাকে ছুটবে স্টেডিয়ামে? আগামী দু’মাসে খেলাধুলোর সূচি দেখলে সেই প্রশ্ন উঠতে বাধ্য।
ক্রিকেট বিশ্বকাপের সূচি আগেই প্রকাশিত হয়েছিল। মহালয়া, পঞ্চম এবং অষ্টমীতে ভারতের ম্যাচ রয়েছে। ফলে সেই দিনগুলিতে বাড়িতে থাকবেন না কি প্যান্ডেলে ঠাকুর দেখতে ছুটবেন, সেই পরিকল্পনা এখন থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছে। কিন্তু চমকের এখানেই শেষ নয়। বৃহস্পতিবার আইএসএলের সূচি প্রকাশিত হওয়ার পরে আবার নতুন করে পরিকল্পনা করতে হতে পারে।
আগামী ২১ অক্টোবর সপ্তমী। সেই দিনই যুবভারতীতে এফসি গোয়ার বিরুদ্ধে ম্যাচ রয়েছে ইস্টবেঙ্গলের। ঠাকুর দেখতে যাবেন না কি প্রিয় দলের ম্যাচে যাবেন এই ভাবনা এখন থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছে লাল-হলুদ সমর্থকদের মধ্যে। একই চিন্তা রয়েছে মোহনবাগান সমর্থকদের মধ্যেও। তাদের প্রথম ম্যাচ ২৩ অক্টোবর, অর্থাৎ নবমীর দিন।
যুবভারতীর আশপাশে কোনও বড় পুজো না থাকলেও দক্ষিণ কলকাতা বা সল্টলেকের পুজো দেখতে যাওয়ার কারণে অনেকেই বাইপাস ব্যবহার করেন। ফলে তুমুল জ্যাম হওয়ার সম্ভাবনা থাকছে। যাঁরা ভিআইপি রোড দিয়ে খেলা দেখতে আসবেন, তাঁদেরও দমদম পার্ক, লেকটাউন, শ্রীভূমির মতো পুজোর ভিড় ঠেলে আসতে হবে। ফলে সময়ে মাঠে আসতে পারবেন কি না, বা এলেও ঠিক সময়ে বাড়ি ফিরতে পারবেন কি না, তা নিয়ে সন্দেহ থাকছেই। ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের কাছে আশার কথা হল, তাদের ম্যাচটি বিকেল ৫.৩০ থেকে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু মোহনবাগানের ম্যাচ রাত ৮টা থেকে।
এখানেই শেষ নয়, আসল সমস্যা ডার্বিতে। আইএসএলের প্রথম ডার্বি দেওয়া হয়েছে ২৮ অক্টোবর। সে দিনই লক্ষ্মীপুজো, যা পালিত হয় ঘরে ঘরে। একই দিনে ইডেন গার্ডেন্সে নেদারল্যান্ডস বনাম বাংলাদেশ বিশ্বকাপের খেলা রয়েছে। বিশ্বকাপে সেটিই কলকাতায় প্রথম ম্যাচ। তুলনায় কম ওজনের দুই দেশ মুখোমুখি হলেও সেই ম্যাচ দেখতে দর্শকদের প্রবল আগ্রহ। প্রায় সব টিকিটই বিক্রি হয়ে গিয়েছে।
ফুটবলের অনেক সমর্থকই ক্রিকেট দেখতে যান। ফলে সে দিন তাঁরা ইডেন গার্ডেন্সমুখী হবেন না কি যুবভারতীমুখী, তা নিয়ে ধন্দে পড়েছেন। সমস্যা রয়েছে প্রশাসনিক ক্ষেত্রেও। শহরের দুই প্রান্তে দু’টি ম্যাচ থাকায় যথাযথ পুলিশের ব্যবস্থা করা যাবে কি না সেটাও লালবাজারের কাছে একটা চ্যালেঞ্জ। পুজোর মরসুমে কোনও ঝামেলা হোক, সেটা তারাও চাইবে না।
এ ছাড়া কালীপুজো তো রয়েছেই। সে দিনও ভারতের ম্যাচ রয়েছে নেদারল্যান্ডসের বিরুদ্ধে। শহরের বিভিন্ন প্রান্তে কালীপুজো কার্যত দুর্গাপুজোর মতোই জনপ্রিয়। তবে ভারতের সেই ম্যাচ বেঙ্গালুরুতে।