রাজ্যের মানুষকে কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সুবিধা দেওয়া কেন বন্ধ করা হল? বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের করা জনস্বার্থ মামলার প্রেক্ষিতে রাজ্যের কাছে হলফনামা চাইলো কলকাতা হাইকোর্ট। সোমবার প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরন্ময় ভট্টাচার্যের বেঞ্চে এই মামলার শুনানি শুরু হয়।
এই মামলায় ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ রাজ্য বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ করলেও তা কেন্দ্রীয় ব্যবস্থার সমকক্ষ নয়। কেন কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সুযোগ সুবিধার বিষয়ে সাধারণ মানুষের থেকে আলাদা রাখা হয়েছিল? ১৫ দিনের মধ্যে এই বিষয়ে তৃণমূল সরকারকে হলফনামা দিয়ে জানাতে হবে আদালতকে। সোমবার এই প্রসঙ্গে প্রধান বিচারপতির মন্তব্য, কেন্দ্রীয় সুবিধা বন্ধ করে রাজ্য যে বাংলা সহায়তা কেন্দ্র তৈরি করেছে, তার কাজ আদালতের কাছে স্পষ্ট নয়। এমন পদক্ষেপের কারণ আদালতের কাছে পরিষ্কার নয়।
কিছুদিন আগে কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সুবিধা থেকে রাজ্যের মানুষকে বঞ্চিত করার অভিযোগ জানিয়ে হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা করেছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তাঁর বক্তব্য, কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকারের প্রকল্প থেকে বাংলার মানুষকে বঞ্চিত করার জন্য কমন সার্ভিস সেন্টার বন্ধ করে দিয়েছে রাজ্য সরকার। প্রায় চল্লিশ হাজার সিএসসি কেন্দ্র বন্ধ করা হয়েছে, পরিবর্তে বাংলা সহায়তা কেন্দ্র নামে একটি ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে নবান্নের তরফে। বিজেপির রাজ্য সভাপতি দাবি করেছিলেন, ওই পরিষেবা বন্ধের ফলে অনেকে কাজ হারিয়েছেন। বিভিন্ন পঞ্চায়েত অফিসে কমপক্ষে দেড় লক্ষ ছেলে মেয়ের কর্মসংস্থানের সুযোগ ছিল। রাজ্যের এই সিদ্ধান্তের ফলে বেকারদের বঞ্চিত করা হয়েছে। হাইকোর্টে সুকান্ত মজুমদার আবেদন জানিয়েছেন, পঞ্চায়েত অফিসগুলিতে কেন্দ্রের ওই পরিষেবা আবার চালু করা হোক।
২০০টি কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সুবিধা নানাভাবে পান অন্যান্য রাজ্যের মানুষ। আর সেই সব প্রকল্পের সম্পর্কে তথ্য দিয়ে মানুষকে সহযোগিতা করার জন্য পঞ্চায়েতে সিএসসি চালু করেছিল কেন্দ্র সরকার। এর মাধ্যমে পঞ্চায়েত অফিসে গিয়েই সার্ভিসের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সুবিধা সম্পর্কে জানতে পারতেন গ্রামের মানুষ। কিন্তু ২০২০ সালে পশ্চিমবঙ্গে এই পরিষেবা তুলে দেয় রাজ্য সরকার।
বিজেপির রাজ্য সভাপতির করা জনস্বার্থ মামলার পরিপ্রেক্ষিতেই রাজ্যের কাছে হলফনামা চাইলো হাইকোর্ট। যদিও হাইকোর্ট প্রশ্ন তুলেছেন এই জনস্বার্থ মামলা দায়ের করতে এত দেরি কেন করা হয়েছে?