দক্ষিণ পূর্ব রেলের দুটি গুরুত্বপূর্ণ ট্রেন আরণ্যক ও রূপসী বাংলার ছাতনা স্টেশনে স্টপেজের দাবিতে স্মারকলিপি পেশ করলো স্হানীয় অধিবাসীরা। আজ সকালে ছাতনার স্টেশন ম্যানেজারের মাধ্যমে আদ্রা ডিভিশনের জেনারেল ম্যানেজারের উদ্দেশ্য এক প্রতিনিধি দল স্মারকলিপি পেশ করেন।
ছাতনার অধিবাসীদের বক্তব্য, বাঁকুড়া জেলার অন্যতম দর্শনীয় এবং গুরুত্বপূর্ণ পীঠস্থান হল সামন্ত রাজাদের রাজধানী তথা বৈষ্ণব কবি মা বাসুলির আরাধক বড়ু চন্ডীদাসের জন্মভূমি ছাতনা। কিন্তু এখানে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ৩টি ট্রেন দাঁড়ায় না। এনিয়ে এলাকাবাসীরা দীর্ঘদিন ধরে আদ্রা ডিভিশনের ডিআরএম- এর কাছে আবেদন করলেও কোনও ফল মেলেনি।
বাঁকুড়ার সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ডাঃ সুভাষ সরকারও এনিয়ে ভারতীয় রেল মন্ত্রকের কাছে বারবার চিঠি দিয়েছেন। কিন্তু ছাতনায় না দাঁড়ালেও সোমবার থেকে ঝাঁটিপাহাড়িতে দাঁড়াবে পুরুলিয়া এক্সপ্রেস। এতে ব্যবসায়ীদের ভীষণ সুবিধা হবে। কিন্তু রূপসী বাংলা এবং আরণ্যক যাতে ছাতনা স্টেশনে দাঁড়ায় রবিবার ফের তার দাবি নিয়ে স্টেশন ম্যানেজারের মাধ্যমে ডিআরএম’কে স্মারকলিপি দিলেন ছাতনা, বাঁকুড়া ও শালতোড়া বিধানসভার কিছু নাগরিক। এদের নেতৃত্বে ছিলেন জীবন চক্রবর্তী, অশোক বিদ, কার্তিক মন্ডল ও শেখ সিরাজ। এদিন সকাল ১১ টায় ছাতনার স্টেশন ম্যানেজারের কাছে এলাকার ছাত্র শিক্ষক, হকার সংগঠন ও নাগরিক সমাজের বেশ কিছু প্রতিনিধি একটি স্মারকলিপি জমা দেন।
অশোক বিদ বলেন, রূপসী বাংলা ট্রেনের স্টপেজ ছিল ছাতনা স্টেশনে। কি কারণে জানি না করোনা পরিস্থিতির পর ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হলেও রূপসী বাংলা ছাতনায় আর স্টপেজ দেয় না।
প্রবীণ সমাজকর্মী জীবন চক্রবর্তী বলেন, ছাতনার ঐতিহাসিক গুরুত্ব বাদ দিলেও ছাতনা স্টেশন থেকে ৩ কিমি’র মধ্যে রয়েছে একটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, একটি আইটিআই কলেজ এবং ডিগ্রি কলেজ। পাশেই আছে এশিয়া মহাদেশের সর্ব বৃহৎ গৌরীপুর কুষ্ঠ হাসপাতাল। এই স্টেশনের অদূরেই রয়েছে শুশুনিয়া সিড ফার্ম এবং শুশুনিয়া পাহাড়। সমগ্র পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আইটিআই কলেজে এবং কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রীরা পড়াশোনা করেন। তারা রূপসী বাংলা এক্সপ্রেসে যাওয়া আসা করেন। শুশুনিয়া পাহাড়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সারা বছর ধরে ট্রেকিং করতে আসেন বহু শিক্ষানবিশ পর্বতারোহী। তাছাড়াও পর্যটকদের আনাগোনা লেগেই আছে। তাই ছাতনা স্টেশনের বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখার জন্য আমরা আদ্রা ডিভিশনের ডিআরএম-এর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি এবং কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানজী এবং কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রীকে আমাদের আবেদন মেল করে পাঠিয়েছি।
এবিষয়ে ছাতনার স্টেশন ম্যানেজার অনির্বাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ওনাদের স্মারকলিপি পেয়েছি। সেটি আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে বিবেচনার জন্য পাঠিয়ে দেব।