তিনি আচার্য, আবার তিনিই উপাচার্য? বিতর্কে পড়ে মুখ খুললেন রাজ্যপাল, ব্যাখ্যা দিলেন নতুন বিজ্ঞপ্তিরও

আচার্য-উপাচার্য বিতর্কে মুখ খুললেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। রাজ্যজোড়া বিতর্কের প্রেক্ষিতে জানিয়ে দিলেন, আচার্য কোনও অবস্থাতেই উপাচার্য হিসাবে কাজ করতে পারেন না। ব্যাখ্যা দিলেন, কী পরিস্থিতিতে তাঁকে সেই দায়িত্ব পালন করতে হয়েছিল। পাশাপাশি, রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে আচার্যের পর সার্বভৌম অধিকর্তা উপাচার্য, সরকারি নির্দেশ মানতে তাঁরা বাধ্য নন, রাজভবনের তরফে জারি করা এই নয়া বিজ্ঞপ্তি নিয়েও নিজের মতপ্রকাশ করেন সিভি আনন্দ বোস। জানিয়ে দিলেন, এটা আচার্যের জারি করা নির্দেশিকা নয়, বরং সংবিধান, ইউজিসি আইন এবং সুপ্রিম কোর্টের দেওয়া রায়ের ভিত্তিতে তৈরি।

রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির পরিচালন নিয়ে সম্প্রতি দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েছে নবান্ন এবং রাজভবন। সেই দ্বন্দ্বই চূড়ান্ত রূপ পায় রাজভবনের একটি নির্দেশিকা প্রকাশের পর। শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য তথা রাজ্যপালের দফতর বিশ্ববিদ্যালয়গুলির উদ্দেশে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে। তাতে বলা হয়, আচার্যের পর বিশ্ববিদ্যালয়গুলির সার্বভৌম অধিকর্তা হলেন উপাচার্য। তাঁর অধীনস্থ বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মীরা তাঁরই নির্দেশ মেনে কাজ করবেন। এর পরেই বলা হয়েছিল, সরকার তাঁকে নির্দেশ দিতে পারে। কিন্তু সেই নির্দেশ মানতে তিনি বাধ্য নন। এর পরেই বিতর্ক দানা বাঁধে। রাজভবনের বিজ্ঞপ্তির পক্ষে-বিপক্ষে তরজা চরমে ওঠে। রবিবার এই বিতর্ক নিরসনে নিজের মত ব্যক্ত করেন রাজ্যপাল। তিনি বলেন, ‘‘ওই নির্দেশিকা বিভ্রান্তি দূর করার জন্য। এতে স্পষ্ট করা আছে যে, সরকারের উচিত বিশ্ববিদ্যালয়গুলির স্বায়ত্তশাসন রক্ষা করা। এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্যের জারি করা নির্দেশিকা নয়। বরং সংবিধান, ইউজিসি আইন এবং সুপ্রিম কোর্টের দেওয়া রায়ের ভিত্তিতে তৈরি। প্রতিষ্ঠানের স্বায়ত্তশাসন বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বায়ত্তশাসন অত্যন্ত পবিত্র বিষয় এবং সকলকেই তার সম্মানরক্ষার্থে এগিয়ে আসতে হবে।’’

রাজ্যে এখন কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজ্যপালের একক সিদ্ধান্তে মনোনীত উপাচার্যেরা রয়েছেন। বাকি ১৪টি বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি নিজেই উপাচার্যের দায়িত্ব পালন করবেন বলে জানিয়ে দিয়েছেন। তা নিয়েও জোর বিতর্ক চলছে। রবিবার এ ব্যাপারেও মন্তব্য করেছেন সিভি আনন্দ বোস। তিনি বলেন, ‘‘আচার্য উপাচার্য হিসাবে কাজ করেননি, করতে পারবেন না এবং করবেন না। কিছু ক্ষেত্রে যেখানে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাদের ডিগ্রি সার্টিফিকেট পেতে অসুবিধায় পড়েছেন, যার ফলে তাঁরা চাকরি পর্যন্ত হারাতে পারেন, শুধুমাত্র সেই ক্ষেত্রে, আমি বলেছিলাম যে, এই ধরনের ক্ষেত্রে আচার্য হস্তক্ষেপ করবেন এবং শিক্ষার্থীদের সাহায্যের জন্য শংসাপত্রগুলি ছাড়ার ব্যবস্থা করবেন। এর বেশিও না, কমও না।’’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.