কাশ্মীরের পরিস্থিতি সরেজমিন দেখতে আসা ইউরোপীয় সাংসদদের সম্মানে সোমবার মধ্যাহ্নভোজের আয়োজনে করেছিলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল। সূত্রের খবর, সেখানে ডোভালের আমন্ত্রণে উপস্থিত ছিলেন জম্মু-কাশ্মীরের তিন বরিষ্ঠ নেতাও। তাঁরা হলেন জম্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন উপ-মুখ্যমন্ত্রী মুজফফর বেগ, প্রাক্তন পিডিপি নেতা আলতাফ বুখারি ও কংগ্রেস নেতা উসমান মজিদ।
পিপলস ডেমোক্র্যাটিক পার্টির (পিডিপি) নেত্রী মেহবুবা মুফতি এখন গৃহবন্দি, তবে মুজফফর বেগ তাঁর দলেরই সদস্য এবং তাঁর সরকারেরই উপমুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। মেহবুবা মুফতি ছাড়াও এখন ধৃত অথবা গৃহবন্দি অবস্থায় রয়েছেন উপত্যকার আড়াইশো জন মতো নেতা। আরও দুই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীও গৃহবন্দি। এ দিন যে তিন নেতা উপস্থিত ছিলেন তাঁরা কেউই বন্দিদের তালিকায় ছিলেন না। তবে কাশ্মীরকে ভেঙে দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসাবে ঘোষণা করার পরে এই প্রথম এই তিন নেতাকে প্রকাশ্যে দেখা গেল।
গত মাসেই কাশ্মীর নিয়ে আলোচনা হয়েছে ইউরোপিয়ান সংসদে। কাশ্মীরের পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে কেন্দ্রীয় সরকার যে চেষ্টা করে যাচ্ছে তাতে তাঁরা সন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন। শুধু ইউরোপ নয়, কাশ্মীরকে স্বাভাবিক করার জন্য নয়াদিল্লির পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও। ইউরোপের যে সাংসদরা কাশ্মীরের পরিস্থিতি সরেজমিনে দেখতে এসেছেন, তাঁরা প্রত্যেকেই কোনও না কোনও দক্ষিণপন্থী রাজনৈতিক দলের সদস্য।
ভারতের সংবিধান থেকে অস্থায়ী ৩৭০ ধারা এবং ৩৫এ ধারা বাতিল করার পরে এই প্রথম কোনও আন্তর্জাতিক প্রতিনিধিদল কাশ্মীর সফরে এসেছে। তবে দেশের বিরোধী দলের সদস্যদের কাশ্মীরে যেতে না দিয়ে ইউরোপের সাংসদদের সেখানে আমন্ত্রণ জানানোর সমালোচনা করেছেন কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি রাহুল গান্ধী। গত মাসেই কেরলের ওয়েনাড়ের সাংসদ তথা কংগ্রেসের শীর্ষ নেতা রাহুল গান্ধী-সহ কয়েকজন বিরোধী নেতাকে জম্মু-কাশ্মীরে ঢুকে না দিয়ে শ্রীনগর বিমানবন্দর থেকেই ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
আগে ভারতের গণতন্ত্রের অবমাননা করা হচ্ছে এমন হ্যাসট্যাগ ব্যবহার করে টুইট করেছিলেন রাহুল গান্ধী। কেরলের তিরুবনন্তপুরমের কংগ্রেস সাংসদ শশী তারুর বলেন, “৩৭০ ধারা বিলোপের পরে আমি অনুরোধ করেছিলাম, জম্মু-কাশ্মীরের পরিস্থিতি সব দলের সাংসদের দেখতে দেওয়া হোক, সেই অনুরোধ এখনও রাখা হয়নি।” সরকারের এই অবস্থানের কড়া সমালোচনা করেছেন কংগ্রেসের অন্যতম নেতা ও প্রাক্তন মন্ত্রী জয়রাম রমেশও।