ভারতবর্ষকে হিন্দু রাষ্ট্র ঘোষণা করার দাবি বহুদিনের। এই দাবির প্রেক্ষিতেই এবার একটি তাৎপর্যপূর্ণ ঘোষণায় করলেন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস) এর সরসঙ্ঘচালক ডক্টর মোহন ভাগবত। ১লা সেপ্টেম্বর আরএসএস-এর মারাঠি দৈনিক তরুণ ভারত-এর প্রকাশক নরকেসারি প্রকাশন লিমিটেডের নতুন অফিসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এক সমাবেশে তিনি বলেন যে ভারত প্রকৃতপক্ষে একটি “হিন্দু রাষ্ট্র”।
তিনি আরও বলেন যে‚ এটা যে একটা হিন্দু জাতি তা আমাদের জনসংখ্যার উল্লেখযোগ্য অংশই মেনে নিয়েছে। কিন্তু এখনো কেউ কেউ এই বাস্তবতাকে পুরোপুরি উপলব্ধি করতে পারে না। এবং কেউ কেউ আছে যারা
এটি সম্পর্কে সচেতন হওয়া সত্ত্বেও, এটি প্রকাশ্যে স্বীকার করা থেকে বিরত থাকে।
এইদিনের ভাষনে ভাগবত ভারতকে একটি “সুসভ্যতার রাষ্ট্র” হিসাবে বর্ণনা করেন ও জাতির “শাশ্বত সংস্কৃতি” হিসাবে হিন্দুধর্মের গভীর প্রভাবের কথা তুলে ধরেন। তিনি দ্ব্যর্থহীনভাবেই বলেন যে ভারত যদিও সমস্ত ধর্মকে হৃদ্যতার সাথে স্বাগত জানায় তবুও হিন্দু ধর্মই দেশের মূল ভিত্তি হিসাবে কাজ করে।
তবে সরসঙ্ঘচালক মেনে নিয়েছেন যে কেউ কেউ এই বাস্তবতাকে গ্রহণ করাতে আপত্তি জানাতে পারে। তবে তিনি স্পষ্টভাবে জানান যে হিন্দু ধর্মই হল সেই অনন্য বন্ধন যা সবাইকে এই ভূমির মধ্যে হিন্দু সংস্কৃতির সাথে সংযুক্ত করে।
জাতি গঠনে মিডিয়ার ভূমিকাকে সম্বোধন করে, ভাগবত চতুর্থ এস্টেটকে জাতি গঠনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করার এবং ভারতকে একটি বিশ্বশক্তির মর্যাদায় উন্নীত করতে অবদান রাখার আহ্বান জানান। তিনি নেতিবাচকতা দূর করার প্রচেষ্টার সাথে সাথে “সঠিক ধারণা” প্রচার করার, সামাজিক চেতনা বৃদ্ধি করার এবং নাগরিকদের চিন্তাধারায় ইতিবাচকতা বৃদ্ধি করার জন্য মিডিয়ার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেন। সরসঙ্ঘচালক বলে যে চিন্তাভাবনা এবং মূল্যবোধকে ব্যবসায়িক স্বার্থের থেকে বেশী অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত।
তিনি ন্যায় এবং সত্য-ভিত্তিক প্রতিবেদনের গুরুত্বের উপর জোর দিয়েছিলেন‚ যা নিজের মতাদর্শের অখণ্ডতা বজায় রেখে সমাজের সমস্ত অংশকে আমাদের সামনে তুলে ধরবে। “আমাদের আদর্শের” বিশ্বব্যাপী ব্যাপক আবেদনের প্রতি আস্থা প্রকাশ করে তিনি এর অপরিবর্তনীয় প্রকৃতিকে তুলে ধরেন।
ভাগবত দেশ ও সমাজের সম্মিলিত দায়বদ্ধতার উপর জোর দিয়ে তার ভাষনের উপসংহার টানেন। যে সংবাদমাধ্যম এই “মতাদর্শ” প্রচার করে‚ বিশ্বব্যাপী দায়বদ্ধতা তার কাঁধে রয়েছে বলে তিনি জানান। তিনি এদিন পরিবেশ সংরক্ষণের তাৎপর্য, “স্বদেশী” (আত্মনির্ভরতা), পারিবারিক মূল্যবোধ সংরক্ষণ এবং জাতীয় উন্নয়নের গুরুত্বপূর্ণ দিক হিসাবে শৃঙ্খলা বজায় রাখার তাৎপর্যকেও গুরুত্বসহকারে সবার সামনে তুলে ধরেন।