১৯৬৫ সালের অগাস্ট মাস।
একটি মালবাহী জাহাজের একটিমাত্র কেবিনে এক ৬৯ বছর বয়সের যুবক। হ্যাঁ যুবক।কারণ তিনি পরবর্তী ১২ বছরে যা করেছেন তা হাজার হাজার যুবক মিলেও করতে পারেন না।জাহাজে সামুদ্রিক পীড়া, এমনকি দু’দুবার হৃদ স্পন্দন বন্ধ হলেও হার মানেন নি। তাঁকে যে আমেরিকায় যেতেই হবে প্রায় ৪৫০ বছর আগে এই বাংলার এক সন্ন্যাসীর ইচ্ছাপূরণ করতে—–
পৃথিবীতে যত আছে নগর আদি গ্ৰাম
সর্বত্র প্রচার হবে মোর হরি নাম।
শ্রী চৈতন্যদেবের এই বাণী আজ সত্য করে দেখিয়েছেন এই পশ্চিমবঙ্গের আর একজন সন্ন্যাসী।
‘জলদূত’ জাহাজে করে কৃষ্ণদূত হয়ে আমেরিকায় পা রেখেছিলেন শ্রীল অভয়চরণারবিন্দ স্বামী প্রভুপাদ।
৬৯ বছর বয়সে ‘কৃষ্ণনাম’ প্রচারের জন্য বিদেশযাত্রার আগের জীবন ছিল এক মহাজীবনের প্রস্তুতিপর্ব।সন্ন্যাস নেওয়ার আগে শ্রীল প্রভুপাদ ছিলেন এক ঔষধ ব্যবসায়ী অভয়চরণ দে।১৮৯৬ সালের ১লা সেপ্টেম্বর উত্তর কলকাতার হ্যারিসন রোডের ব্যবসায়ী শ্রী গৌরমোহন দের ঘরে শ্রীল প্রভুপাদের জন্ম। গৌরমোহন দে ছিলেন শুদ্ধ বৈষ্ণব এবং তাঁর পুত্রকে কৃষ্ণভক্তরূপেই মানুষ করে তুলেছিলেন।শ্রীল প্রভুপাদের মা রজনী দেবী গৌড়ীয় বৈষ্ণব পরিবারের কন্যা।ছোটো থেকেই পিতার উৎসাহে অভয়চরণ বন্ধুদের নিয়ে রথযাত্রার অনুষ্ঠান করতেন। কলেজে পড়বার সময় অভয়চরণের বিয়ে হয়। স্বাধীনতা আন্দোলনের সময় ১৯২০ সালে অসহযোগ আন্দোলনের কর্মসূচি হিসেবে বিদেশী পরিচালিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বয়কটের ডাকে সাড়া দিয়ে অভয়চরণ স্কটিশ চার্চ কলেজে চতুর্থ বর্ষের পরীক্ষায় সফল হয়েও প্রাপ্য ডিপ্লোমা প্রত্যাখ্যান করেন। অভয়চরণ দে কলকাতার ‘বসু গবেষণাগার’ এ বিভাগীয় ম্যানেজার হিসেবে চাকরি করতে শুরু করেন।এইসময় ১৯২২ সালে শ্রীল প্রভুপাদের তাঁর গুরু শ্রীল ভক্তিসিদ্ধান্ত সরস্বতী ঠাকুরের সঙ্গে প্রথম সাক্ষাৎকার হয়।প্রথম সাক্ষাতেই তিনি অভয়চরণকে পৃথিবী জুড়ে শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর বাণী প্রচার করতে বলেন। অভয়চরণ প্রথমে পরাধীন দেশে শ্রীচৈতন্যের বাণী তথা ভারতীয় সংস্কৃতির প্রচার-প্রসারের ব্যাপারে সন্দিহান ছিলেন। গুরুদেব বলেছিলেন, কৃষ্ণভাবনামৃত ভারতীয় রাজনীতির পরিবর্তনের জন্য অপেক্ষা করতে পারে না।১৯৩২ সালে অভয়চরণকে সপরিবারে ওষুধ ব্যবসার কাজে প্রয়াগরাজে যেতে হয় এবং সেখানে তিনি ভক্তিসিদ্ধান্ত সরস্বতী ঠাকুরের শিষ্যত্ব গ্ৰহণ করেন।এরপরের ৩৩ বছর শ্রীল প্রভুপাদ স্বদেশে থেকেই কৃষ্ণভাবনামৃত প্রচারের কাজ করেন।১৯৩৫ সালে গৌড়ীয় মঠের অন্তর্কলহে উদ্বিগ্ন শ্রীল ভক্তিসিদ্ধান্ত সরস্বতী ঠাকুর তাঁর অবর্তমানে মঠের ভবিষ্যৎ নিয়ে অভয়চরণের কাছে চিন্তা ব্যক্ত করেন।
গুরুদেব অভয়চরণ কে ইংরেজীতে লেখার মাধ্যমে কৃষ্ণভক্তি প্রচারের পথ দেখালেন। গৌড়ীয় মঠের ‘The Harmonist’ পত্রিকা থেকে লেখা শুরু করার পর ‘Back to Godhead’ পত্রিকার প্রতিষ্ঠা করলেন।লেখার কাজে মনোসংযোগ এবং কৃষ্ণভাবনামৃত প্রচারের কাজে তাঁর ব্যবসায়িক ও পারিবারিক ক্ষতি হচ্ছিল। এমন সময় তাঁর দোকানে চুরি হয়ে যায়। এই ঘটনাযকে ঈশ্বরের নির্দেশ মনে করে কলকাতায় তাঁর পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে চিরবিচ্ছেদ ঘটালেন। যিনি শৈশবে ভাল আহার ও পরিধেয় পেয়েছিলেন, ১৯৫০ সালে সেই অভয়চরণ দে দিল্লীর প্রচন্ড শীতে শীতবস্ত্র ছাড়াই বিভিন্ন মানুষের দ্বারা প্রত্যাখ্যাত হয়েও ‘ব্যাক টু গডহেড’ পত্রিকা বিতড়ণ করেছেন।সেই সময় তাঁর লেখা একটি প্রবন্ধ ‘সময় নেই, সাধারণ মানুষের একটি নিত্য ব্যাধি’ থেকে তাঁর সঙ্কল্প সম্পর্কে ধারণা করা যায়। গ্ৰীষ্মকালে কখনো প্রচন্ড গরমে, কখনো গরুর গুঁতো খেয়ে পথের ধারে পড়ে থেকেও কৃষ্ণনাম করেছেন। ১৯৫৯ সালে বৃন্দাবনে সন্ন্যাস গ্ৰহণ করার পর অভয়চরণ দে হলেন শ্রীল অভয়চরণারবিন্দ ভক্তিবেদান্ত স্বামী।এইসময় থেকেই শ্রীল প্রভুপাদ বিদেশে ধর্মপ্রচারের জন্য ইংরেজি তে শ্রীমদ্ভাগবতের ভাষ্য রচনা শুরু করেন। শ্রীমদ্ভাগবতের প্রথম খণ্ডটি তিনি প্রধানমন্ত্রী লাল বাহাদুর শাস্ত্রীর হাতে তুলে দিয়েছিলেন।
মথুরার ব্যবসায়ী মিঃ আগরওয়ালের ছেলে পেনসিলভানিয়ায় গোপাল আগরওয়ালের বাড়ি শ্রীল প্রভুপাদের আমেরিকায় প্রথম বাসস্থান। কেবলমাত্র একটি সুটকেস, একটি ছাতা এবং শুকনো খাদ্যশস্য সম্বল করে শ্রীল প্রভুপাদ পাড়ি দিলেন আমেরিকায়।
আমেরিকায় বসে কবিতা লিখলেন —–
বড় কৃপা কৈলে কৃষ্ণ অধমের প্রতি।
কি লাগি আনিলে হেথা কর এবে গতি।।
আছে কিছু কার্য তব এই অনুমানে।
নহে কেন আনিবেন এই উগ্ৰস্থানে।
রজস্তমো গুণে এরা সবাই আচ্ছন্ন।
বাসুদেব-কথা রুচি নহে সে প্রসন্ন।।
তবে যদি তব কৃপা হয় অহৈতুকী।
সকলই সম্ভব হয় তুমি সে কৌতুকী।।
শ্রী কৃষ্ণের কৃপা পেতে আরো পরীক্ষা বাকি ছিল প্রভুপাদের।বাটলার থেকে প্রভুপাদ নিউইয়র্কে পৌঁছালেন কৃষ্ণনাম প্রচার করতে। রামকৃষ্ণ মিশনের স্বামী নিখিলানন্দের কাছে আশ্বাস পেলেন যে আমেরিকানদের মনোভাব ভক্তিযোগ অনুশীলনের পক্ষে অনুকূল। কিন্তু শ্রীল প্রভুপাদ ভারতে চিঠি পাঠিয়ে গৌড়ীয় মঠ থেকে কোনো আর্থিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি পেলেন না। প্রথমে ডঃ রামমূর্তি মিশ্রের যোগ স্টুডিও, তারপর প্যারাডক্স রেস্টোরেন্ট হলো প্রভুপাদের শ্রীকৃষ্ণের বাণী প্রচারের জায়গা। তাঁর ফ্ল্যাট থেকে টাইপরাইটার আর টেপরেকর্ডার চুরি হয়ে গেলে তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন শহরের বস্তি ‘বাওরি’ তে থাকার যাকে পৃথিবীর জঘন্যতম জায়গা বলা যেতো।
একদল ভবঘুরে, নেশাচ্ছন্ন, আশ্রয়হীন মানুষের বাস ছিল বাওরিতে।সেইসময় ভিয়েতনাম আক্রমণের প্রতিবাদে, আমেরিকার যুবক সম্প্রদায় নেশাচ্ছন্ন অবস্থায় সামাজিক বিধি নিষেধের তোয়াক্কা না করে বিচ্ছিন্ন জীবনযাপন শুরু করেছিল — এদের হিপি বলা হতো। কিন্তু প্রভুপাদের মধুর সুরে কীর্তন তাদের আকৃষ্ট করতো, প্রভুপাদ নিজের হাতে রান্না করে তাদের খাওয়াতেন। জাগতিক নেশার মোহে আচ্ছন্ন হিপিরা ‘হরেকৃষ্ণ’ মহামন্ত্রের মাধ্যমে অতীন্দ্রিয় জগতের সন্ধান পেলেন। চিত্রকর, সঙ্গীতশিল্পী,কবি , সাহিত্যিক যারা আমেরিকার ভোগ ঐশ্বর্যময় জড়বাদী জীবনধারার প্রতিবাদে ‘হিপি’ হয়েছিলেন কৃষ্ণভক্তির মাধ্যমে জীবনের পরম লক্ষ্যের সন্ধান পেলেন।প্রভুপাদ একটি ‘কৃষ্ণভাবনামৃত সঙ্ঘ’ প্রতিষ্ঠা করলেন ‘Matchless gifts’ নামে এক দোকানঘরে আর তার এজেন্ট মিঃ গার্ডিনার হলেন সঙ্ঘের প্রথম ট্রাস্টি যিনি প্রতিমাসে কুড়ি ডলার চাঁদা দিতে সম্মত হন।সত্যিই আজ ‘International Society for Krishna Conciousness’ বা ISKCON একটি অনবদ্য উপহার ভোগবাদী সমাজকে কৃষ্ণভক্তির মাধ্যমে সঠিক দিশা দেখানোর জন্য। প্রভুপাদ হিপিদের প্রধান কেন্দ্র সানফ্রান্সিসকোতে গিয়ে উপস্থিত হলেন। সরকার বিশাল সংখ্যক উদ্ভ্রান্ত যুবকদের উপস্থিতিতে উদ্বিগ্ন ছিল , ভয় পাচ্ছিল এই সামাজিক সমস্যার সমাধান না হলে নেশাগ্ৰস্ত হিপিদের দখলে চলে যাবে পুরো শহরটাই।নেশা ছাড়িয়ে হিপিদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে নিয়ে আসার জন্য কর্তৃপক্ষ প্রভুপাদকে অনুরোধ করেন।প্রভুপাদ পেরেছিলেন সেইসমস্ত যুবকদের নিয়ে শহরের বিভিন্ন প্রান্তে কীর্তন করতে। ষাটের দশকে আমেরিকার সঙ্গীত জগতে পপ গায়কদের দল ‘বিটল্স’ যথেষ্ট খ্যাতি অর্জন করেছিল।বিটল্সের জর্জ হ্যারিসন শ্রীল প্রভুপাদের ‘হরে কৃষ্ণ’ আন্দোলনে আকৃষ্ট হয়ে ভক্তিমূলক গান রেকর্ড করতে থাকে। ‘Lord whom we so long ignored’ , ‘My Sweet Lord’ , ‘Living in the material world’ ইত্যাদি রেকর্ডের কোটি কোটি কপি বিক্রি হয়।’হরেকৃষ্ণ মন্ত্র’ রেকর্ড, আমেরিকার টেলিভিশনের অনুষ্ঠানে কীর্তন প্রচার হতে লাগলো। এরপর একে একে ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া বিভিন্ন দেশে নিজের ভক্তদের দ্বারা ইসকনের কাজে গতি আনলেন। ইসকন আজ সত্যিই ‘আন্তর্জাতিক’ সংস্থারূপে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে আটশোর বেশি মন্দির আছে , ১২ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে। ভারতে করোনার সময় ইসকন বিনামূল্যে কয়েক লক্ষ মানুষের ভোজনের ব্যবস্থা করেছে। স্টিভ জবস একটি বক্তব্যে তার বেকারত্বের দিনে ইসকনের রেস্টুরেন্টের বিনামূল্যে সুস্বাদু খাবার গ্ৰহণের কথা বলেছেন।প্রভুপাদ Governing Body Commission তৈরি করে ইসকনের সুষ্ঠ পরিচালনার ব্যবস্থা করেছিলেন কিন্তু চেয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মায়াপুর হবে কৃষ্ণভাবনামৃত প্রচারের প্রধান কেন্দ্র।আজ মায়াপুরে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় হিন্দু মন্দির প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
শ্রীকৃষ্ণ যেমন কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধক্ষেত্রে দাঁড়িয়ে গীতোপদেশ দিয়েছিলেন, শ্রীল প্রভুপাদ পুঁজিবাদ আর কমিউনিজমের ঠান্ডা লড়াইয়ের মাঝে দাঁড়িয়ে ধর্মের বাণী ছড়িয়ে দিতে সমর্থ হয়েছিলেন।আমেরিকায় সফলতা পাবার পর প্রভুপাদ তৎকালীন সোভিয়েত রাশিয়া যাওয়া মনস্থ করলেন।১৯৭১ সালে সোভিয়েত রাশিয়াতে ঢোকার অনুমতি পেলেও সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলার অনুমতি পাননি, এমনকি শ্রীমদ্ভগবতগীতা সঙ্গে নিয়ে যেতে দেওয়া হয় নি। প্রভুপাদ মস্কোর U S.S.R Academy of Science এর South Asian Studies বিভাগের অধ্যক্ষ প্রফেসর কটভ্স্কির সাথে কথা বলে বুঝলেন কমিউনিস্ট পার্টির উদ্দ্যেশ্য বৈদিক দর্শনের সম্পূর্ণ বিপরীত।সেইসময়ের রাশিয়াকে তিনি আসুরিক সভ্যতা হিসেবে অভিহিত করেছিলেন। ঘটনাচক্রে সেই সময় ভারতীয় দূতাবাসের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার ছেলের রাশিয়ান বন্ধু ইভান প্রভুপাদের কথায় আকৃষ্ট হয়ে তাঁর ভক্ত হয়ে যায়। শুরু হয় সোভিয়েত রাশিয়ায় ‘হরে কৃষ্ণ’ আন্দোলন। কৃষ্ণভক্তদের সোভিয়েত রাশিয়ায় মানসিক হাসপাতাল, জেলে জায়গা হতো। আর এখন মায়াপুরে গেলে দেখতে পাওয়া যায় রাশিয়ান কৃষ্ণভক্তদের দল মৃদঙ্গ বাজিয়ে হরিনাম সঙ্কীর্তন করছেন। মার্ক্সবাদ যে দেশে ধর্মকে আফিম বলে প্রচার করেছে সে দেশে রুশ ভাষায় অনূদিত গীতা ও ভক্তিবেদান্তের বই বিক্রি হয়েছে। মার্ক্সবাদ নিজেকে ‘আন্তর্জাতিক’ বললেও বিশ্বের হাতে গোনা কয়েকটি দেশে কমিউনিজমের অস্তিত্ব আছে আর কমিউনিজমের সম্পূর্ণ বিপরীত ‘কৃষ্ণভাবনামৃত’ বিশ্বের প্রায় সব দেশেই ছড়িয়ে পড়েছে — এ থেকেই বোঝা যায় বস্তুবাদী চিন্তাধারা আধ্যাত্মিক ভাবধারার তুলনায় কত দুর্বল আর মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। বিশ্বের উনষাট টি ভাষায় প্রভুপাদের ‘Bhagvad Gita As it is ‘ প্রকাশিত হয়েছে। যে বয়সে মানুষ অবসর গ্ৰহণ করে সেই বয়স থেকে শুরু করে শ্রীল প্রভুপাদ মাত্র ১২ বছরের মধ্যে ১৪ বার পৃথিবী ভ্রমণ করেন। শ্রীল প্রভুপাদের জন্যই পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের ১৭০ টি প্রধান শহরে প্রতিবছর রথযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়।
১৯৭৭ সালের ১৪ ই নভেম্বর শ্রীল প্রভুপাদ শ্রীধাম বৃন্দাবনে তাঁর অপ্রকট লীলাবিলাস করেন।
শ্রীল প্রভুপাদ ‘শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা যথাযথ’-এর মুখবন্ধে সনাতন ধর্মের অর্থ সম্পর্কে স্পষ্ট করে বলেছেন ‘বর্তমান জগতে ধর্ম বলতে আমরা সাধারণত যা বুঝি , সনাতন ধর্ম ঠিক তা নয়।.. সনাতন ধর্ম বলতে যে ধর্ম বোঝায়, তা আমাদের বুঝতে হবে ধর্ম কথাটির সংস্কৃত অর্থের মাধ্যমে।ধর্ম বলতে বোঝায় যা অপরিহার্য অঙ্গরূপে কোন কিছুর সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত।’
অর্থাৎ প্রভুপাদ বিভিন্ন উপাসনা পদ্ধতি (Religion) আর ‘ধর্ম’-এর পার্থক্য সম্পর্কে বিভ্রান্তি দূর করতে চেয়েছেন। ইতিহাসের পাঠ্যপুস্তক বলে অষ্টম শতকে ভারতে যে ভক্তি আন্দোলন শুরু হয়েছিল তা ভারতের স্বাধীনতার আগেই শেষ হয়ে গিয়েছে কিন্তু শ্রীল প্রভুপাদ প্রমাণ করেছেন ভক্তি আন্দোলনের সূবর্ণযুগ বিশ্ব এখনো প্রত্যক্ষ করে নি আর এই আন্দোলন শীতকালীন শিশিরপাতের মতো নিঃশব্দে সমস্ত বিশ্বে ‘কৃষ্ণনাম’ , গীতার বাণী প্রচার করে চলেছে সমস্ত মানবজাতিকে উত্তরণের পথে নিয়ে যেতে।
পিন্টু সান্যাল