মেধাবী হলেও মন থেকে ‘অপরাধী’, যাদবপুরের তিন পড়ুয়া সম্পর্কে আদালতে বলল রাজ্য

যাদবপুরকাণ্ডে ধৃত নাসিম আখতার, সত্যব্রত রায়, হিমাংশু কর্মকারকে বিচারবিভাগীয় হেফাজতে পাঠাল আলিপুর আদালত। বৃহস্পতিবার আদালত জানাল, ৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জেলেই থাকতে হবে তাঁদের। সরকারি আইনজীবীর দাবি, এঁরা মেধাবী হলেও মন থেকে আসলে ‘অপরাধী’। যদিও এই দাবির বিরোধিতা করেছেন তিন অভিযুক্তের আইনজীবী।

যাদবপুরের প্রথম বর্ষের ছাত্রের মৃত্যুতে অভিযুক্ত নাসিম, সত্যব্রত, হিমাংশুকে বৃহস্পতিবার আদালতে হাজির করানো হয়। অভিযুক্তদের আইনজীবী শুনানির সময় জানান, তাঁর মক্কেলদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সরকারি আইনজীবী বলেন, ‘‘আরও ২৫ জনকে ডাকা হয়েছিল। কিন্তু তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়। সকলকে গ্রেফতার করা হয়নি। ষড়যন্ত্রে জড়িত রয়েছেন যাঁরা, তাঁদেরই গ্রেফতার করা হয়েছে। এঁরা সকলে মেধাবী ছাত্র, কিন্তু মন থেকে অপরাধী।’’

এই দাবির বিরোধিতা করে অভিযুক্তের আইনজীবী বলেন, ‘‘এখনই অপরাধী বলে দিলে তো হয়েই গেল!’’ সরকারি আইনজীবী জানান, তদন্ত চলছে। মেন হস্টেল থেকে উদ্ধার হওয়া ডায়েরি বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। মেন হস্টেলের যে ঘরে প্রথম বর্ষের পড়ুয়া ‘অতিথি’ হিসাবে থাকছিলেন, সেই ঘর থেকে ওই ডায়েরি উদ্ধার হয়েছিল। তা থেকে ডিনকে উদ্দেশ্য করে লেখা একটি চিঠি মিলেছিল। বৃহস্পতিবার আদালতে সেই ডায়েরির কথা বলা হয়েছে। অভিযোগ, অত্যাচারিত পড়ুয়াকে দিয়ে জোর করে লেখানো হয়েছিল চিঠিটি। অভিযুক্ত দীপশেখর দত্ত যদিও দাবি করেছেন, চিঠিটি তিনি লিখেছেন। সেই ডায়েরির লেখাই এখন বিশ্লেষণ করছেন তদন্তকারীরা।

১৮ অগস্ট গ্রেফতার হন নাসিম, সত্যব্রত, হিমাংশু। নাসিম রসায়ন বিভাগের প্রাক্তনী। পূর্ব বর্ধমানের মেমারির বাসিন্দা তিনি। হিমাংশু কর্মকার নামে আরও এক প্রাক্তনীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গণিত নিয়ে পড়াশোনা করেছিলেন। তাঁর বাড়ি মুর্শিদাবাদের সমশেরগঞ্জে। সত্যব্রত চতুর্থ বর্ষের ছাত্র। তিনি কম্পিউটার সায়েন্সের ছাত্র। তাঁর বাড়ি হরিণঘাটায়। এই সত্যব্রতই ঘটনার দিন অর্থাৎ, বুধবার রাতে ডিন অফ স্টুডেন্টস রজত রায়কে ফোন করে জানিয়েছিলেন যে, হস্টেল ‘পলিটিসাইজ়ড’ হচ্ছে। ব্যাখ্যা দিয়ে জানিয়েছিলেন, হস্টেল থেকে এক ছাত্রকে ঝাঁপ দিতে বলা হচ্ছে। সেই সত্যব্রতকেও টানা জিজ্ঞাসাবাদের পর গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.