যাদবপুরকাণ্ডে দীপশেখর ও মনোতোষের বিরুদ্ধে নতুন অভিযোগ, ফের চার দিন হেফাজতে পেল পুলিশ

যাদবপুরকাণ্ডে খুনের মূল মামলায় অভিযুক্ত হিসাবে তাঁদের দু’জনের নাম ছিল। এ বার তাঁদের বিরুদ্ধে সরকারি কর্মীকে কাজে বাধা দেওয়ার মামলাও নতুন করে করা হল। যাদবপুরের দুই পড়ুয়া মনোতোষ ঘোষ এবং দীপশেখর দত্তের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৫৩ ধারাতেও মামলা করেছে পুলিশ। নতুন মামলার প্রেক্ষিতে ওই দু’জনকে নিজেদের হেফাজতে পাওয়ার আবেদনও জানায় তারা। শনিবার সেই আবেদন মেনে আলিপুর আদালত ধৃত ওই দু’জনকে আগামী ৩০ অগস্ট পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে। অন্য দিকে, খুনের মূল মামলায় মনোতোষ এবং দীপশেখরকে আগামী ৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিচারবিভাগীয় হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। যদিও নতুন মামলায় বিচারকের নির্দেশ মেনে আগামী ৩০ অগস্ট পর্যন্ত দু’জনকে নিজেদের হেফাজতে পাবে পুলিশ।

গত মঙ্গলবার অর্থাৎ ২২ অগস্ট মনোতোষ-দীপশেখরকে আদালতে হাজির করিয়েছিল পুলিশ। সেই সময় বিচারক দু’জনকে পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেই মেয়াদ শনিবার শেষ হওয়ায় তাঁদের আলিপুর আদালতে হাজির করানো হয়। শনিবার পুলিশ ওই দু’জনের বিরুদ্ধে নতুন করে ৩৫৩ ধারায় একটি মামলা রুজু করে। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৫৩ ধারায় বলা হয়েছে, কোনও সরকারি কর্মীকে কর্তব্য থেকে বিরত করতে তাঁর উপর হামলা বা আক্রমণ করলে অথবা তাঁর প্রতি কেউ বা কারা যদি বলপ্রয়োগ করেন তা হলে তাঁর দণ্ড হবে। দীপশেখরের আইনজীবী আদালতকে জানান, এমনিতেই তাঁর মক্কেল মানসিক ভাবে ‘ট্রমা’য় ভুগছেন। এই পরিস্থিতিতে পুলিশি হেফাজত শেষ হওয়ার দিনে নতুন করে মামলায় জুড়তে চাইছে পুলিশ। তিনি জামিনের আবেদন করলেও সেই দাবি মানতে রাজি হননি সরকারি আইনজীবী। তিনি জানিয়েছেন, এই আবেদনে কোর্টের সময় নষ্ট হচ্ছে। পুলিশ হেফাজতে ধৃতদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছে। প্রয়োজনে জেলে গেলে জেল সুপারের কাছে মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষার আবেদন করতে পারেন। দীপশেখরের হাতের লেখা পরীক্ষার করারও আবেদন জানান সরকারি আইনজীবী।

মনোতোষের আইনজীবী ওমি হক প্রশ্ন তোলেন, পুলিশ আগে র‌্যাগিংয়ের ধারা দিয়েছে। তার পর কেন ফের নতুন মামলায় হেফাজতে চাইছে? পুলিশকে বাধা দেওয়ার এই মামলায় তাঁর মক্কেলের জামিন চেয়েছেন তিনি। যদিও সরকারি আইনজীবী সেই জামিনের বিরোধিতা করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, হস্টেলের এক কর্মী বয়ান দিয়ে জানিয়েছেন, তাঁকে গেট বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। এর নেপথ্যে একটা গোটা দল রয়েছে, যাকে ‘ক্র্যাক’ করতে হবে। সরকারি আইনজীবী এ-ও বলেন, ‘‘অভিযুক্তদের বাচ্চা বলা হচ্ছে, কাজটা তো পরিণতদের মতো!’’ এর পর সরকারি আইনজীবীর দাবি মেনে নতুন এই মামলায় পুলিশি হেফাজতে পাঠানো হয়েছে মনোতোষ এবং দীপশেখরকে। পাশাপাশি, খুনের মূল মামলায় ৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিচারবিভাগীয় হেফাজতের নির্দেশও দিয়েছেন বিচারক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.