চন্দ্রায়ন ৩ সাফল্যের পর এবার ইসরোর লক্ষ্য সূর্য। চন্দ্রায়নের ল্যান্ডার বিক্রম চাঁদের দক্ষিণ মরু ছোঁয়ার পরপরই ইসরো প্রধান এস সোমনাথ ঘোষণা করেন ভারতের সোলার মিশনের কথা। তিনি জানান, সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে লঞ্চ করা হবে Aditya-L1। খুব কাছ থেকে সূর্যকে পরীক্ষা করে তথ্য পাঠাবে Aditya-L1। এর ফলে সূর্যের গতি প্রকৃতি ও পৃথিবীর উপরে তার প্রভাব সম্পর্কে অনেককিছুই জানা যাবে।
এদিন এস সোমনাথ সাংবাদিকদের বলেন, পরিকল্পনা মতো সবকিছু ঠিকঠাক চলছে। আশা করা যায় সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে Aditya-L1 লঞ্চ করা যাবে। একটি উপবৃত্তাকার কক্ষপথে Aditya-L1 প্রদক্ষিণ করবে। এটি এল ওয়ান পয়েন্ট পর্যন্ত যাবে। এই বিশাল দূরত্ব যেতে সময় লাগবে ১২০ দিন। উল্লেখ্য, গত ১৪ আগস্টই ইসরো জানিয়েছিল Aditya-L1 মিশনের কথা। Aditya-L1 লঞ্চ হলে এটিই হবে মহাকাশে সূর্যের উপরে গবেষণা করার জন্য ভারতের প্রথম অবজার্ভেটরি।
প্রসঙ্গত, বুধবার চাঁদের মাটি ছুঁয়েছে ল্যান্ডার বিক্রম। ভারতীয় মহাকাশবিজ্ঞানের পরিসরে ঘটে গেল এক যুগান্তর। চন্দ্রযান-৩-এর ল্যান্ডারের নাম ‘বিক্রম’, রোভারের নাম ‘প্রজ্ঞান’। সেই ল্যান্ডার সফল ভাবে অবতরণ করল। ফলে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে প্রথম দেশ হিসেবে পা রাখল ভারত।
এত দিন চাঁদের অনাবিষ্কৃত এই দক্ষিণ মেরুতে কোনও দেশের চন্দ্রযানই নামেনি। বুধবার সন্ধ্যা ৬টা ৪ মিনিটে চাঁদের মাটিতে অবতরণ করল চন্দ্রযান-৩। ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থার তথা ‘ইসরো’ আগেই জানিয়েছিল, চাঁদের নামার আগের শেষ কয়েকমিনিটই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেই ফাঁড়া কাটিয়ে সাফল্যের মুখ দেখল চাঁদ-মিশন।
চূড়ান্ত পর্যায়ের এই অবতরণ প্রক্রিয়ায় ১৯ মিনিট সময় লেগেছে। শুভ মুহূর্তটি পেরিয়ে যেতেই ট্যুইট করেছে ইসরো। চন্দ্রযান-৩-এর বয়ানে লেখা সেই ট্যুইটে ইসরো বলছে– ‘ভারত, আমি আমার গন্তব্যে পৌঁছে গিয়েছি!’
চাঁদের মাটিতে ল্যান্ডার ‘বিক্রম’ নামার পরেই, তার একটি অংশ স্বয়ংক্রিয় ভাবে খুলে যাবে। একটি ‘ইনক্লাইন্ড প্ল্যাটফর্ম’ বা ঢালু জিনিস বেরিয়ে আসবে চাঁদের মাটিতে। ওই ঢালু পথ বেয়েই চাঁদের বুকে নামবে রোভার ‘প্রজ্ঞান’। একটু বিশ্রাম নিয়ে তারপর ধীরে ধীরে চলা শুরু করবে ‘প্রজ্ঞান’। ছ’টি চাকা এর। সেকেন্ডে ১ সেন্টিমিটার করে পথ হাঁটবে সে। রোভারটির সঙ্গে থাকবে স্বয়ংক্রিয় ক্যামেরা। চাঁদের মাটিতে অনুসন্ধান চালাবে এরা। ছবি তুলবে। ‘প্রজ্ঞান’ চাঁদ থেকে যা তথ্য সংগ্রহ করবে, তা সে পাঠিয়ে দেবে ল্যান্ডার ‘বিক্রম’কে। ‘বিক্রম’ তা পাঠাবে পৃথিবীতে। একাধিক বৈদ্যুতিন যন্ত্র নিয়ে চাঁদে নামছে রোভার। চাঁদের ভূপ্রকৃতি কী ভাবে তৈরি হয়েছে, কী কী উপাদানে চাঁদের মাটি তৈরি, চাঁদের মাটিতে কোন ধরনের খনিজ বস্তু আছে– এ সংক্রান্ত বার্তাই পাঠাবে ‘প্রজ্ঞান’।