মুখ্যমন্ত্রী ৭০০০০ টাকা অনুদান দিয়ে বললেন, মানুষকে সজাগ করার জন্য নাকি এই টাকা দেয়া হচ্ছে l বাঙালীকে দূর্গা পূজার ব্যাপারে সজাগ করবেন আপনি আর আপনার ভাইপো? বাঙালী কিন্তু আপনাদের ব্যাপারে সজাগ l সবাই জানে এটা, ভোট লুট করার জন্য কিছু মাস্তানকে পুরস্কার এবং আগামী দিনের প্রস্তুতি l দূর্গাপূজার ব্যাপারে বাঙলীর সচেতনতা কতটা মুখ্যমন্ত্রী জানেন? একটু মনে করিয়ে দি l
আমরা দমদমের সেই উদ্বাস্তু কালোনীর লোক, যারা বাঙাল ব্রাত্য বসুকে ব্রাত্য করে মেদিনীপুরবাসী বিমলশঙ্কর নন্দ কে ভোট দেয়ায় ব্রাত্য বসুর উন্মাদ হার্মাদরা আমাদের পাড়ার কালী পূজা বন্ধ করে দেবে ভেবেছিল l পরে মহিলারা রুখে দেয় l ১৯৪৭ এ সব ছেড়ে আমার ঠাকুরদা এবং আরও ৫৯ টি পরিবার এখানে সব খুইয়ে আশ্রয় নেন ওই কলোনিতে l বাড়ী, জমি, মন্দির থেকে নিজের হাতে তৈরি স্কুল সব ছেড়েছেন, শুধু একটা জিনিস ছাড়তে পারবেন না বলে l সেটা হল ধর্ম l কবীর সুমনের মত যদি মা দূর্গাকে ত্যাগ করতেন, তবে কিছুই ছাড়তে হত না l আমার ঠাকুরদার মত কয়েক লক্ষ মানুষ সেই দিন এই সিদ্ধান্ত নেন l সব ছাড়বো, শুধু মাকে ছাড়বো না l দারিদ্র এমন জায়গায় পৌঁছেছিল, ৬০ জন পরিবারের জন্য চারটা শৌচালায় ছিল, যার মধ্যে একটা কোষ্ঠকাঠিন্য রুগীদের জন্য সংরক্ষণ করা l সব অতিরিক্ত খরচ বন্ধ, কারণ পেটের ভাত ছিল না সেই দিন l
কিন্তু একটা খরচ বন্ধ হয় নি l সেটা হল দূর্গা পূজার খরচ l ১৯৪৮ এ প্রথম দূর্গাপূজা হয় l
ম্যাডাম একবার দমদম/যাদবপুরে আসুন এই বছর l দেখবেন অধিকাংশ পাড়ায় ৭৫ বছর পূর্তি পালন হচ্ছে l কিছু পাড়া গত বছর পালন করেছে
দূর্গাপূজার জন্য সচেতনতা তৈরির বিন্দু মাত্র প্রয়োজন বাঙালীর নেই l যেদিন কিছু ছিল না, সেই দিনও ওই একটা খরচ করতে ভোলে নি বাঙালী l আগামীদিনে যদি আবার কাশ্মীরীদের মত রাজ্য ছাড়তে হয়, পৃথিবীর যেখানে যাবে সেখানেই শুরু করবে দূর্গা পূজা l যেমনটি ভূমি সংস্কারে সর্বহারা হওয়া পশ্চিমবঙ্গের গ্রামের বাঙালী আজ সুদূর কর্ণাটক/মধ্যপ্রদেশ /হরিয়ানার গ্রামে নতুন ঘর বানিয়ে করছে আজ l কোন অনুপ্রেরণা বা সচেতনতা ভাতা সেদিনও প্রয়োজন হয় নি, হবেও না l
সুদীপ্ত গুহ