ইতিহাসের দরজায় কড়া নাড়ছিল ভারত। দেশের প্রতিটি মানুষ অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিলেন, কখন চাঁদের মাটিতে অবতরণ করবে ভারতীয় বৈজ্ঞানিকদের কঠোর পরিশ্রমের ফল চন্দ্রযান-৩ (Chandrayaan 3)। আর সেই বহু প্রতীক্ষিত মুহূর্ত অবশেষে চলে এল। একেবারে কথা মতো বুধ সন্ধ্যায় (৬টা ৪ মিনিটে) চাঁদের পিঠে পা রাখল ল্যান্ডার ‘বিক্রম’। মহাকাশ বিপ্লবে ভারতের ঐতিহাসিক মাহেন্দ্রক্ষণের সাক্ষী ছিল আয়ারল্যান্ডে সফররত যসপ্রীত বুমরার (Jasprit Bumrah) টিম ইন্ডিয়াও (India tour of Ireland)। বিসিসিআই বুমরা অ্যান্ড কোং-এর ছবি শেয়ার করেছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে যে, বুমরাদের চোখ ছিল টিভিতেই। সকলের মুখের চওড়া হাসি বলে দিচ্ছে যে, তাঁরাও আজ গর্বিত ইসরো-র (ISRO) এই মহাকীর্তির জন্য়। তিন ম্য়াচের টি-২০ সিরিজ ভারত ইতিমধ্যেই ২-০ জিতে নিয়েছে। এদিন বুমরা বিগ্রেড আইরিশদের হোয়াইটওয়াশ করার জন্য় মাঠে নামবে।
ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থার তথা ‘ইসরো’ আগেই জানিয়েছিল, চাঁদের নামার আগের শেষ ২০ মিনিট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। গোটা মুন মিশনের কাছে এই কয়েক মিনিটই সব চেয়ে চ্যালেঞ্জিং হতে চলেছে বলে মত ছিল তাদের! দেখা যাচ্ছে, সেই ফাঁড়া কাটিয়ে সাফল্যের মুখ দেখল এই মিশন। ‘ইসরো’র প্রধান বলেছিলেন, চন্দ্রযান-৩-এর সফলভাবে চাঁদে অবতরণ করার ব্যাপারে তিনি আত্মবিশ্বাসী। চন্দ্রযানটির ল্যান্ডার ‘বিক্রম’-এর আজই চাঁদের দক্ষিণ মেরুর কাছে অবতরণের কথা ছিল। বিষয়টি এত গুরুত্বপূর্ণ কারণ, চাঁদের দক্ষিণ মেরুর তথ্য মানবজাতির কাছে এখনও অজানা। তাই চন্দ্রযান-৩ অভিযান সফল হলে চাঁদের রহস্যময় দক্ষিণ মেরুতে পৌঁছতে পারা প্রথম দেশ হিসেবে ইতিহাস লিখবে ভারত! সেটাই হল। এখনও পর্যন্ত পূর্বতন সোভিয়েত ইউনিয়ন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চিন চন্দ্রপৃষ্ঠে সফলভাবে তাদের মহাকাশযান নামাতে পেরেছিল। চন্দ্রযান-৩ সফল হওয়ায় ভারত এই তালিকার চতুর্থ দেশ হল।
গত ১৪ জুলাই ভারতের অন্ধ্র প্রদেশের শ্রীহরিকোটার সতীশ ধাওয়ান মহাকাশকেন্দ্র থেকে চন্দ্রযান-৩ উৎক্ষেপণ করা হয়েছিল। চন্দ্রযান-৩-এর ল্যান্ডারের নাম ‘বিক্রম’, রোভারের নাম ‘প্রজ্ঞান’। শুরুতে চাঁদের দক্ষিণ অংশে অবতরণ করবে ল্যান্ডার ‘বিক্রম’। বিক্রম সফলভাবে অবতরণ করতে পারলে তা ‘প্রজ্ঞান’ রোভারকে চাঁদের মাটিতে ছাড়বে। এই রোভারই তখন চাঁদের বুকে ঘুরে ঘুরে বৈজ্ঞানিক গবেষণা চালাবে। আর নতুন সব তথ্য পাঠাতে থাকবে পৃথিবীতে।