যাদবপুরে ছাত্র মৃত্যুর ঘটনায় আরও চার জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। এ নিয়ে যাদবপুরকাণ্ডে মোট গ্রেফতারির সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে হল সাত জন। এ ছাড়াও আরও দু’জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। সূত্রের খবর, রাতভর অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেফতার করেন কলকাতা পুলিশের হোমিসাইড শাখার আধিকারিকরা। বুধবারই ধৃত চার জনকে আদালতে তুলে পুলিশ হেফাজতে পাওয়ার চেষ্টা করবে পুলিশ। ঘটনার দিন রাতে ধৃত সাত জনের উল্লেখযোগ্য ভূমিকা ছিল বলে এখনও পর্যন্ত জানতে পেরেছে পুলিশ।
সূত্রের খবর, ধৃত মহম্মদ আরিফ আদতে জম্মুর বাসিন্দা। তিনি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের পড়ুয়া। থাকতেন যাদবপুরের প্রধান ছাত্রাবাসে। আসিফ আফজল আনসারি যাদবপুরের ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের পড়ুয়া। বাড়ি পশ্চিম বর্ধমানে। উত্তর ২৪ পরগনার বাসিন্দা সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বর্তমান পড়ুয়া অঙ্কন সরকার এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলতলি থানা এলাকার বাসিন্দা অসিত সর্দার যাদবপুরের সংস্কৃতের প্রাক্তন পড়ুয়া— এই চার জনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। এদের মধ্যে অসিত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী। বাকিরা বর্তমান পড়ুয়া। এ ছাড়া মেদিনীপুর এবং মথুরাপুর থেকে আরও দু’জনকে আটক করেছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে আরও খবর, বুধবার দুপুর ৩টেয় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন অফ স্টুডেন্টস রজত রায় এবং রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসুকে ডেকে পাঠানো হয়েছে। যুগ্ম কমিশনার (অপরাধ) তাঁদের সঙ্গে কথা বলবেন।
ধৃতদের জেরা করে নতুন কোনও নাম উঠে আসে কি না, সেটাই দেখার। পুলিশ সূত্রে খবর, গত বুধবার রাতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন হস্টেলের এ-২ ব্লকের নীচ থেকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার হয় প্রথম বর্ষের এক ছাত্র। পরে একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় পড়ুয়ার পরিবার র্যাগিংয়ের অভিযোগ তোলে। মৃত ছাত্রের বাবা পুলিশের কাছে লিখিত ভাবে খুনের অভিযোগ করেন।
তদন্তে নেমে পুলিশ প্রথমে তিন জনকে গ্রেফতার করে। মঙ্গলবার রাতে লালবাজারের গোয়েন্দারা নির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে অভিযানে নামেন। সেই অভিযানে বিভিন্ন জেলা থেকে মোট চার জনকে গ্রেফতার করা হয়। সূত্রের খবর, ধৃতদের মধ্যে রয়েছেন কাশ্মীরের এক বাসিন্দা। বুধবারই তাঁদের আদালতে তুলে নিজেদের হেফাজতে চাইবে পুলিশ। জানা গিয়েছে, ধৃতদের মধ্যে যেমন বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান পড়ুয়া রয়েছেন, তেমনই রয়েছেন প্রাক্তনীরাও। লালবাজার সূত্রে খবর, তদন্তে উঠে এসেছে অন্তত ২০ জন ছাত্র বিশ্ববিদ্যালয় পাশ করে যাওয়ার পরেও ছাত্রাবাস আটকে রয়েছেন। তাঁদের ডাকার প্রক্রিয়াও চলছে।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় আগেই গ্রেফতার করা হয়েছিল তিন জনকে। তাঁরা হলেন বর্তমান ছাত্র দীপশেখর দত্ত, মনোতোষ ঘোষ এবং প্রাক্তন ছাত্র সৌরভ চৌধুরী। তদন্তকারীদের নজরে রয়েছে তাঁদের মোবাইল ফোনও। মঙ্গলবার ধৃত তিন জনের মোবাইল ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। মোবাইলে কী তথ্য রয়েছে, তা খতিয়ে দেখার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা।