স্কুলজীবন থেকে বন্ধুত্ব। বছর দুয়েকের প্রেম। কিন্তু প্রেমিকা অন্য সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছেন, এই সন্দেহের বশে আত্মঘাতী হয়েছেন কলেজপড়ুয়া যুবক। পরিবারের দাবি এমনটাই। নদিয়ার শান্তিপুরের ঘটনা। মৃতের দেহের পাশ থেকে উদ্ধার হয়েছে একটি চিরকুট। তাতে লেখা, ‘‘নতুন সম্পর্কে ভাল থাকিস।’’
স্থানীয় সূত্রে খবর, রানাঘাট কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিলেন পলাশ শীল (১৯)। শনিবার সকালে ঘর থেকে তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। তড়িঘড়ি তাঁকে উদ্ধার করে শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান বাড়ির লোকজন। কিন্তু কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। পরিবারের দাবি, আত্মহত্যা করেছেন পলাশ। আর এর নেপথ্যে রয়েছে প্রেমঘটিত বিষয়। পরিবারের দাবি, কলেজেরই এক সহপাঠিনীর সঙ্গে সম্পর্ক ছিল পলাশের। কিন্তু কয়েক মাস ধরে ওই সম্পর্কে চিড় ধরেছিল। পলাশ সন্দেহ করতেন, ‘প্রেমিকা’ অন্য এক জনের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছেন। এ নিয়ে ফোনে তাঁদের কথা কাটাকাটি হত বলেও দাবি পরিবারের।
মৃতের পরিজনেরা জানাচ্ছেন, কয়েক দিন আগেও হাত কেটে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন পলাশ। তবে ব্যর্থ হন। শুক্রবার রাতে খাওয়াদাওয়া করেননি যুবক। ঘুমোবেন বলে নিজের ঘরে চলে গিয়েছিলেন। কিন্তু শনিবার সকালে ঝুলন্ত অবস্থায় পলাশকে দেখতে পান তাঁর বাবা সমীর শীল। ছেলের দেহের পাশ থেকে একটি চিরকুট পাওয়া গিয়েছে, সেটি ‘সুইসাইড নোট’ বলে দাবি করেন তিনি। সমীরের কথায়, ‘‘ওই মেয়েটির সঙ্গে স্কুলজীবন থেকে সম্পর্ক ছিল ছেলের। কয়েক দিন ধরে ওদের গন্ডগোল চলছিল। মেয়েটি আমাদের বাড়িতেও এসেছে। ভালবাসার অভিনয় করে আমার ছেলেটাকে মেরে ফেলল।’’ যদিও এ নিয়ে পুলিশের কাছে কোনও অভিযোগ জানাবেন কি না, তা এখনও ঠিক করেননি সমীর।
এই মৃত্যুর ঘটনার খবর পেয়ে অকুস্থলে যায় পুলিশ। দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়। পুলিশ সূত্রে খবর, মৃতের দেহের পাশে মেলা চিরকুটে লেখা রয়েছে, ‘‘নতুন সম্পর্কে ভাল থাকিস। নতুন মানুষ তোকে আগলে রাখবে।’’ পাশাপাশি তাঁর মোবাইলটিও পরীক্ষা করে দেখছেন তদন্তকারীরা। এ নিয়ে রানাঘাট পুলিশ জেলার সুপার কে কান্নান বলেন, ‘‘পুলিশ পৌঁছেছে। সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্ত চলছে।’’