Jadavpur University Student Death: ‘বিভিন্ন ঘরে ঘুরে দিতে হয়েছিল শরীরের বিবরণ, এমনকি পুরুষাঙ্গেরও!’

 প্রায় নগ্ন, শুধু অন্তর্বাস পরে বিভিন্ন ঘরে ঘুরে ঘুরে দিতে হয়েছিল শরীরের বিবরণ। এমনকি দিতে বলা হয়েছিল তার পুরুষাঙ্গেরও বিবরণও। হস্টেলে ঢোকার প্রথম রাতেই ভয়াবহ অভিজ্ঞতা। যার জন্য পরদিন-ই সে হস্টেল ছেড়ে বেরিয়ে এসেছিল সে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলে Ragging নিয়ে এমনই বিস্ফোরক অভিযোগ আরেক আবাসিক ছাত্রের।

যাদবপুরের মেইন হস্টেলের A2 ব্লক যার ৩ তলার ছাদ থেকে পড়ে স্বপ্নদীপের মৃত্যু হয়েছে, সেই ব্লকেরই আবাসিক ওই ছাত্র। সে জানিয়েছে, এক রাতে হস্টেলে ভয়াবহ অভিজ্ঞতার শিকার হওয়ার কথা। যার জন্য হস্টেল ছেড়ে বেরিয়ে পর্যন্ত আসে সে। তাকে প্রায় নগ্ন করে Ragging করা হয়েছিল। শুধুমাত্র অন্তর্বাস পরে তাকে বিভিন্ন ঘরে ঘুরে ঘুরে তার শরীরের বিবরণ দিতে হয়েছিল। এমনকি তার পুরুষাঙ্গেরও বিবরণ দিতে বলা হয়েছিল হস্টেলে ঢোকার প্রথম রাতেই। যাদবপুরের স্বপ্নদীপের রহস্যমৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত যত এগোচ্ছে, ততই এরকম চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে আসছে। 

প্রসঙ্গত, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের ছাত্র স্বপ্নদীপ কুণ্ডুর রহস্যমৃত্যুর ঘটনায় খুনের মামলা রুজু করেছে পুলিস। স্বপ্নদীপের বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে হস্টেলের অজ্ঞাতপরিচয় আবাসিকদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ (খুন) এবং ৩৪ (সম্মিলিত অভিসন্ধি) ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিস। স্বপ্নদীপের রহস্যমৃত্যুতে Ragging-এর শিকার হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ভর্তির ২ দিনের মাথাতেই, বুধবার রাতে হস্টেলের ৩ তলার ছাদ থেকে পড়ে মৃত্যু হয়েছে স্বপ্নদীপের। তার গায়ে কোনও পোশাক ছিল না। এই ঘটনায় পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি জানিয়েছে মৃত ছাত্রের পরিবার।

স্বপ্নদীপের বাবা জানিয়েছেন, মায়ের সঙ্গে শেষবার যখন স্বপ্নদীপের কথা হয়, তখন সে বলেছিল, ‘মা আমার ভীষণ ভয় করছে, আমায় বাড়ি নিয়ে যাও।’ ফোনে স্বপ্নদীপ মাকে আরও বলেছিল যে, হস্টেলে থাকতে খুব অসুবিধা হচ্ছে। হস্টেলে থাকতে তার ভালো লাগছে না। ভয় লাগছে। সাড়ে ৯টা নাগাদ শেষবার মায়ের সঙ্গে কথা হয় স্বপ্নদীপের। ছেলের ভয় পাওয়ার কথা মাকে উদ্বিগ্ন করে তোলে। তারপর থেকে বহুবার ছেলের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেন মা। কিন্তু ছেলে আর ফোন রিসিভ করেনি। কীসে ভয় পেয়েছিল স্বপ্নদীপ? সেই উত্তরই এখন হাতড়ে বেড়াচ্ছে স্বপ্নদীপের পরিবার।

জানা গিয়েছে, দুপুরে ক্লাস থেকে ফিরে কয়েকজনের সহপাঠীর সঙ্গে চা খেতে গিয়েছিল স্বপ্নদীপ। কিন্তু কিছুটা বিচলিত ছিল স্বপ্নদীপ। তারপর মেস কমিটির কয়েকজন ছাত্র তাঁর কাউন্সিলিং করার জন্য আসে। ওই সিনিয়র ছাত্রদের সে বারবার বলতে থাকে যে, শুনেছে হোস্টেলে Ragging হয়। তাই থাকতে চায় না। তারপরই ছুটে গিয়ে একটি ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেওয়ার চেষ্টা করে সে। এমনকি স্বপ্নদীপ একসময় নিজেকে উলঙ্গ করে দেয়, উলঙ্গ করে বারান্দার মধ্যে ছোটাছুটি শুরু করে বলেও পুলিসের কাছে দেওয়া বয়ানে জানিয়েছে ছাত্ররা। ফলে প্রশ্ন উঠছে, ২ দিন আগে ওরিয়েন্টশন ক্লাসও যে স্বপ্নদীপ স্বাভাবিকভাবেই  করেছিল, সে হঠাত্ এমন অস্বাভাবিক আচরণ করতে শুরু করে কেন?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.