সোশ্যাল মিডিয়া নিয়ন্ত্রণ: ১৫ জানুয়ারির মধ্যে নতুন আইন আনা হবে, সুপ্রিম কোর্টকে জানাল কেন্দ্র

দ্য ওয়াল ব্যুরো: সোশ্যাল মিডিয়ায় বিদ্বেষ ছড়ানো, ভুয়ো খবর প্রচার করা, বিকৃত পোস্ট, দেশবিরোধী মন্তব্য– ইত্যাদির উপর নজরদারি করার জন্য নতুন আইন আনতে আরও তিন মাস সময় চাইল কেন্দ্র।

সুপ্রিম কোর্টে কেন্দ্র জানিয়েছে, জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষার স্বার্থেই ইন্টারনেট ও সোশ্যাল মিডিয়ায় নিয়ন্ত্রণ বাড়ানো প্রয়োজন। সে জন্য জরুরি নতুন আইন। জানুয়ারি মাসের ১৫ তারিখের মধ্যে তা চূড়ান্ত করা হবে। এই বিষয় সংক্রান্ত যত মামলা মাদ্রাজ, বম্বে, মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্টে রয়েছে, সেগুলিরও নিষ্পত্তি চেয়েছে কেন্দ্র। সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টের সঙ্গে আধার যোগের প্রস্তাব সংক্রান্ত তিনটি পৃথক হাইকোর্টে দায়ের হওয়া মামলা এক জায়গায় আনার জন্য আবেদন করেছিল ফেসবুক। তার প্রেক্ষিতেই হলফনামা দিয়েছে কেন্দ্র।

সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, সোশ্যাল মিডিয়া-সংক্রান্ত সমস্ত মামলা জানুয়ারি মাসের শেষ সপ্তাহে শুনবে আদালত।

তার আগে, এই তিন মাসের মধ্যেই উস্কানিমূলক কথা, ভুয়ো খবর, অশালীন পোস্ট, দেশবিরোধী মন্তব্যের ক্ষেত্রে সোশ্যাল মিডিয়ায় কী কী বিধিনিষেধ আনা হবে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে কেন্দ্রকে।

সোমবার দেশের শীর্ষ আদালতে একটি হলফনামা জমা দিয়ে এ কথা জানিয়েছে কেন্দ্র। এই হলফনামায় বলা হয়েছে গত কয়েক মাসে সোশ্যাল মিডিয়াতে এই ধরনের পোস্টের পরিমাণ অনেক বেড়ে গিয়েছে। তাই দেশের সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে কড়া নিয়ম আনতে হবে বলেই এই সময় চাওয়া হয়েছে।

হলফনামায় বলা হয়েছে, “এক দিকে প্রযুক্তির উন্নতির ফলে অর্থনৈতিক উন্নতি হচ্ছে, অন্যদিকে ভুয়ো খবর অনেক বেশি পরিমাণে ছড়িয়ে পড়ছে। দেশের গণতন্ত্র নষ্ট করার ক্ষেত্রে দিন দিন একটা ব্যবহার্য মাধ্যম হয়ে উঠছে ইন্টারনেট। তাই মানুষের মৌলিক অধিকার, দেশের সার্বভৌমত্ব, সাম্য ও সুরক্ষা রক্ষার জন্য অনেক বাধানিষেধ আনতে হবে। তিন মাসের মধ্যেই এই নিয়মকানুন ঠিক করে ফেলবে কেন্দ্র।”

গত মাসে সুপ্রিম কোর্ট কেন্দ্রীয় সরকারকে তিন সপ্তাহের সময় দিয়েছিল। এই সময়ের মধ্যে ‘দেশের সার্বভৌমত্ব, মানবাধিকার ও অনৈতিক কাজ’ বন্ধ করার জন্য যে নিয়ম আনতে হবে সেই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। ২৪ সেপ্টেম্বর এই বিষয়ে শুনানিতে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি দীপক গুপ্ত গভীর চিন্তা প্রকাশ করেছিলেন। তিনি বলেন, “প্রযুক্তির যেভাবে উন্নতি হচ্ছে তা একদিকে খুব ভয়াবহ। আমি ইন্টারনেটে দেখেছি কোথায় একে ৪৭ কিনতে পারব তাও লেখা রয়েছে।”

বেশ কয়েক মাস ধরেই সোশ্যাল মিডিয়াকে কেন্দ্র করে অশান্তি ছড়ানোর চেষ্টার একাধিক ঘটনা সামনে এসেছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ফেসবুক ও হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করে এই কাজ করা হচ্ছে। এমনকি জঙ্গিরাও আজকাল হোয়াটসঅ্যাপের ব্যবহার করছে যোগাযোগের জন্য। তাই সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে দেশের সুরক্ষার ক্ষেত্রে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারে কিছু বিধিনিষেধ আনতে হবে। সেই নির্দেশই দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রকে।

১৫ জানুয়ারির মধ্যে কী আইন আসে, সেই আইনে কী বলা হয়, সে দিকেই এখন চোখ নেটিজেনদের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.