ডুরান্ডের প্রথম ম্যাচে ৫ গোল মোহনবাগানের, বাংলাদেশ আর্মিকে হারিয়ে শুরু সবুজ-মেরুনের

প্রথম ম্যাচেই ডুরান্ড কাপ জমিয়ে দিল মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট। ঘরের মাঠে বাংলাদেশ আর্মিকে ৫-০ গোলে হারাল তারা। যুবভারতীয় ক্রীড়াঙ্গনে ডুরান্ডের দামামা বাজিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। খেলা শুরুর আগে বলে শট মারেন তিনি। তার পরের দেড় ঘণ্টা মাঠে ফুল ফোটাল বাগান। এ বারের প্রতিযোগিতায় তরুণ দল নামিয়েছে বাগান। সিনিয়র দলের মাত্র তিন জন ফুটবলার রয়েছেন। অন্য দিকে বাংলাদেশ আর্মি দলে সে দেশের জাতীয় দলে খেলা ফুটবলারেরা ছিলেন। তাঁদেরই নাচিয়ে ছাড়লেন বাগানের তরুণেরা। গোলের সুযোগ নষ্ট না করলে আরও বড় ব্যবধানে জিততে পারত মোহনবাগান।

খেলার শুরু থেকেই দাপট মোহনবাগানের। তিন অভিজ্ঞ ফুটবলার সুমিত রাঠি, লিস্টন কোলাসো ও মনবীর সিংহের নেতৃত্বে আক্রমণাত্মক খেলতে শুরু করেন সুহেল ভট্ট, রবি রানারা। নিজেদের মধ্যে ছোট ছোট পাস খেলে আক্রমণে উঠতে থাকে তারা। দু’দিকের প্রান্ত ব্যবহার করেন সবুজ-মেরুন ফুটবলারেরা। ফলে রক্ষণে সমস্যা হচ্ছিল বাংলাদেশ আর্মির। ১৪ মিনিটের মাথায় ডান প্রান্ত ধরে বক্সে ঢুকে ক্রস বাড়ান রবি। বাংলাদেশের গোলরক্ষক আশরাফুল রানা সেই বল ছুঁতে না পারলেও ঠিক জায়গায় ছিলেন লিস্টন। বল ধরে বাঁ পায়ের টোকায় দলকে এগিয়ে দেন তিনি।

পরের মিনিটেই বাগানের গোল লক্ষ্য করে আক্রমণ হয়। মেহেদি হাসানের হেড ভাল বাঁচান গোলরক্ষক অর্শ আনোয়ার। ১৮ মিনিটের মাথায় সুহেলের ডান পায়ের শট বারে লেগে ফেরে। অবশ্য গোল হলেও গোল পেতেন না সুহেল। কারণ, বল ধরার সময় অফসাইডে ছিলেন তিনি। কিন্তু যে ভাবে বলের দখল নিয়ে বাগান ফুটবলারেরা আক্রমণ করছিলেন তাতে ভয় ধরছিল বাংলাদেশের রক্ষণে। ২৭ মিনিটের মাথায় সুহেলকে বক্সে ফাউল করায় পেনাল্টি পায় বাগান। ডান পায়ের মাটি ঘেঁষা শটে গোল করেন মনবীর। গোলরক্ষকের ডান দিক দিয়ে বল জালে জড়িয়ে দেন তিনি।

প্রথমার্ধে ব্যবধান আরও বাড়ায় বাগান। ৩৯ মিনিটের মাথায় মাঝমাঠে বল পেয়ে চকিত টার্নে ডিফেন্ডারকে বোকা বানান লিস্টন। বক্সে সুহেলের দিকে বল রাখেন তিনি। সুহেলের শট গোলরক্ষকের মাথায় উপর দিয়ে গোলে ঢুকে যায়। কিন্তু মেহেদির আত্মঘাতী গোল হিসাবে সেটি দেখা হয়। বিরতির আগেই দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন বাংলাদেশ আর্মির মিজানুর রহমান। ১০ জনে হয়ে যায় দল। ৩-০ এগিয়ে বিরতিতে যায় বাগান।

দ্বিতীয়ার্ধেও একই ছবি। সেই বাগানের ফুটবলারদের দাপট। কোচ বাস্তব রায় কয়েকটি বদল করেন। কিয়ান নাসিরিদের নামিয়ে দেন তিনি। ৫৮ মিনিটের মাথায় দলের চার নম্বর গোল করেন নামতে। লিস্টনের ফ্রি কিক থেকে মনবীরের ব্যাকহিল ধরে বক্সের বাইরে ডান পায়ের টোকায় গোল করেন নামতে। ৪-০ এগিয়ে যায় মোহনবাগান। দেখে বোঝাই যাচ্ছিল, হার মেনে নিয়েছে বাংলাদেশ আর্মি। ক্লান্ত দেখাচ্ছিল ফুটবলারদের। কিন্তু মোহনবাগান আরও গোল করার জন্য খেলছিল। ৮৯ মিনিটের মাথায় লিস্টনের দূরপাল্লার শট কোনও রকমে বাঁচান বাংলাদেশের গোলরক্ষক। কিন্তু কাছেই ছিলেন কিয়ান। ফিরতি বলে গোল করে ৫-০ করেন তিনি। সেখান থেকে ফেরার কোনও সুযোগ ছিল না বাংলাদেশ আর্মির। প্রথম ম্যাচেই ৫ গোলের মালা পরতে হল তাদের। ডার্বির আগে এই জয় বাড়তি আত্মবিশ্বাস দেবে মোহনবাগানকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.