ঢাকুরিয়ার মদের দোকানে ক্রেতাকে ঘুসি মেরে, মাথা ঠুকে খুন জনসমক্ষে, ঘাতক ওই দোকানেরই কর্মচারী

মদ কেনা নিয়ে বচসা। সেখান থেকে হাতাহাতি এবং মৃত্যু। রবিবার খাস কলকাতায় এমন ঘটনায় জোর উত্তেজনা ছড়িয়েছে। স্থানীয় সূত্রে খবর, রবিবার দক্ষিণ কলকাতার ঢাকুরিয়ায় একটি মদের দোকানে এক ক্রেতার সঙ্গে ঝগড়া শুরু হয় দোকানের কর্মীদের। আচমকা ওই ক্রেতাকে টেনে দোকানে ঢুকিয়ে কিল মারতে থাকেন এক কর্মী। মারের চোটে অসুস্থ হয়ে লুটিয়ে পড়েন ওই যুবক। পরে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, মৃতের নাম সুশান্ত মণ্ডল। রবিবার বিকালে এই ঘটনায় পুলিশ দু’জনকে গ্রেফতার করেছে বলে খবর। অন্য দিকে, এ নিয়ে ঢাকুরিয়া এলাকায় তুমুল উত্তেজনা শুরু হয়। রাস্তায় যান চলাচলও বন্ধ হয়ে যায়।

ওই মদের দোকানের সিসিটিভি-তে যে দৃশ্য দেখা গিয়েছে, তা ভয়ঙ্কর। দেখা যাচ্ছে, দোকানের বাইরে তখন এক জনই ক্রেতা। তাঁর সঙ্গে হাত নেড়ে কথা বলতে দেখা যায় মদের দোকানের এক কর্মচারীকে। গড়িয়াহাট রোডের ওই মদের দোকানের সামনে দাঁড়ানো ওই ক্রেতাকে এর পর ঘাড় ধরে দোকানে টেনে আনেন কর্মচারী। শুরু করেন এলোপাথাড়ি মার। মারের চোটে পড়ে গেলে সুশান্তের মাথা ঠুকে দেওয়া হয়।

স্থানীয় সূত্রে খবর, রক্তাক্ত অবস্থায় সুশান্তকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু চিকিৎসক তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এই ঘটনায় উত্তেজিত জনতা ওই দোকানে ভাঙচুর চালান। ঢাকুরিয়া ব্রিজ আটকে দাঁড়ান কয়েক জন। মদের দোকানের সামনেও উপস্থিত হন প্রচুর মানুষ। উত্তেজিত জনতার দাবি, অভিযুক্তকে তাঁরা হাতে পেতে চান। এ নিয়ে পুলিশকে ঘিরে তাঁরা বিক্ষোভ শুরু করেন। পুরুষ এবং মহিলারা সমস্বরে দাবি করেন, অভিযুক্তকে তাঁদের সামনে নিয়ে আসতে হবে। পরিস্থিতি সামলাতে হিমশিম খায় পুলিশ।

বিক্ষোভকারীদের দাবি, অভিযুক্তদের পুলিশ গ্রেফতার করেনি। মিথ্যা বলা হচ্ছে। অভিযুক্তকে তারা আড়াল করেছে। অন্য দিকে, সংবাদমাধ্যমের সামনে এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, ‘‘দু’জনকে গ্রেফতার করেছি আমরা। কিন্তু জনতার কেউ কিছু শুনতেই চাইছে না।’’

ঘটনাস্থলে যান স্থানীয় তৃণমূল নেতা বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “ভয়ঙ্কর ঘটনা। পঞ্চাননতলার বস্তিবাসীর মধ্যে এ নিয়ে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। দোষীদের কঠোর শাস্তির দাবি করছি আমি।’’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.