একুশের সভার জন্য কলকাতা ও তার আশপাশের জেলা থেকে বাস তুলে নেওয়ার হিড়িক, বাড়বে ভোগান্তি

ধর্মতলায় আগামী কাল তৃণমূলের ২১ জুলাইয়ের সমাবেশ উপলক্ষে কলকাতা এবং পার্শ্ববর্তী জেলা থেকে কার্যত ঝেঁটিয়ে বাস তুলে নেওয়ার পর্ব শুরু হয়েছে বলে বাসমালিক সংগঠন সূত্রের অভিযোগ। কলকাতা এবং শহরতলির রুটগুলিতে আজ, বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত কিছু বাস চললেও দূরের জেলায় বাস কমতে শুরু করেছে মঙ্গলবার থেকেই।

সদ্য শেষ হওয়া পঞ্চায়েত নির্বাচনের পরেই তৃণমূলের এই সমাবেশ এসে পড়ায় বহু জেলায় দলের ছোট-বড় নানা মাপের নেতারা বাড়তি উৎসাহে নিজেদের মতো করে বাসের দাবি জানাচ্ছেন বলে অভিযোগ। পরিস্থিতি এমনই যে, অনুগামীদের সমাবেশে আনতে একই বাসমালিকের কাছে কাছাকাছি এলাকার একাধিকতৃণমূল নেতার দাবি এসে জড়ো হচ্ছে। বাস কোথায় যাবে, এই টানাপড়েনের মীমাংসা হওয়ার আগেই কেউ কেউ রাস্তা থেকে বাস আটকেনিজেদের ‘জিম্মা’য় রেখে দেওয়ার চেষ্টা করছেন বলেও অভিযোগ।

দূরপাল্লার বাস নিয়ে হুগলি এবং বর্ধমান জেলায় পরিস্থিতি এমন জায়গায় গিয়ে ঠেকেছে যে, এ নিয়ে রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তীর কাছে রীতিমতো নালিশ জানাতে হয়েছে ‘অল বেঙ্গল বাস-মিনিবাস সমন্বয় সমিতি’র সাধারণ সম্পাদক রাহুল চট্টোপাধ্যায়কে। পরে মন্ত্রীর হস্তক্ষেপে সমস্যা মেটে বলে খবর। এ প্রসঙ্গে রাহুল বলেন, ‘‘সমাবেশে বেসরকারি বাসদেওয়া নতুন নয়। কিন্তু, একাধিক নেতা একই রুট থেকে নিজেদের মতো করে বাস চাওয়ায়পরিষেবা সচল রাখা অসম্ভব হয়ে পড়ছে। কার কাছে বাস যাবে, সেটা স্থির করা নিয়েই তুলকালাম পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে।’’ বাস নিয়ে মালিকদের টানাপড়েনের মুখে পড়তে হয়েছে দুই মেদিনীপুর জেলা এবং বাঁকুড়া জেলার একাংশেও।

হাওড়া, হুগলি, উত্তর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার দূরবর্তী এলাকাগুলিতে আজ, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বাস কমার আশঙ্কা রয়েছে। কলকাতা লাগোয়া রুটগুলিতে সমাবেশের দিন পরিষেবা আংশিক সচল রাখতে চাইলেও সেটা কতটা সম্ভব হবে, তা নিয়ে সন্দিহান বাসমালিকেরা। ‘সিটি সাবার্বান বাস সার্ভিস’-এরসাধারণ সম্পাদক টিটু সাহা জানান, রুটে অন্তত ২০ শতাংশ বাস যাতে চলে, সেই ব্যবস্থাও সব ক্ষেত্রে করা যাচ্ছে না। কলকাতায় সমাবেশেরদিনে বি টি রোড, দমদম, নাগেরবাজার, নিউ টাউন, গড়িয়াহাট, ডায়মন্ড হারবার রোডের বিভিন্নবাস রুটে কার্যত বাস চলবে না বলেই জানিয়েছেন তিনি। খুব অল্প সংখ্যায় বাস চলতে পারে ই এমবাইপাস, সল্টলেক, সোনারপুর-সহ কিছু রুটে। দুপুরের পরে সমাবেশ মিটে গেলে কিছু বাস রাস্তায় নামতে পারে। তবে ওই সব বাসচালানোর জন্য কর্মী কত জন পাওয়া যাবে, তা নিয়ে আশঙ্কা রয়েছেবলে জানাচ্ছেন বাসমালিকেরা।

সমাবেশের আগে, আজ, বৃহস্পতিবার বিকেলের পর থেকেই রাস্তায় উল্লেখযোগ্য হারে বাস কমে যেতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। ফলে যাত্রীদের ভোগান্তির মুখে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে ষোলো আনাই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.