মাতৃত্ব এমনই সম্পদ যার কোনও সময়সীমা বা বয়স নেই। মা শব্দের সেই অর্থ প্রমাণ করে দিলেন ৭৪ বছরের প্রৌঢ়া এরামত্তি মনগম্মা। যে বয়সে আর অন্যান্য মহিলারা নানান শারীরিক সমস্যায় ভোগেন ও মানসিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েন, সেই বয়সেই যমজ কন্যা সন্তানের জন্ম দিলেন এরামত্তি মনগয়ম্মা। তিনি অন্ধ্রপ্রদেশের গুন্টুরের বাসিন্দা। সিজারের মাধ্যমে যমজ কন্যাসন্তানের জন্ম দিলেন তিনি। এর আগেও পাঞ্জাবের দলজিন্দর কউর ৭২ বছর বয়সে মা হয়েছিলেন। এবার সেই রেকর্ড ছাড়িয়ে দিলেন ৭৪ বছরের এরামত্তি মনগয়ম্মা। তাঁর স্বামীর বয়স ৭৮ বছর। প্রায় ৫৬ বছর তাঁদের বিয়ের বয়স।

জানা গেছে, আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের কৃতিত্বের জেরে তিনি অবসান ঘটাতে পেরেছেন তাঁর দীর্ঘায়িত অপেক্ষা। ইন ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন (IVF) পদ্ধতিতে মা হয়েছেন তিনি। এতে তিনি ও তাঁর স্বামী রাজা রাও দুজনেই খুশি। ১৯৬২ সালের ২২ মার্চ বিয়ে হয় এরামত্তি মনগয়ম্মার। বিয়ের পর থেকেই সন্তান জন্ম দিতে না পারায় তিনি অত্যন্ত ভেঙে পড়েন ওই দম্পতি। বহু চেষ্টা করেও সন্তান আনতে পারেননি তাঁরা। দেখিয়েছেন বহু চিকিৎসকও, মেলেনি কোনও সুরাহা। মাতৃত্ব ও পিতৃত্বের স্বাদ না পাওয়ার আক্ষেপ থেকে যায় দুজনেরই। অবশেষে, আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের হাত ধরেই পূরণ হল তাঁদের স্বপ্ন। ইন ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন পদ্ধতি বা আই ভি এফের মাধ্যমে মাতৃত্বের স্বাদ পূরণ করলেন ৭৪ বছরের এরামত্তি মনগয়ম্মা। এরামত্তি মনগয়ম্মা জানিয়েছেন, তাঁদের প্রতিবেশী এক মহিলা ৫৫ বছর বয়সে আই ভি এফ পদ্ধতির মাধ্যমে সন্তানের জন্ম দেন ৷ তিনিই নিশ্চিতভাবে ওই দম্পতিকে এই পদ্ধতিতে সন্তান নেওয়ার কথা বলেন। এর থেকেই উদ্বুদ্ধ হন তিনি ৷ এরপর, তিনি ও তাঁর স্বামী গুন্টুরের অহল্যা নার্সিংহোমে যান ৷ সেখানেই ডাঃ শানাক্কায়ালা উমাশঙ্কর তাঁদের সমস্ত কথা শোনার পর তিনি তাঁদের চিকিৎসার দ্বায়িত্ব নেন ৷ তাঁর চিকিৎসাতেই সফলভাবে সন্তান জন্ম দিলেন এরামত্তি। এরামত্তি মনগয়ম্মা বয়স বেশি হওয়ায় সর্বক্ষণই চিকিৎসকদের নজরদারির মধ্যে তাঁকে রাখা হয়েছিল। তবে এরামত্তির উচ্চ রক্তচাপ বা ডায়াবেটিস না থাকায় সন্তানের জন্ম দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনও সমস্যা হয়নি বলে জানা গেছে। ডাঃ শানাক্কাওয়ালা উমাশঙ্কর জানান, আমাদের দেশে এত বয়সে এর আগে আর কেউ মা হয়েছেন বলে আমার অন্তত জানা নেই। সেই অর্থে ভারতীয় চিকিত্‍সা শাস্ত্রে এটা একটা বড়ো প্রাপ্তি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.